রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

অনিরাপদ সড়ক লাশের মিছিল থামাতে হবে

  ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
অনিরাপদ সড়ক লাশের মিছিল থামাতে হবে

কিছুতেই থামছে না সড়ক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় মৃতু্য। প্রতিনিয়ত পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্যর খবর জানা যায়- যা কতটা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার বলার অপেক্ষা রাখে না। যখন সড়ক দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনায় মৃতু্য থেমে নেই- ঘাতক চাকার নিচে একের পর এক মানুষ চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে; তখন সার্বিক পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ তা অনুধাবন করা জরুরি। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, সম্প্র্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, একদিনে দেশের চার জেলায় পৃথক পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ঝরে গেছে আরও ৬ প্রাণ। এর মধ্যে কুমিলস্না লাকসামে ট্রাকের সঙ্গে মোটর সাইকেলের সংঘর্ষে ২ জন, গোপালগঞ্জে বেপরোয়া গতির মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ২ জন নিহত হন। এছাড়া, পাবনার ঈশ্বরদীতে দুই মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন ও সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন ভ্যানচালক নিহত হয়েছে।

আমরা বলতে চাই, যেভাবে একের পর এক সড়কে মানুষের মৃতু্য হচ্ছে তা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ফলে, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। একইসঙ্গে সড়ককে নিরাপদ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি। আমলে নেওয়া দরকার, সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এমনটিও জানা যায়; দেশের সড়ক দুর্ঘটনায় বেশিরভাগই মোটর সাইকেল, নসিমন-করিমন ও ইজিবাইকের মাধ্যমে সংঘটিত হয়। এছাড়া, চাঁদাবাজির হাতবদল হয়েছে, ফিটনেসহীন যানবাহন সড়কে চলছে, আইনের অপপ্রয়োগ চলছে, বিআরটিএ রাজস্ব আদায়ে ব্যস্ত, ট্রাফিক বিভাগ জরিমানা আদায়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, দুর্ঘটনা সংঘটিত হওয়ার যাবতীয় উপাদান সড়কে বিছিয়ে রাখা হয়েছে- এসবও আলোচনায় এসেছে সাম্প্রতিক সময়ে। ফলে, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করা।

সদ্য সমাপ্ত বছরে বিভিন্ন যানবাহনের দুর্ঘটনায় সড়কে প্রাণ গেছে ৮ হাজার ৫৪৩ জনের। ফলে, সার্বিকভাবে সড়ক কতটা অনিরাপদ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। উলেস্নখ্য, এর আগেও সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতার যে চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে তাও কোনোভাবেই এড়ানোর সুযোগ নেই। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিনিয়ত সড়কে যে দুর্ঘটনার বীভৎস চিত্র পরিলক্ষিত হয় তা যেমন এড়ানোর সুযোগ নেই; তেমনি এটাও বিবেচনায় নেওয়া দরকার, এর আগে বারবার এমন বিষয় সামনে এসেছে যে, বিপজ্জনক অভারটেকিং, বেপরোয়া গতি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা, ছোট যানবাহন ক্রমেই বৃদ্ধি, বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে সার্ভিস লেন না থাকায় ইজিবাইক, রিকশা, অটোরিকশা মহাসড়কে নেমে আসা, গুরুত্বপূর্ণ জংশনে, রাস্তার মোড় ও বাস স্টপেজগুলোতে যানজট তৈরি করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশ বাড়িয়ে দিচ্ছে। সঙ্গত কারণেই, এই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চালকের বেপরোয়া মনোভাবসহ বিভিন্ন কারণে বেড়েছে দুর্ঘটনার পরিমাণ- এমনটিও আলোচনায় এসেছে। ফলে, সার্বিক বিষয় আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

সর্বোপরি বলতে চাই, এবারের সড়ক দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনা সংক্রান্ত পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এভাবে একের পর এক মৃতু্য কাম্য হতে পারে না। সড়ক এতটাই অনিরাপদ হয়ে উঠছে যে, তা মৃতু্যর ফাঁদ এমন শঙ্কাও উঠে এসেছে। অন্যদিকে, পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই সড়কের ভয়াবহতা স্পষ্ট হয়, যেখানে প্রতিনিয়তই মানুষ চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে। এছাড়া, মনে রাখা দরকার, নানা প্রতিশ্রম্নতি সত্ত্বেও সড়ক নিরাপদ হয়নি। প্রতিনিয়ত দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে- যা কাম্য হতে পারে না। সঙ্গতকারণেই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে, সড়ক নিরাপদ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে