সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২
স্মরণীয়-বরণীয়

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

  ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস (১২ ফেব্রম্নয়ারি, ১৯৪৩ - ৪ জানুয়ারি ১৯৯৭) ছিলেন বাংলাদেশি ছোটগল্পকার, ঔপন্যাসিক ও একজন অধ্যাপক। বাস্তবতার নিপুণ চিত্রণ, ইতিহাস ও রাজনৈতিক জ্ঞান, গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও সূক্ষ্ণ কৌতুকবোধ তার রচনাকে দিয়েছে ব্যতিক্রমী সুষমা। তাকে সমাজ বাস্তবতার অনন্যসাধারণ রূপকার বলা হয়েছে। তার রচনাশৈলী স্বকীয় ও সংলাপে কথ্যভাষার ব্যবহার বাংলা কথাশিল্পে অনন্যসাধারণ। ইলিয়াস গাইবান্ধায় জন্মগ্রহণ করেন। ষাটের দশকে তার লেখালেখির শুরু। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৭৬ সালে তার প্রথম ছোটগল্প সংকলন অন্য ঘরে অন্য স্বর প্রকাশিত হয়। তার প্রথম উপন্যাস চিলেকোঠার সেপাই প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে, যেটির জন্য তিনি আলাওল সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় ও সর্বশেষ উপন্যাস খোয়াবনামা বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। তার পাঁচটি ছোটগল্প সংকলন আর একটি প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। আখতারুজ্জামান মোহাম্মদ ইলিয়াস ১৯৪৩ সালের ১২ ফেব্রম্নয়ারি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা ইউনিয়নের গোটিয়া গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম মঞ্জু। তিনি পিতামাতার প্রথম সন্তান। তার পৈতৃক বাড়ি বগুড়া শহরের নিকটবর্তী চেলোপাড়ায়। তবে তার পিতা বগুড়ার পৈতৃক বাড়ি ছেড়ে করতোয়া নদীর তীরে নারুলি গ্রামে স্থানান্তর হয়েছিলেন। ১৯৪৬ সালের দিকে পিতার সক্রিয় রাজনীতির সূত্রে তারা ঢাকায় চলে আসেন এবং এখানেই বসবাস করতে শুরু করেন। শিক্ষাজীবন শুরু হয় ১৯৪৯ সালে ঢাকার সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স স্কুলে। এরপর ১৯৫০ সালে তিনি কেএল জুবিলি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন। এরপর ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন। পরবর্তিতে ঢাকা ছেড়ে সপরিবারে বগুড়ায় স্থানান্তরের ফলে সেখানে তিনি ১৯৫২ সালে বগুড়া জিলা স্কুলে ভর্তি হন এবং এখান থেকেই ১৯৫৮ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। এরপর ঢাকা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে বাংলায় স্নাতক ও ১৯৬৪ সালে স্নাতকোত্তর পাস করেন। তিনি কর্মজীবন শুরু করেন করটিয়া সা'দত কলেজে। যদিও কিছুদিনের মধ্যেই তিনি তা ছেড়ে দেন। এরপর জগন্নাথ কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। জীবদ্দশায় সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও আনন্দ পুরস্কার এবং মরণোত্তর একুশে পদক ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তার রচনা একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছে, তার সৃষ্টিকর্মের অভিযোজনে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও মঞ্চনাটক। ১৯৯৭ সালের তিনি ঢাকায় মৃতু্যবরণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে