রেমন্ড স্যামুয়েল টমলিনসন বিখ্যাত মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও বিশ্বের প্রথম ই-মেইল প্রবর্তনকারী। ১৯৭১ সালে ইন্টারনেটের সূচনাকারী আরপানেটে টমলিনসন প্রথম ই-মেইল পাঠান। এর আগে একই কম্পিউটারের বিভিন্ন ব্যবহারকারীদের মধ্যে মেইল আদান-প্রদান করা যেত। কিন্তু টমলিনসনের পদ্ধতিতে প্রথমবারের মতো আরপানেটে যুক্ত বিভিন্ন হোস্টের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদান সম্ভব হয়। তিনিই প্রথম কম্পিউটার এবং এর ব্যবহারকারীদের মধ্যে পার্থক্য বোঝানোর জন্য ব্যবহারকারীর নামের সামনে '@' চিহ্নটি ব্যবহার শুরু করেন। তারপর থেকে ই-মেইলে এই চিহ্নটি ব্যবহার হয়ে আসছে। ১৯৪১ সালের ২৩ এপ্রিল তিনি নিউইয়র্ক শহরের আমস্টারডাম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। এর পরপরই পরিবারের সঙ্গে ভেইল মিলস নামের একটি গ্রামে চলে যান। সেখানেই তার পড়াশোনা শুরু। সেখানকার স্কুলে পড়াশোনা শুরু করে পরে নিউইয়র্কের ট্রয়ে অবস্থিত রেনসেলার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে তড়িৎকৌশলে বিএসসি ডিগ্রি পান ১৯৬৩ সালে। পড়ার সময় আইবিএমের কো-অপ প্রোগ্রামে অংশ নেন। স্নাতক হওয়ার পর তড়িৎকৌশলে পড়ালেখা অব্যাহত রাখার জন্য তিনি ম্যাসাচুসেট্?স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে চলে যান। সেখানে স্পিচ কমিউনিকেশন গ্রম্নপের সঙ্গে কাজ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মাস্টার্সের অভিসন্দর্ভের জন্য তিনি একটি এনালগ-ডিজিটাল হাইব্রিড স্পিচ সিনথেসাইজার ডেভেলপ করেন। ১৯৬৭ সালে বোল্ট, বারানেক ও নিউম্যান নামে (বর্তমানে বিবিএন টেকনোলজিস) একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে তিনি ঞঊঘঊঢ-এর উদ্ভাবনে সহায়তা করেন- যার মধ্যে ছিল আরপানেটের অপারেটিং সিস্টেম, নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রক প্রোগ্রাম এবং টেলনেট বাস্তবায়ন। এ সময় তিনি ঈচণঘঊঞ নামে একটি প্রোগ্রাম লেখেন যা আরপানেটের এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে নথি স্থানান্তর করতে পারত। ওই সময় টাইম শেয়ারিং কম্পিউটারের একজন ব্যবহারকারী একই কম্পিউটারের আর একজন ব্যবহারকারীকে বার্তা পাঠানোর জন্য ঝঘউগঝএ নামে একটি প্রোগ্রাম ব্যবহার করত। টমলিনসনকে দায়িত্ব দেওয়া হয় এই প্রোগ্রামটিকে পরিবর্তন করে এক কম্পিউটারের ব্যবহারকারী যেন অন্য কম্পিউটারের ব্যবহারকারীকে বার্তা প্রেরণ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে। তিনি তার ঈচণঘঊঞ প্রোগ্রাম থেকে কোডিংয়ের অংশ বিশেষ ঝঘউগঝএ-এ যুক্ত করলে সেটি এক কম্পিউটারের ব্যবহারকারীর বার্তা অন্য কম্পিউটারের ব্যবহারকারীকে পাঠানোর জন্য উপযুক্ত হয়। আর এভাবেই বিশ্বের প্রথম ই-মেইল চালু হয়। ২০১৬ সালের ৫ মার্চ আকস্মিকভাবে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে টমলিনসন মারা যান।