শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শিশুদের ক্ষতি করছে সোশ্যাল মিডিয়া, ক্ষমা চাইলেন জাকারবার্গ

যাযাদি ডেস্ক
  ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
মার্ক জুকারবার্গ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে মার্কিন সিনেটরদের কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়েছেন মার্ক জাকারবার্গসহ অন্যরা। বুধবার মার্কিন সিনেটে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়ার পর ফেসবুকের এই প্রতিষ্ঠাতা সেই সব বাবা-মা ও পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, ফেসবুক ও অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তির জন্য যাদের সন্তানদের ক্ষতি হয়েছে। খবর : বিবিসি বাংলা ও ডয়চে ভেলে।

একজন সিনেটর সরাসরি অভিযোগ করেন, জাকারবার্গরা এমন একটি প্রোডাক্ট নিয়ে এসেছেন, যা মানুষের মৃতু্যর কারণ হচ্ছে। আর শুনানির সময় জাকারবার্গ ওই সন্তানদের অভিভাবকদের বলেছেন, 'আপনাদের যে কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আপনাদের পরিবারের যে ক্ষতি হয়েছে, তা যেন অন্যদের না হয়।'

সিনেটের জুডিশিয়ারি কমিটি এই হাইটেক কর্তাদের ডেকে তাদের কঠিন প্রশ্ন করে। এর নাম দেওয়া হয়েছে, বিগ টেক অ্যান্ড অনলাইন চাইল্ড সেক্সুয়াল এক্সপস্নয়টেশন ক্রাইসিস। মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ ছাড়াও টিকটকের সিইও শাও জি চিউ, স্ন্যাপচ্যাটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইভান স্পিগেল, ডিসকর্ড সিইও জেসন সিট্র এবং এক্স-এর অনলাইন পস্ন্যাটফর্ম প্রধানও এ

সময় উপস্থিত ছিলেন।

সিনেটরদের নিন্দা

এই কমিটির প্রধান সিনেটর ডিক ডুবিন বলেন, 'এই কোম্পানিগুলো যে প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে, তা অনেক বাচ্চার কাছে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোম্পানিগুলো সুরক্ষার পেছনে যথেষ্ট অর্থ খরচ করেনি, প্রাথমিক সুরক্ষার থেকে লাভকেই বড় করে দেখেছে। এর ফলে বাচ্চারা বিপদের মধ্যে পড়েছে।'

সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, 'জুকারবার্গ, আপনি ও আপনার কোম্পানিগুলোর কাজ আমাদের সামনে আছে। আমি জানি, আপনি কখনোই এরকম পরিস্থিতি চাইবেন না, তা সত্ত্বেও আপনার হাতে রক্ত লেগে আছে। আপনার প্রোডাক্ট মানুষকে মারছে।'

জুকারবার্গ সিনেটরদের বলেন, 'ইন্টারনেট শুরু হওয়ার পর থেকে বাচ্চাদের নিরাপদে রাখাটা প্রথম থেকে একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। অপরাধীরা তাদের কৌশল বদলেছে। আমাদেরও প্রোডাক্টের সুরক্ষা বদলাতে হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'সমীক্ষায় দেখা গেছে, সামাজিক মাধ্যম বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে খারাপ।'

অনলাইন সুরক্ষায় অর্থ খরচ করবে কোম্পানিগুলো

ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকের মালিক জুকারবার্গসহ টিকটক, স্ন্যাপ, এক্স ও ডিসকর্ডের প্রধান কর্মকর্তাদেরকে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে উভয় পার্টির সিনেটররা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আইনপ্রণেতারা তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষার জন্য তারা কী করছেন।

এ প্রশ্নের জবাবে টিকটক সিইও শাও জি চিউ বলেন, 'আমার তিনটি সন্তান আছে। আমি জানি, যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা খুবই ভয়ের এবং প্রতিটি বাবা-মার কাছে দুঃস্বপ্নের মতো।'

তিনি জানিয়েছেন, 'নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও মানুষের আস্থা ফেরাতে তিনি দুইশ' কোটি ডলার খরচ করবেন। চলতি বছরেই আমাদের ৪০ হাজার পেশাদার সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে কাজ করবেন।'

মেটাও জানিয়েছে, 'তাদের ৪০ হাজার কর্মী অনলাইন সুরক্ষার বিষয়টা নিয়ে কাজ করছেন। ২০১৬ সাল থেকে তারা দুই হাজার কোটি ডলার এর জন্য খরচ করেছে।'

মেটার কাছেই ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মালিকানা আছে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কিশোর ও সদ্য যুবকদের কাছে অচেনা জায়গা থেকে কোনো বার্তা পাঠানো হলে, তা বস্নক করা হবে। এছাড়া ইনস্টা ও ফেসবুকে কিশোরদের কনটেন্টের ওপর আরও কড়াকড়ি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

জুকারবার্গ এবং টিকটকের সিইও শাও জি চিউ স্বেচ্ছায় সাক্ষ্য দিতে রাজি হলেও স্ন্যাপ, এক্স (আগের টুইটার) এবং ডিসকর্ডের প্রধানরা প্রাথমিকভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এরপর তাদের প্রতি হাজিরার নির্দেশ জারি করে সরকার। মেটা প্রধান জুকারবার্গ এই নিয়ে আটবার কংগ্রেসে সাক্ষ্য দিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে