প্রশ্ন :বাতাসে পানি আছে তা আমরা কীভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি?
উত্তর : বায়ুতে যে সবসময় কিছু পানি জলীয় বাষ্প অবস্থায় থাকে তা নিচের পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণ করা যায় :একটি কাচের গস্নাসে কয়েক টুকরা বরফ নিই। কিছুক্ষণ রেখে দেখা গেল গস্নাসের বাইরের গায়ে ফোঁটা ফোঁটা পানি জমেছে। গস্নাসের ভেতর থেকে পানি অবশ্যই বাইরে আসতে পারে না। তাই গস্নাসের বাইরের ফোঁটা ফোঁটা পানি গস্নাসের বরফ থেকে আসেনি।
[চিত্র : গস্নাসের বাইরে ফোঁটা ফোঁটা পানি] বরফের ঠান্ডার কারণে গস্নাসটি ঠান্ডা হয়েছে। আর সে ঠান্ডার সংস্পর্শে বায়ুর জলীয় বাষ্প পানিকণায় পরিণত হয়ে গস্নাসের বাইরের গায়ে জমা হয়েছে। এ পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বায়ুতে সবসময়ই জলীয় বাষ্প তথা পানি থাকে।
প্রশ্ন :পুকুরের পানি থেকে আমরা কীভাবে নিরাপদ পানি পেতে পারি?
উত্তর : পুকুরের পানিকে ফুটিয়ে অথবা রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিরাপদ পানিতে পরিণত করা যায়। প্রথমে এ পানিকে ছাঁকন বা থিতানোর মাধ্যমে পরিষ্কার করে নিতে হয়। নিচে প্রক্রিয়াগুলো ব্যাখ্যা করা হলো :
ছাঁকন : পাতলা কাপড় বা ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে পানি পরিষ্কার করার প্রক্রিয়াই হলো ছাঁকন।
থিতানো : একটি কলসি বা পাত্রে পুকুরের পানি নিয়ে রেখে দিলে। কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে পাত্রের তলায় তলানি জমেছে। উপরের অংশের পানি পরিষ্কার হয়েছে। পানিতে থাকা ময়লা যেমন- বালি, কাদা ইত্যাদি সরানোর এই প্রক্রিয়াই হলো থিতানো।
ফুটানো : পানি জীবাণুমুক্ত করার একটি ভালো উপায় হলো ফুটানো। জীবাণুমুক্ত নিরাপদ পানির জন্য ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে পানি ফুটাতে হবে। রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পানি বিশুদ্ধকরণ : এ ক্ষেত্রে ফিটকিরি, বিস্নচিং পাউডার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ইত্যাদি পরিমাণমতো মিশিয়ে আমরা পানি নিরাপদ করতে পারি।
প্রশ্ন :ঠান্ডা পানির গস্নাসের গায়ে লেগে থাকা পানির কণা এবং শিশির কেন একই রকম?
উত্তর : রাতে ঘাস, গাছপালা ইত্যাদির উপর যে বিন্দু বিন্দু পানি জমে তাকে শিশির বলে। বায়ু যখন ঠান্ডা কোনো বস্তুর সংস্পর্শে আসে, তখন বায়ুতে থাকা জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়ে পানির ফোঁটা হিসেবে জমা হয়। কাচের গস্নাসে বরফের টুকরা রাখলে গস্নাসটি ঠান্ডা হয়ে যায়। বাতাসের জলীয় বাষ্প ঠান্ডা গস্নাসের সংস্পর্শে এসে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে পানির কণায় পরিণত হয় এবং গস্নাসের বাইরের গায়ে তা বিন্দু বিন্দু পানি হিসেবে জমা হয়। গস্নাসের বাইরের গায়ে লেগে থাকা পানির কণা এবং শিশির একই রকম। কারণ উভয়ের মূল গঠন উপাদান পানি। বাতাসের জলীয় বাষ্প, গস্নাসের গায়ে লেগে থাকা পানি ও শিশির- পানির বিভিন্ন রূপ ছাড়া কিছুই নয়।
প্রশ্ন :বরফ কীভাবে পানিতে পরিণত হয়? দুধ কেন তরল পদার্থ? তিনটি কারণ লেখ।
উত্তর : বরফকে তাপ দেওয়ার কারণে অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে তা পানিতে পরিণত হয়।
দুধ তরল পদার্থ কারণ : র. দুধের তরল অবস্থায় আকার ঠিক থাকে না কিন্তু আয়তন ঠিক থাকে।
রর. দুধ তরল পদার্থ কারণ তাপ দিলে এমন অবস্থায় আনা যায় যাতে অণুগুলোর মধ্যে কোনো বন্ধন থাকে না।
ররর. এরা জায়গা দখল করে কিন্তু তা নির্দিষ্ট থাকে না।
কোনো কিছু দিয়ে না মুছে বোতলের ভেতরে লেগে থাকা পানি তাপ দিয়ে দূর করা যায়।
প্রশ্ন :পানি দূষণ বলতে কী বুঝায়? পানি দূষণের দু'টি কারণ লেখ। খাবার পানি কীভাবে বিশুদ্ধ করবে সে সম্পর্কে দু'টি বাক্য লেখ।
উত্তর : যেসব কারণে পানি পান করা ও অন্যান্য ব্যবহার অনুপযোগী হয়, তাকে পানি দূষণ বলে।
পানি দূষণের দু'টি কারণ নিচে উলেস্নখ করা হলো :
১. পুকুর বা নদীর পানিতে বাসন-কোসন মাজা, গোসল করা, ময়লা কাপড় কাচা, গরু-মহিষ গোসল করানো, পাট পচানো, পায়খানা-প্রসাব করা, প্রাণীর মৃতদেহ ফেলা প্রভৃতি কারণে নদী-নালা, খান-বিল ও পুকুরের পানি দূষিত হয়। ২. কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ, পানিতে ফেললে পানি দূষিত হয়। কারণ এই বজ্য পদার্থে ক্ষতিকর পদার্থ মিশে থাকে। খাবার পানি যেভাবে বিশুদ্ধ করব তা নিচে উলেস্নখ করা হলো :১. ময়লাযুক্ত পানিকে ছাঁকন বা থিতানোর মাধ্যমে পরিষ্কার করে ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে ফুটিয়ে বিশুদ্ধ করব।
২. বন্যা বা জলোচ্ছ্বাসের সময় ফিটকিরি, বিস্নচিং পাউডার বা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মিশিয়ে পানি বিশুদ্ধ করব।
হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়