বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
পাঠক মত

বেপরোয়া বাইক চালনায় জরিমানা বৃদ্ধির দাবি

  ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
বেপরোয়া বাইক চালনায় জরিমানা বৃদ্ধির দাবি

বর্তমানে দেশে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালনা। তরুণদের মধ্যে বেপরোয়া গতিতে বাইক চালানো, ট্রাফিক সিগনাল না মানা, হেলমেট ব্যবহার না করার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা, যা সাধারণ পথচারীসহ সকলের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনার মধ্যে প্রায় ৪০% ঘটে মোটরসাইকেলের কারণে। গত এক বছরে শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই বেপরোয়া বাইক চালনার কারণে ২০০টিরও বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ জনের বেশি মানুষ। এছাড়াও, দেশের অন্যান্য শহর ও গ্রামীণ এলাকায়ও এই ধরনের দুর্ঘটনার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এই দুর্ঘটনার বড় কারণ হলো চালকদের বেপরোয়া মনোভাব ও আইনের শিথিল প্রয়োগ। বেপরোয়া বাইক চালানো শুধু চালকের জীবনই ঝুঁকিপূর্ণ করে না বরং সাধারণ পথচারী ও যানবাহনের নিরাপত্তাও হুমকির মুখে ফেলে। বর্তমানে বাংলাদেশে ট্রাফিক আইনে বেপরোয়া বাইক চালানোর জন্য সর্বোচ্চ জরিমানা ২,০০০ টাকা, যা অনেকের কাছে তেমন বড় শাস্তি নয়। তাই জরিমানা বৃদ্ধি না হলে চালকদের আইন অমান্যের প্রবণতা কমবে না। আর শুধু জরিমানা বাড়ালেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব না; পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিও জরুরি। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে নিরাপদ মোটরসাইকেল চালানোর প্রচারণা বাড়াতে হবে। আইন বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর আরও কঠোর তদারকি নিশ্চিত করা দরকার। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রম্নত পদক্ষেপ এই সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায়।

মালিহা মেহনাজ

শিক্ষার্থী

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

অপেক্ষারত আইনের শাসন, আমাদের কোথায় দাঁড়ানো উচিত?

আইনের শাসন একটি রাষ্ট্রের ন্যায়বিচার ও সুশাসনের মূল ভিত্তি। এটি শুধু একটি আইনি কাঠামো নয়, বরং রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে সমতা, মানবাধিকার এবং নৈতিকতার প্রতীক। কিন্তু আমাদের সমাজে আইনের শাসন যেন অধরা বাস্তবতা। ক্ষমতার অপব্যবহার, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন আইন সবার জন্য সমান হওয়ার কথা, তখন ক্ষমতাবানরা আইনের ঊর্ধ্বে উঠে দাঁড়াচ্ছে, অপরাধীরা শাস্তি এড়িয়ে যাচ্ছে, আর সাধারণ মানুষ বিচারপ্রাপ্তির অপেক্ষায় দিন গুনছে। এ পরিস্থিতি শুধু আমাদের বিচারব্যবস্থাকে নয়, পুরো সামাজিক কাঠামোকেই দুর্বল করে তুলছে। আমাদের প্রথম কাজ হলো ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আইনের প্রয়োগে স্বচ্ছতা ও সমতা আনয়ন। বিচারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে প্রশাসনকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। দীর্ঘসূত্রিতার অবসান ঘটাতে প্রযুক্তি-নির্ভর বিচারপ্রক্রিয়া চালু করতে হবে, যেখানে প্রতিটি মামলা দ্রম্নত নিষ্পত্তি পায়। পুলিশ ও প্রশাসনের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে স্বাধীন ও শক্তিশালী মানবাধিকার কমিশন এবং পর্যবেক্ষণমূলক প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সর্বোপরি, নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। আমাদের প্রত্যেককে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে, আইন মানতে হবে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে। শিক্ষা ও গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে আইনের শাসন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি, সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে সুশাসনের দাবিকে আরও জোরালো করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, যা রাষ্ট্রের সদিচ্ছা এবং নাগরিকদের অংশগ্রহণের উপর নির্ভরশীল। আমাদের এখনই দাঁড়াতে হবে সঠিক অবস্থানে, যেখানে প্রতিটি অপরাধের বিচার হয়, প্রতিটি নাগরিক তার অধিকার পায়, এবং সুশাসন একটি বাস্তব রূপ লাভ করে। এই প্রতিজ্ঞাই হতে পারে একটি উন্নত, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়ার মূল চাবিকাঠি।

রিফাত রহমান

শিক্ষার্থী

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে