আগামী ২০২২ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা এপ্রিলে এবং উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা জুন মাসে অনুষ্ঠিত হবে। দুটি পরীক্ষাই হবে সীমিত বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। এছাড়া চলতি বছরের মতোই পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক ৩টি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। অন্য বিষয়গুলো অ্যাসাইমেন্টভিত্তিক মূল্যায়ন করা হবে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র আরও জানায়, আগামী বছরের শুরুতেই গ্রুপভিত্তিক ৩টি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস দেওয়া হবে এবং তারই ভিত্তিতে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে।
পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস শেষ করেই এপ্রিলে এসএসসি এবং জুনে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ এবং ঢাকা বোর্ড সচিব তপন কুমার সরকার মঙ্গলবার যায়যায়াদিনকে বলেন, নভেম্বরে এসএসসি, ডিসেম্বরে এইচএসসি এবং স্কুলগুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা চলবে। ফেব্রুয়ারিতে তাই এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না।
এছাড়া পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের পাঠদান তো সম্পন্ন করতে হবে। তাই আগামী এপ্রিলে এসএসসি এবং জুনে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। তার আগে এ দু'টি পরীক্ষা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এদিকে, গত ২৭ অক্টোবর চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিও এমনটিই বলেছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে আরেকটু সময় দিয়ে এই পরীক্ষা শুরু করা হবে। আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস করার বিষয়ও রয়েছে। কাজেই তাদের আরেকটু সময় দিয়ে তারপর পরীক্ষা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালের পুরো ১৮ মাস টানা বন্ধ থাকার পর গত ১২ অক্টোবর থেকে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সীমিত আকারে শ্রেণি কার্যক্রম চলছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা হচ্ছে, নতুন বছরের শুরু থেকেই পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। সে লক্ষ্যে পহেলা নভেম্বর থেকে সারাদেশের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা প্রদান শুরু করেছে। প্রতিদিন ৪০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা প্রদান করা হচ্ছে। এ টিকার কর্মসূচি এখনও রাজধানীভিত্তিক হলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এটি দেশের ২১টি জেলায় সম্প্রসারণ করা হবে। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সহায়তায় স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা কর্মসূচি জোরদার করা হচ্ছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এ কারণেই আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষা পূর্বনির্ধারিত সময়, অর্থাৎ ফেব্রম্নয়ারির শুরুতে হচ্ছে না। এবারের এইচএসসি পরীক্ষাই শেষ হবে ২৫ ডিসেম্বর। সে ক্ষেত্রে ২০২২ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি আবার (এসএসসি) পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। করোনার আগে প্রতি বছর পহেলা ফেব্রম্নয়ারি এসএসসি ও সমমান এবং পহেলা এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার আয়োজন করা হতো। কিন্তু গত দু'বছর (১৭ মার্চ'২০ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর ২১ পর্যন্ত) করোনার কারণে সারাদেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এতে শিক্ষাপঞ্জি এলোমেলো হয়ে গেছে। যার কারণে এটি পুনরুদ্ধারে সময় লাগছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সচিব তপন কুমার সরকার বলেন, আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা এবং ২ ডিসেম্বর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার আয়োজন নিয়েই আমরা ব্যস্ত। অন্য কিছু নিয়ে এখন আমাদের (বোর্ডগুলোর) ভাবার সময় নেই। তিনি জানান, ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হলেই স্কুলগুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা নেওয়া হবে না। তাদেরও বার্ষিক পরীক্ষার ভিত্তিতে ফল দেওয়া হবে এবং নবম শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পাবে।