বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

যুব এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ আমাদের অভিনন্দন

  ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যুব এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ আমাদের অভিনন্দন

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানেই যেন বাড়তি উত্তেজনা। সম্প্রতি শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে আটবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো যুব এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। এই জয়ে আমরা জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। একইসঙ্গে জয়ের লক্ষ্যকে সামনে রেখে আগামী দিনেও নিজেদের শানিত করবে এবং নিজ নিজ জায়গা থেকে সবটুকু উজার করে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চেষ্টা করবে এমনটি কাম্য।

তথ্যমতে, ব্যাটিংয়ে নেমে কোনোমতে ১৯৮ রান করে বাংলাদেশ। তখন মনে হয়েছিল ৩০/৪০ রান কম করেছে তারা। ফলে, যেন এটি মাথায় রেখে দুর্দান্ত বোলিং করেন বোলাররা। বিশেষ করে পেসাররা। যার নেতৃত্ব দিয়েছেন ইকবাল হোসেন ইমন। আর তাতে দারুণ এক জয়ে এশিয়া কাপের শিরোপা ধরে রাখল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। যা অত্যন্ত সুখকর এবং এই জয় আনন্দের। তথ্য মতে, রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯.১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রান সংগ্রহ করে যুব টাইগাররা। জবাবে ৩.২ ওভারে ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। দেখা যায়, শুরু থেকেই দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে যুব টাইগাররা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আসে সাফল্য।

তথ্য মতে, আইয়ুস মার্থেকে বোল্ড করে ওপেনিং জুটি ভাঙেন আল ফাহাদ। তাতে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় ভারত। পঞ্চম ওভারে মারুফ মৃধাকে দুটি বাউন্ডারি মেরে পাল্টা আঘাত হানতে চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার ভাইভাব সুরিয়াবানশি। তবে আরও একটি মারতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। গ্যালিতে শিহাব জেমসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসেন তিনি। তিন নম্বরে নামা আন্দ্রে সিদ্ধার্থ প্রায় সেট হয়ে ৩৫ বলে ২০ রানও করেন। তবে বড় ক্ষতি করার আগে তাকে বোল্ড করে দিয়ে সাজঘরের পথ দেখান রিজান হোসেন। তাতে ভারতীয়দের চেপে ধরে বাংলাদেশ। এরপর কেপি কার্থিকেয়াকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক মোহামেদ আমান। ২৯ রানের জুটিও গড়েন তারা। তবে ১৩তম ওভারের এই জুটি ভাঙার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। দুই প্রান্তেই রানআউট করার সুযোগ নষ্ট করেন বোলার ইকবাল হোসেন ইমন ও উইকেটরক্ষক ফরিদ হাসান। কার্থিকেয়া দুটি বাউন্ডারি মেরে মোমেন্টাম ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি।

লক্ষণীয়, ২১তম ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতে এনে দেন ইমন। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা কার্থিকেয়াকে উইকেটরক্ষক ফরিদের ক্যাচে পরিণত করে ভাঙেন জুটি। ২১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এক বল নিখিল কুমারকেও একইভাবে ফেরান এই পেসার। এর ফলে, বিপদেই পড়ে যায় ভারত। এটা বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, গলার কাঁটা হয়ে আটকে ছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক আমান। একপ্রান্ত আগলে রেখে আশা বাঁচিয়ে রাখেন তাদের। এরপর ৩২তম ওভারে বল হাতে নিয়েই তাকে ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল। ব্যক্তিগত ২৬ রানে বোল্ড করে দেন আমানকে। তাতে জয় দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ।

লেগস্পিনার দেবাশিস দেবা ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে সব বোলারই উইকেট পেয়েছেন। উইকেট না পেলেও দারুণ বোলিং করেন দেবা। ২৪ রানের খরচায় ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ইমন। আজিজুলও নেন ৩টি করে উইকেট। এছাড়া, দুটি শিকার আল ফাহাদের। অন্যদিকে, ব্যাটিংয়ে দলের হয়ে ৬৫ বলে ৩টি চারের সাহায্যে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেছেন রিজান। ৬৭ বলে ৩টি চারে ৪০ আসে শিহাবের ব্যাট থেকে। ১৬৭ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর টেল এন্ডারদের নিয়ে দলকে দুইশ'র কাছে নিতে ৪৯ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন ফরিদ। তিনিও চার মারেন ৩টি।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এই জয় অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। সঙ্গত কারণেই জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সর্বাত্মক প্রস্তুতিও অব্যাহত রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে সর্বাত্মক কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি। বাংলাদেশ ক্রিকেট এগিয়ে যাবে আরও বহুদূর- এমন লক্ষ্যকে সামনে রেখে ক্রিকেটের অগ্রযাত্রা বজায় রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে