পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দ্বীপ জেলা ভোলার নৌ-রুটে চলা ঢাকাগামী লঞ্চগুলোতে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরে ভোলার লঞ্চঘাটগুলোতে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। আগে একেকটি লঞ্চে গড়ে ৪-৫ শতাধিক যাত্রী হলেও বর্তমানে তা ২শ' থেকে ৩শ'র মধ্যে নেমে এসেছে। এতে করে অনেকটা লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে লঞ্চ মালিকদের। তবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ মনে করছে, যাত্রীরা সড়কপথে যাতায়াতে উৎসাহী হলেও পরে লঞ্চেই যাতায়াত করবে।
কারণ হিসেবে তারা বলেন, ভোলা থেকে সড়কপথে ঢাকায় যেতে যে সময় লাগে, একই সময় লাগে লঞ্চে যাতায়াতে।
সরেজমিন ভোলার বিভিন্ন লঞ্চঘাট ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে ঘাটে যে পরিমাণ যাত্রী থাকত, তা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের তেমন কোনো ভিড় নেই। তবে ঈদ উপলক্ষে আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে ঢাকা থেকে ভোলায় আসা যাত্রীর চাপ বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
মো ইউসুফ, জাহিদুল ইসলাম, হেলাল উদ্দিন, নুরজাহান বেগমসহ ঢাকাগামী ৮-১০ জন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোলা থেকে ঢাকায় যাতায়াতের জন্য নৌ-রুটই উত্তম। আর ঝামেলাও কম। তাই তারা লঞ্চেই ঢাকায় যাচ্ছেন।
ইলিশা লঞ্চঘাটের ইজারাদার সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছয়টি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। সারা দিন এই ঘাটে টিকিট বিক্রি হয়েছে মোট ৮০০টি। এর মধ্যে সকাল ৮টায় এমভি কর্ণফুলী-৩ লঞ্চে ১৩৮টি, দুপুর পৌনে ২টায় এমভি দোয়েল পাখি, এমভি কর্ণফুলী-১৪ ও এমভি ক্রিস্টাল ক্রুজ লঞ্চে ৩৭০টি এবং সন্ধ্যার পর এমভি তাসরিফ-২ ও এমভি আল ওয়ালিদ-৯ লঞ্চে ২৯৩টি। এই রুটে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে প্রতিটি লঞ্চে গড়ে ৪০০-৫০০ যাত্রী যাতায়াত করতেন।
এ ছাড়াও ভোলার খেয়াঘাট থেকে শনিবার সন্ধ্যায় এমভি কর্ণফুলী-৯ লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এ সময় টিকিট বিক্রি হয়েছে ২০৫টি।
তবে ভোলার দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলার ঘাটগুলোতে ঢাকাগামী যাত্রীর সংখ্যা আগের মতোই আছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিআইডবিস্নউটিএ ভোলা নদীবন্দরের উপ-পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে ভোলার বিভিন্ন লঞ্চঘাটে যাত্রী কিছুটা কমেছে। তবে বরিশালের অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি কমেনি। কারণ, ভোলা থেকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য সড়কপথের চেয়ে লঞ্চ অনেকটা সহজ ও সাশ্রয়ী।