বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

কক্সবাজারে ওয়ার্ল্ড ভিশনের আয়োজনে সচেতনতামূলক কর্মশালা

কক্সবাজার প্রতিনিধি
  ১২ মে ২০২৫, ১০:৩৯
কক্সবাজারে ওয়ার্ল্ড ভিশনের আয়োজনে সচেতনতামূলক কর্মশালা
ছবি : যায়যায়দিন

‘ধর্মীয় নেতারা সমাজ পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি’-এই বিশ্বাসকে ভিত্তি করে শিশু সুরক্ষা ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কক্সবাজারে এক বিশেষ মতবিনিময় কর্মশালার আয়োজন করে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ কক্সবাজার।

রোববার (১১ মে) কক্সবাজার সদর উপজেরার মডেল মসজিদ সংলগ্ন সন্মেলন কক্ষে এই কর্মশালায় বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে প্রায় ৪০ জন ইমাম, খতিব, পাদ্রি, ধর্মীয় শিক্ষক,সাংবাদিক ও সমাজপতিগণ অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় বাল্যবিবাহের নেতিবাচক প্রভাব, শিশুদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে করণীয় বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।

1

প্রধান অতিথি সাইফুদ্দিন খালেদ ফিল্ড সুপার ভাইজার ইসলামিক ফাউন্ডেশন কক্সবাজার। তিনি বলেন, ‘শিশুদের জন্য নিরাপদ সমাজ গড়তে হলে আমাদের পরিবার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। ধর্মীয় নেতারা সমাজে যে আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা পান, তা শিশু সুরক্ষায় ব্যবহার করা গেলে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব।’

কর্মশালায় আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার বড়বাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা কামাল উদ্দিন। তিনি বলেন,“বাল্যবিবাহ শুধু একটি সামাজিক সমস্যা নয়, এটি একটি অন্যায়। ইসলাম কখনোই জোরপূর্বক বিয়ে কিংবা অসম বয়সের বিয়েকে সমর্থন করে না। আমাদের প্রতিটি খুতবা এবং ধর্মীয় আলোচনা এখন হতে এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে ব্যবহার করতে হবে।

খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারক পাদ্রি বলেন, ‘প্রত্যেক ধর্মেই শিশুদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আমাদের সম্মিলিত ধর্মীয় উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজের মানসিকতা বদলানো সম্ভব।”

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন,অনেক বাবা-মা কন্যাশিশুর নিরাপত্তার জন্য অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেন। অথচ সেটিই কখনো কখনো তাদের সবচেয়ে বড় অনিরাপত্তা হয়ে ওঠে। ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং সেই শান্তি শিশুদের জীবনেও প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক বার্তা যদি জনগণের কাছে পৌঁছায়, তবে বাল্যবিবাহসহ শিশু নির্যাতনের মতো সামাজিক ব্যাধি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় জনসচেতনতা তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন।

ওয়ার্ল্ড ভিশন কক্সবাজার এমএস্এস্ও পার্থ প্রতিম বাগচি বলেন,আমরা মনে করি, শিশু সুরক্ষা শুধু একটি উন্নয়নমূলক বিষয় নয়, এটি নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্বও। সেই জায়গা থেকে ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে কাজ করাটা আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। ধর্মীয় নেতারা যদি এই বিষয়ে সম্মিলিতভাবে সমাজে সচেতনতা তৈরি করেন, তাহলে এই প্রবণতা রোধ করা সম্ভব।

শেষে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট, ব্যানার ও প্রচারসামগ্রী বিতরণ করা হয়। ওয়ার্ল্ড ভিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভবিষ্যতেও ধর্মীয় ও সামাজিক নেতাদের নিয়ে এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে