বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

অনলাইনে প্রতারণার ফাঁদ কঠোর পদক্ষেপ নিন

  ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইনে প্রতারণার ফাঁদ কঠোর পদক্ষেপ নিন

প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে দেশে সহজসরল মানুষের সর্বস্বান্ত হওয়ার নজির নতুন নয়। নিকট অতীতেও নানা উপায়ে প্রতারকচক্র সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিয়ে হাওয়া হয়ে গেছে। যুবক, ডেসটিনি কিংবা ইভ্যালির মতো ঘটনা সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে আলোচিত হলেও কিছু মানুষ বারবার একই পথে হাঁটেন। পুড়ে যাবে জেনেও পতঙ্গ যেমন আগুনে ঝাঁপ দেয়, তেমনই বিনাশ্রমে অর্থলাভের লোভে মানুষ ঋণ করে হলেও এসব জায়গায় বিনিয়োগ করেন। এর আগে অ্যাপভিত্তিক অনলাইন ট্রেডিং গ্রম্নপ 'মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ (এমটিএফই)'-এর প্রতারণায় দেশের লাখ লাখ মানুষ পথে বসেছে। চক্রটি বাংলাদেশিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। প্রতারিতদের বেশিরভাগই তরুণ এবং বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। শিক্ষক, ডাক্তার, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ অন্যান্য পেশার মানুষও জড়িয়ে পড়েছিল। গত বছরের এপ্রিলে কুমিলস্নার মুরাদনগরে এ অ্যাপের লোভনীয় ফাঁদে পড়ে অর্ধশতাধিক যুবকের এক কোটি টাকা খোয়া যাওয়ার খবর প্রকাশিত হয়। এরপর রাজশাহীতেও একইভাবে হাজারো মানুষের সর্বস্বান্ত হওয়া, এমনকি এই অ্যাপের ফাঁদে কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতারিত হওয়ার খবরও প্রকাশিত হয়েছে। যারা সচেতন হয়েছেন, তারা প্রতারণার ফাঁদে পড়েননি; কিন্তু যারা লোভ ত্যাগ করতে পারেননি। এ ছাড়াও 'ফিশিং লিংক' তৈরি করে অপরাধীরা টার্গেট করা নারীদের ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠায়। ওই লিংকে ক্লিক করলে ফেসবুক ইন্টারফেস আসে। ভিকটিমরা লিংকে প্রবেশ করার জন্য তাদের ফেসবুক আইডি এবং পাসওয়ার্ড দেয়। তখন অপরাধীর কাছে ভিকটিমদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের আইডি ও পাসওয়ার্ড চলে যায়। পরে ওই আইডিতে প্রবেশ করে ভিকটিমের আইডির পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে। এরপর সে ওই ফেসবুক আইডি থেকে ভিকটিমের নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা নেয়। এছাড়া ভিকটিমের কাছে টাকা দাবি করে। টাকা দিলে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ফেরত দিত তারা। অন্যথায় তা দখলে রাখত।

এই ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। মানুষ দুটো কারণে প্রতারণার আশ্রয় নেয়। কেউ পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে আবার কেউ লোভের বশবর্তী হয়ে। রাতারাতি তাকে ধনী ও ক্ষমতাবান হতে হবে, এই স্বপ্ন তাকে পেয়ে বসে, বিভোর করে ফেলে। ফলে ওই ব্যক্তি নিষ্ঠুরতা, অমানবিকতা ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়। এর পরিণতি কী হতে পারে ভেবেও দেখে না। কেউ অফিস খুলে চাকরি দেওয়ার নামে, কেউ বিদেশে পাঠানোর নামে, কেউ অনলাইনে, কেই বা হায় হায় কোম্পানি খুলে কোটি কোটি টাকা মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অবলীলায়। এদের প্রতিহত করতে হবে যে কোনো উপায়ে। না হলে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। দ্রম্নত সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে। এই প্রতারণার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে