বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
সা ক্ষা ৎ কা র

বগুড়া থিয়েটার দিয়ে আমার যাত্রা শুরু

মোমেনা চৌধুরী- দেশের বিশিষ্ট মঞ্চ অভিনেত্রী। পরবর্তী সময়ে টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্রের মধ্যে আছে 'হালদা', 'অজ্ঞাতনামা', 'রিকশা গার্ল' প্রভৃতি। তার উলেস্নখযোগ্য মঞ্চনাটক, একক মঞ্চাভিনয়ের 'লাল জমিন' দেশে ও দেশের বাইরে তিন শতাধিক বার মঞ্চস্থ হয়েছে। গতবছর তিনি তার 'লাল জমিন' নিয়ে দুবাই, নিউইয়র্ক, কানাডা সফর করে এসেছেন। এ নিয়ে এবং অন্যান্য বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন...
  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
মোমেনা চৌধুরী

এখন তো 'লালজমিন' নিয়েই আছেন- তাই না!

হঁ্যা, ঠিক তাই। বেশ ভালোই একটা অভিজ্ঞতার মধ্যদিয়ে যাচ্ছি লালজমিন নিয়ে। গত বছর প্রথমবারের মতো দুবাই, নিউইয়র্ক, কানাডা- জার্নি করেছি এ নিয়ে। তাতে দেখেছি, বাংলাদেশের দর্শকদের যেমন দেখি তার চাইতেও অনেক বেশি। কারণ যারা দেশের বাইরে থাকেন স্বাভাবিকভাবেই দেশের প্রতি তাদের আলাদা একটা টান থাকে। দেশের প্রতি মমতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা- মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাকে স্মরণ করা এগুলো তারা ফিল থেকেই করেন। অনেক সিনিয়র আর্টিস্ট ছিলেন, প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধারাও ছিলেন। দেশের মানুষের চেয়ে অনেক বেশি আবেগে আপস্নুত হয়েছেন তারা। মঞ্চাভিনয়ের শুরুতে সবাই তাদের রেওয়াজ অনুযায়ী দাঁড়িয়ে আমাকে বিশেষ সম্মানের সঙ্গে বরণ করে নিয়েছেন। এটা আমাকে খুবই মুগ্ধ করেছে।

এই প্রদর্শনীগুলো কতটা সফল হয়েছে?

বিদেশে লালজমিনের প্রদর্শনী করতে গিয়ে আমাকে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা ফেস করতে হয়েছে। যেমন সেখানে আমার টিম মেম্বার নিতে পারিনি। শুধু দুবাইতে একজন সাজেদুর রহমান সেট ডিজাইন থেকে শুরু করে টেকনিক্যাল সব কাজ যত্নের সঙ্গে একাই করেছেন। আর আমেরিকা ও কানাডায় সেখানকার যারা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত তাদের সাপোর্ট নিয়ে টেকনিক্যাল কাজ করেছি। দেশেও আমাকে নানা সমস্যা ফেস করতে হয়। তারপরও আমি বলব, প্রচন্ড টান আর ভালোবাসা এবং আমার নিজের অদম্য মনোবলের কারণে সব জায়গাতেই লালজমিনের প্রদর্শনী সফল।

এ পর্যন্ত কততম প্রদর্শনী হলো লালজমিনের?

এ পর্যন্ত লালজমিনের সাড়ে তিনশত প্রদর্শনী হয়েছে। শিগগিরই অস্ট্রেলিয়া এবং সিঙ্গাপুরেও দু'টি প্রদর্শনীর সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকদিন ধরেই এ নিয়ে কথাবার্তা চলছে। এছাড়া দেশের বাইরেসহ নানা ব্যস্ততায় কলেজে-কলেজে লালজমিনের প্রদর্শনী বন্ধ ছিল। সেটা আবার আগামী মাস থেকে শুরু করব।

লালজমিন প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা কেমন পান?

আমি আমার 'লালজমিন' এর প্রদর্শনী সব জায়গাতেই নিজস্ব অর্থায়নে করে থাকি। বিদেশেও তা-ই হয়েছে। শুধু দুবাইয়ের প্রদর্শনীতে একজন স্পন্সর করেছেন। আমেরিকা, কানাডা দু'জায়গাতেই আমার নিজস্ব অর্থায়নে প্রদর্শনীর কাজ করতে হয়েছে। প্রদর্শনীতে কোনো পৃষ্ঠপোষকতা না থাকাতেও সমস্যা হয়েছে। মঞ্চনাটকে এমনিতেই স্পন্সর পাওয়া যায় না। এটা যদি গান হতো, নাচ হতো তাহলেও এই স্পন্সর পাওয়া যেত। কিন্তু মঞ্চনাটকে এটা সম্ভব না হওয়ায় আমাকে এই সমস্যা সব জায়গাতেই ফেস করতে হয়। দেশেও নিজের অর্থায়নে প্রদর্শনী করে থাকি। তবে যখন সংস্কৃতি মন্ত্রী হিসেবে যখন আসাদুজ্জামান নূর ছিলেন তখন তিনি একটা সাপোর্ট দিতেন। আমার খোঁজ-খবর নিতেন। এরপর কেউই আমার খোঁজ খবর নেননি। বলতে পারেন, সব জায়গাতেই আমি খালি হাতে 'লাল জমিন' নিয়ে লড়াই করছি।

অভিনয়ে আপনার শুরুটা কীভাবে হলো?

শিল্প-সংস্কৃতির অঙ্গনে আমার যাত্রা শুরু নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে। শুরুর দলটি ছিল বগুড়ার বিখ্যাত দল 'ইয়থকয়ার'। আমার অভিনয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮৬ সালে 'বগুড়া থিয়েটার' দিয়ে। কিন্তু সে বছরই চাকরি হয়ে যায় গাজীপুরের 'টাঁকশাল'-এ। সেখানে 'অবশিষ্ট মঞ্চায়ন পরিষদ'র সঙ্গে যুক্ত হই। সে দলের হয়ে 'প্রত্যাশিত প্রলাপ' নাটকের তিনটি প্রদর্শনীতে অভিনয় করে প্রশংসিত হই। 'আরণ্যক' নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত হই ১৯৯০ সালে। 'ইবলিশ' নাটকে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে শুরু হয় আরণ্যক যাত্রা। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত এ দলেরই হয়ে আছি। 'আরণ্যক'র হয়ে 'সংক্রান্তি', 'ময়ূর সিংহাসন', 'এবং বিদ্যাসাগর', 'প্রাকৃতজনকথা' ইত্যাদি নাটকে অভিনয় করেছি। তবে আমার অভিনয় জীবনের সেরা অর্জনের একটি হচ্ছে 'লালজমিন'। প্রথম টিভিতে অভিনয় করেন আলী ইমামের প্রযোজনায় 'বুকে যখন বঙ্গোপসাগর' নাটকে। আমার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক মামুনুর রশীদ রচিত ও আলাউদ্দিন আহমেদ প্রযোজিত 'ইতিকথা'।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে