বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এসএসসির বাংলা প্রথম পত্র

আরিফ আনজুম, সহকারী শিক্ষক, আমতলী মডেল স্কুুল, শিবগঞ্জ, বগুড়া
  ১৯ জুন ২০২২, ০০:০০
এসএসসির বাংলা প্রথম পত্র
এসএসসির বাংলা প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

৬। ফেব্রম্নয়ারির একুশ তারিখ দুপুর বেলার রক্ত বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায়? বরকতের রক্ত? প্রভাতফেরি, প্রভাতফেরি আমায় নেবে সঙ্গে বাংলা আমার বচন, আমি জন্মেছি এই বঙ্গে।

1

ক. কবি আবদুল হাকিম কত সালে মৃতু্যবরণ করেন?

খ. কবি আবদুল হাকিমের বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনা করার কারণ কী বুঝিয়ে লেখো।

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে 'বঙ্গবাণী' কবিতার মিল কোথায়? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উদ্দীপক ও 'বঙ্গবাণী' কবিতার কবি উভয়ের চেতনা একই মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তর :

ক. কবি আবদুল হাকিম ১৬৯০ সালে মৃতু্যবরণ করেন।

খ. কবি আবদুল হাকিমের বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনা করার প্রধান কারণ বাংলা ভাষার প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ।

কবি 'বঙ্গবাণী' কবিতায় বাংলা ভাষার প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন আরবি-ফারসি ভাষার প্রতি তার কোনো বিদ্বেষ নেই।

কবি মনে করেন, যে ভাষা জনসাধারণের বোধগম্য নয়, যে ভাষায় অন্যের সঙ্গে ভাব বিনিময় করা যায় না, সে সব ভাষার লোকের পক্ষে মাতৃভাষায় কথা বলা, সাহিত্যচর্চা করা উচিত এবং মাতৃভাষায় সার্বিক রচনাই একমাত্র সূচনাস্বরূপ।

এ কারণে কবি মাতৃভাষা বাংলায় সাহিত্যচর্চার প্রতি মনোনিবেশ করেছেন। এর মধ্যদিয়ে তিনি বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন।

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে 'বঙ্গবাণী' কবিতার মিল হলো উভয় জায়গায় বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার কথা বলায়। মাতৃভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় যথাযথভাবে মনের ভাব প্রকাশ করা যায় না। বাংলা ভাষা বাঙালির মাতৃভাষা। এদেশের মানুষ মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন।

অবশেষে তারা রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দান করেছেন। উদ্দীপকে মহান একুশে ফেব্রম্নয়ারির বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। এ দিনটি আমাদের মাতৃভাষার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। কবি সবার সঙ্গে প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণ করে ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

অন্যদিকে 'বঙ্গবাণী' কবিতায়ও কবি আবদুল হাকিম বংশানুক্রমে বাংলাদেশে বাস করেন। বাংলা তার মাতৃভাষা। তাই তিনি মাতৃভাষা বাংলা চর্চা করেন। এ ভাষাতেই গ্রন্থ রচনায় মনোনিবেশ করেন। উদ্দীপক ও 'বঙ্গবাণী' কবিতার কবি দুজনই বাংলাদেশি। বাংলা তাদের মাতৃভাষা।

উভয় ক্ষেত্রেই তারা বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার কথা বলেছেন। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সঙ্গে 'বঙ্গবাণী' কবিতার মিল হলো উভয় জায়গায় বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার কথা বলার দিক থেকে।

ঘ. প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উদ্দীপক ও 'বঙ্গবাণী' কবিতার কবি উভয়ের চেতনা একই মন্তব্যটি যথার্থ। মাতৃভাষা মানুষের চেতনার সঙ্গে মিশে থাকে। মাতৃভাষার মধ্যদিয়েই মানুষের সংস্কৃতি, চিন্তা-চেতনা ও অস্তিত্বের প্রকাশ ঘটে। এ কারণেই মানুষ মাতৃভাষাকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করে।

'বঙ্গবাণী' কবিতাটি কবি সতেরো শতকে রচনা করেন। সেই সময় বঙ্গভাষী ও বঙ্গভাষার প্রতি এমন বলিষ্ঠ উচ্চারণ বিরল। কবি আবদুল হাকিম সেই বলিষ্ঠ উচ্চারণ করেন। সেই সময়ে একশ্রেণির মানুষের সংকীর্ণতা ও ভাষা বিদ্বেষ তিনি সহ্য করতে পারেননি। সেই সঙ্গে নিজের অস্তিত্বের সঙ্গে, চেতনার সঙ্গে বাংলা ভাষা, দেশি ভাষা কীভাবে জড়িয়ে রয়েছে সেই দিকটি তুলে ধরেছেন। অন্যদিকে উদ্দীপকের কবি একুশে ফেব্রম্নয়ারির কথা বলেছেন। ১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলার বীর সন্তানরা মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য আন্দোলন করে শহিদ হন। কবি সেই চেতনাকে বুকে লালন করেন। কারণ তিনি বাংলায় জন্মেছেন, বাংলা ভাষায় কথা বলেন।

উদ্দীপকে 'বঙ্গবাণী' কবিতার কারণ ও প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কিন্তু উভয় ক্ষেত্রে অভিন্ন বিষয়ই ধ্বনিত হয়েছে তা হলো বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। কারণ উভয় কবিই একই চেতনা লালন করেন, যে চেতনা তাদের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

৭। ক. সেই সাতজন নেই আজ টেবিলটা তবু আছে।

সাতটা পেয়ালা আজও খালি নেই,

একই সে বাগানে আজ এসেছে নতুন কুঁড়ি

শুধু সেই সেদিনের মালী নেই।

খ. ঋতু বৈচিত্র্যের সুন্দর জন্মভূমি আমার।

বিচিত্র রূপ তার শস্য শ্যামল ক্ষেত খামার

প্রিয় জন্মভূমি মা তোমায় ভালোবাসি বেশুমার।

ক. মধুসূদনের অমর কীর্তি কোনটি?

খ. 'দুগ্ধস্রোতোরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে'- কথাটি বুঝিয়ে লেখো।

গ. উদ্দীপক ক অংশে 'কপোতাক্ষ নদ' কবিতার যে দিকটি

ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপক খ অংশের আড়ালে কবির মূল চেতনারই

প্রকাশ ঘটেছে'- মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর :

ক. মধুসূদনের অমর কীর্তি হচ্ছে 'মেঘনাদবধ কাব্য'।

খ. দুগ্ধ-স্রোতোরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে'- এই কথাটি দিয়ে কবি কপোতাক্ষ নদের স্নেহধারাকে বুঝিয়েছেন।

কপোতাক্ষ নদের স্নেহধারায় সিক্ত হয়ে কবির শৈশব-কৈশোর কেটেছে। কপোতাক্ষ নদকে ঘিরে তার অনেক আনন্দ-বেদনার স্মৃতি রয়েছে। মায়ের দুধ পান করে যেমন সন্তান পুষ্ট হয়, ঠিক তেমনই কপোতাক্ষ নদের জলধারা কবির হৃদয়কে তৃপ্ত করেছে। এই কারণেই কবি কপোতাক্ষ নদকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করে আলোচ্য কথাটি বলেছেন।

গ. উদ্দীপক ১ অংশে 'কপোতাক্ষ নদ' কবিতার স্মৃতিকাতরতার দিকটি ফুটে উঠেছে।

স্মৃতিবিজড়িত অতীত মানুষকে কাতর করে তোলে। মানুষ তার সুখের অতীত বারবার ফিরে পেতে চায়। অতীতের অনুরাগ, আবেগ, ভালোবাসা কখনো বিচ্ছিন্ন হওয়ার নয়।

উদ্দীপক ১-এ লেখক তার সোনালি অতীতের কথা স্মরণ করেছেন। সবাই মিলে কফি হাউসে যে আড্ডা দিত সেই সোনালি সময়, সোনালি বিকেলের কথা ভেবে কাতর হন। এর মাধ্যমে তার সেই দিনগুলো ফিরে পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশিত হয়। কপোতাক্ষ নদ কবিতায় কবি দূর প্রবাসে গিয়ে মাতৃভূমি ও শৈশবের প্রিয় কপোতাক্ষ নদের কথা মনে করে কাতর হয়েছেন। কবি শৈশবে কপোতাক্ষের তীরের প্রাকৃতিক পরিবেশে হেসে-খেলে বেড়ে উঠেছেন। তাই এই নদের কথা তিনি গভীর আবেগে স্মরণ করেন। এই নদের কাছে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে