শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

আপাতত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ নয় পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত :শিক্ষামন্ত্রী

ম যাযাদি রিপোর্ট
  ১১ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
আপাতত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ নয় পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত :শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, 'শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আপাতত বন্ধ করব না, শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম জোরদার করা, স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মনিটরিং করা এবং করোনা পরিস্থিতি ঘন ঘন পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা সাংবাদিকদের বলেন। এর আগে গত রোববার রাতে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে ভার্চুয়াল সিদ্ধান্তের বিষয় জানাতে সাংবাদিক মুখোমুখি হয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, 'প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম যেভাবে চলছে, সেভাবে চলবে। আগামী ৭ দিন পর আবার করোনা জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠক হবে। তখন কমিটি যদি মনে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

বন্ধ করার হবে। যেহেতু টিকা দেওয়া হয়ে যাচ্ছে সেহেতু সমস্যা হবে না।'

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'আমরা এ মাসের মধ্যেই সব শিক্ষার্থীর টিকার প্রথম ডোজ সম্পন্ন করা হবে। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টিকা থেকে বেশি পিছিয়ে রয়েছে। সে কারণে আগামীকাল মঙ্গলবার (আজ)

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, আরবি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, '৩১ জানুয়ারির মধ্যে ১২-১৮ বছর বয়সি (১ কোটি ১৬ লাখ ২৩ হাজার ৩২২ জন) শিক্ষার্থীর প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া সম্পন্ন হবে। ১২-১৮ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা পেতে নিজেদের পরিচয়ের প্রমাণ দিলেই টিকা মিলবে। ১২ জানুয়ারির মধ্যে যারা এক ডোজ টিকা পাবে তারাই শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করতে পারবে। অন্যরা ঘরে বসেই অন-লাইন ও টেলিভিশনের ক্লাস শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেবে।'

করোনার সংক্রমণ হঠাৎ বৃদ্ধি প্রেক্ষিতে করণীয় ঠিক করতে গতকাল রোববার রাতে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিসহ সংশ্লিষ্টরা।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রেশন ছাড়াও নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিতে পারবে। যাদের আইডি কার্ড নেই (এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা) রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে গেলে টিকা পাবে। দ্রম্নত সময়ে শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনতে এ কার্যক্রম সহজ করা হয়েছে।

২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, 'আগামী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই হবে। তবে কখন হবে নির্দিষ্ট করে এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের পরিকল্পনা আছে বছরের মাঝামাঝিতে পরীক্ষা নেয়ার। করোনা পরিস্থিতির ওপর সব নির্ভর করবে।'

বিগত বছরের মতো ২০২২ সালেও পাবলিক পরীক্ষাগুলো নিতে চাই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, 'সময়মতো হবে না, এটা খুব স্বাভাবিক। যারা পরীক্ষা দেবে তারা ক্লাস করতে পারেনি। ক্লাস করিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে বছরের মাঝামাঝিতে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত আছে। কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া সম্ভব না। ক্লাস চলতে থাকবে। যখন মনে করব এখন পরীক্ষা নেওয়া যাবে তখন নেব। কয়েক মাস আগে হয়তো জানিয়ে দিতে পারব না। ২ থেকে ৩ মাস আগে পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।' সব বিষয়ে পরীক্ষা হবে কিনা সেটা পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষমন্ত্রী।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষার্থীদের অবরোধ পরবর্তীতে শিক্ষকদের ক্লাস বর্জনের ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, 'এর আগে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন করেছে। আর এখন তারা সশরীরে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে। তবু আমরা শিক্ষার্থীদের দাবিকে সম্মান জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনো সৃষ্টি হয়নি।'

তিনি বলেন, 'আমার সঙ্গে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়েছে। আশা করি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক বিষয়ে দাবি জানাবে।' আশা করি, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিস্থিতি চলছে সেটা অবিলম্বে নিরসন হবে।

এদিকে, বুটেক্স শিক্ষকরা ধর্মঘট পালন করেছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে শিক্ষকরা ধর্মঘট পালন করছেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি দ্রম্নত এই অস্থিরতা নিরসনের আশ্বাস দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষকরা বৈঠক শুরু করলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাইরে থেকে কলাপসিবল গেট লাগিয়ে দেয়। তারা শিক্ষকদের সভাকক্ষের বিদু্যতের লাইন ও পানির লাইন বন্ধ করে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষকরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে