প্রশ্ন: দূষণে আক্রান্ত একটি নদীর পানি দূষণ রোধের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে তা ৫টি বাক্যে লেখ।
উত্তর: দূষণে আক্রান্ত একটি নদীর পানি দূষণ রোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে-
১. নদীর পানিতে কোনো ধরনের ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না।
২. কলকারখানার বর্জ্য নদীতে ফেলার আগে দূষণমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. জীবনজন্তুর মৃতদেহ, মলমূত্র নদীতে ফেলা যাবে না।
৪. নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ড্রেনগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।
৫. সর্বোপরি নদীর পানির দূষণ রোধে সরকারকে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।
প্রশ্ন: দূষিত পানি কী? তোমার এলাকা বন্যাকবলিত হলে তুমি কিভাবে বিশুদ্ধ পানি পান করতে পার সে সম্পর্কে ৪টি বাক্যে লেখ।
উত্তর: পানিতে ক্ষতিকর কোনো কিছু মিশে থাকলে সে পানিকে দূষিত পানি বলা হয়।
বন্যার সময় পান করার জন্য বিশুদ্ধ পানি পাওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় পানি ফুটানোও সম্ভব হয় না। ফুটানো ছাড়া ছাঁকন বা থিতানো পদ্ধতিতে পানি পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব হয় না। এ অবস্থায় আমি বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ (ফিটকিরি, বিস্নচিং পাউডার, হ্যালোজেন ট্যাবলেট ইত্যাদি) মিশিয়ে পানিকে জীবাণুমুক্ত করে পান করতে পারব।
প্রশ্ন: বায়ুতে যে সব সময়ই কিছু জলীয় বাষ্প থাকে তা কীভাবে প্রমাণ করবে?
উত্তর: বায়ুতে সব সময়ই কিছু জলীয় বাষ্প থাকে। নিচের পরীক্ষাটির সাহায্যে সহজেই তা প্রমাণ করা যায়- একটি কাচের গস্নাসে কয়েক টুকরো বরফ নিই। তারপর কিছুক্ষণ রেখে দিই। লক্ষ্য করলে দেখব যে, গস্নাসের বাইরের গায়ে পানি জমে আছে। হাত দিয়ে গস্নাস ধরলে হাতে পানি লাগবে এবং গস্নাসটি ঠান্ডা অনুভূত হবে। গস্নাসের বাইরের গায়ের এ পানি বরফ থেকে আসেনি। আসলে গস্নাসের চারপাশের বায়ুতে যে জলীয়বাষ্প ছিল তাই ঠান্ডা হয়ে পানিতে পরিণত হয়েছে। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, বায়ুতে সব সময়ই কিছু জলীয় বাষ্প থাকে।
প্রশ্ন: পানি দূষণ কীভাবে রোধ করা যায়?
উত্তর: পানি দূষণ রোধ করার উপায়গুলো নিচে উলেস্নখ করা হলো-
১. ফসল উৎপাদনে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে জৈব সার ব্যবহার করা।
২. ফসল উৎপাদনে কীটনাশক ব্যবহার না করা।
৩. কলকারখানার বর্জ্য নদী কিংবা ডোবায় না ফেলা।
৪. মরা ও পচা জীবজন্তু এবং জৈব আবর্জনা পানিতে না ফেলে মাটিচাপা দেয়া।
৫. কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর মলমূত্র, বিছানাপত্র ও জামাকাপড় পুকুর, খাল-বিল বা নদীর পানিতে না ধোয়া।
৬. পুকুর বা নদীর পানিতে বাসন-কোসন না মাজা, সাবান দিয়ে গোসল না করা।
৭. পুকুর বা নদীতে গরু, মহিষ গোসল না করানো।
৮. সব সময় স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার করা।
প্রশ্ন: পুকুরের পানিকে জীবাণুমুক্ত করতে হলে কীভাবে শোধন করতে হবে?
উত্তর: পুকুরের পানিকে জীবাণুমুক্ত করতে শোধন করার উপায় নিচে উলেস্নখ করা হলো-
১. পুকুরের পানিতে কাদা ও ময়লা মিশে থাকে। পাতলা কাপড় বা ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে এ পানি পরিষ্কার করা যায়। তবে পরিষ্কার হলেও এভাবে পানি জীবাণুমুক্ত হয় না।
২. পুকুরের পানি কোনো কলস বা পাত্রে অনেকক্ষণ রেখে দিতে হবে, দেখা যাবে পাত্রের তলায় তলানি জমেছে এবং ওপরের অংশের পানি পরিষ্কার হয়ে গেছে। তলানি জমে যাওয়ার পর কলস বা পাত্রটি অল্প কাত করে ওপরের পানি অন্য কলস বা পাত্রে ঢেলে নিতে হবে। এভাবে পরিষ্কার পানি আলাদা করার পদ্ধতিকে থিতানো বলে। পাত্রের পানিতে অল্প ফিটকিরি দিলে তাড়াতাড়ি তলানি জমে এবং পানি কিছুটা জীবাণুমুক্ত হয়।
৩. পুকুরের পানি সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করতে চাইলে পানিকে ফুটাতে হবে। পানি ফুটতে শুরু করার পর আরো ২০ মিনিট তাপ দিলে পানিতে থাকা জীবাণু মারা যায়। এরপর পানিকে ঠান্ডা করে ছেঁকে নিলে তা পান করার জন্য নিরাপদ হয়।
প্রশ্ন: বিশুদ্ধ পানি কী? বিশুদ্ধ পানির ৪টি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর: যে কোনো ধরনের রোগ জীবাণুমুক্ত পানের উপযোগী পানিকে বিশুদ্ধ পানি বলে।
বিশুদ্ধ পানির ৪টি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
১. বিশুদ্ধ পানি সব ধরনের জীবাণুমুক্ত হবে।
২. পানির রং বা বর্ণ টলমলে ও বর্ণহীন হবে।
৩. পানিতে কোনো প্রকার দুর্গন্ধ ও ভাসমান পদার্থ থাকবে না।
৪. পানি খুবই স্বচ্ছ হবে।
প্রশ্ন: আর্সেনিক কী? আর্সেনিকের ক্ষতিকর প্রভাব ৪টি বাক্যে বর্ণনা কর।
উত্তর: আর্সেনিক হলো এক প্রকার বিষাক্ত পদার্থ, যা মাটির নিচে খনিজ হিসেবে থাকে।
প্রাকৃতিক কারণে আর্সেনিক দূষণ হয়ে থাকে। আর্সেনিক ভূগর্ভের পানির স্তরের সংস্পর্শে এলে তা পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করে। আর্সেনিকযুক্ত পানি দীর্ঘদিন পান করলে হাত-পায়ের চামড়ায় এক ধরনের ক্ষত বা ঘা তৈরি হয়, যা আর্সেনিকোসিস রোগ নামে পরিচিত। এ রোগের সহজ কোনো চিকিৎসা নেই।
প্রশ্ন: পানি পরিষ্কার ও টলটলে হলেও তার বিশুদ্ধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে কেন? ৫টি বাক্যে বর্ণনা কর।
উত্তর: পানি পরিষ্কার ও টলটলে হলেও তা পান করার উপযোগী নাও হতে পারে। কারণ খালি চোখে দেখা যায় না এমন অনেক রোগজীবাণু বা ক্ষতিকর পদার্থ এ পানিতে মিশে থাকতে পারে। পরিষ্কার ও টলটলে নলকূপের পানিতে বিষাক্ত আর্সেনিক থাকতে পারে। এ ধরনের পানিকে বিশুদ্ধ পানি মনে করে পান করলে শরীরে নানা রোগ দেখা দেবে। তাই পানি পরিষ্কার ও টলটলে হলেও তার বিশুদ্ধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।