সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

এখনো নিশ্চিত হয়নি ভোক্তার অধিকার!

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

দীর্ঘদিন ধরে দেশের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও এখনো ভোক্তার স্বার্থ পুরোপুরি নিশ্চিত করা যায়নি। বিশেষ করে ভোগ্যপণ্যের বাজারে রীতিমতো অসহায় সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর তাদের তৎপরতা বাড়ালেও বড় পরিসরে এর সুফল মিলছে না। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আজা বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর আইনি সীমাবদ্ধতা, মানুষের অসচেতনার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের অনৈতিক মুনাফা ভোগের প্রবণতা ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুণ্ন করছে। সে ক্ষেত্রে বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করা সংস্থাগুলোর জনবল বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনগত সীমাবদ্ধতা দূর করা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই জনবল সংকটে ভুগছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর। দেশের বিশাল জনসংখ্যার বিপরীতে সংস্থাটির কর্মী সংখ্যা অতি নগন্য। ফলে পণ্যে ক্রয় বিক্রয় কার্যক্রমের বড় অংশই থাকছে তাদারকির বাইরে। এই সুযোগেই অতিরিক্ত মুনাফা ভাগিয়ে নেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

২০০৯ সালের জাতীয় ভোক্তা অধিকার যাত্রা শুরু করে। ঢাকায় একটি হেড অফিস, আটটি বিভাগীয় অফিসসহ ৬৪ জেলায় জেলা অফিস রয়েছে সংস্থাটির। তবে কর্মী সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। মূলত ভোক্তা অধিকার

কার্যক্রমের মূল ফোকাস হলো, একজন ভোক্তা তার অধিকার যদি না জানে তাকে জানানো অর্থাৎ ভোক্তা সচেতনতা বৃদ্ধি করা। দ্বিতীয়ত, বাজার মনিটরিং। বাজার মনিটরিংয়ের আবার দুটো পার্ট আছে। একটি হলো, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য বাজার মনিটরিং ও নকল-ভেজাল বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যদি খাবার বিক্রি ও নকল পণ্যের বিরুদ্ধে মনিটরিং কার্যক্রম। এছাড়াও ভোক্তারা যদি প্রতারিত হয়, সে অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।

বৃহস্পতিবার রাজধানীতে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে আগামী বিশ্ব ভোক্তা-অধিকার দিবস উদযাপন উপলক্ষে অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম অবহিতকরণ ও প্রচারের লক্ষ্যে গণমাধ্যমের সঙ্গে সেমিনারে আয়োজন করা হয়। সেমিনারে সংস্থাটির মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, 'আমরা চাইলেও ব্যবসায়ীদের অপরাধ অনুসারে তাদের শাস্তি দিতে পারি না। যতটা জরিমানা করা দরকার ততটা করতে পারি না। কারণ ভোক্তা অধিকার আইনের কিছু দুর্বলতা রয়েছে। আমাদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা আইনে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের জনবল সংকটও রয়েছে, ১৭টি জেলায় অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা নেই। তারপরও সারা দেশে প্রতিদিন অধিদপ্তরের ৪০ থেকে ৫০টি টিম দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর সংশোধনের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে অবৈধ মজুতদারদের ধরতে একটি অ্যাপস তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে ২০২৪ বিশ্ব ভোক্তা-অধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে 'ঋধরৎ ধহফ ৎবংঢ়ড়হংরনষব অও ভড়ৎ পড়হংঁসবৎং

সংস্থাটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান বলেন, 'জনবল সংকটের পাশাপাশি এখানে দুটো বিষয় আছে। একটা হলো, আইনে কতটুকু ম্যান্ডেট দেওয়া আছে? আর আইন কতটা মানা হয়। 'বর্তমানে বাজারমূল্য যখন বেড়ে যায় তখন আমরা খুচরা বাজারে যাচ্ছি, পাইকারি বাজারে যাচ্ছি, এমনকি আমরা বড় বড় ডিলার-আড়তেও যাচ্ছি। আমরা বড় বড় রিফাইনারিতেও কাজ করছি। এখন যারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে বা কারসাজি করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যারা হয়তো রিফাইনারি, তারা হয়তো পাঁচ-ছয়টা কোম্পানি, এখানে একটা কিছু বলার সুযোগ থাকে। কিন্তু যখন কারসাজিতে হাজার হাজার লোক জড়িত, যেমন পেঁয়াজের ক্ষেত্রে বলেন, আলুর ক্ষেত্রে হলো, ডাবের ক্ষেত্রে হলো, মরিচের ক্ষেত্রে হলো, ডিমের ক্ষেত্রে এখানে তো হাজার হাজার লোক জড়িত; এসব ক্ষেত্রে আমরা আইডেন্টিফাই করছি, এখানে ইন্টারভেশন করছি এবং এসব তথ্য সরকারের কাছে তুলে ধরছি।'

এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রনে আরেকটি আইন আছে 'প্রতিযোগিতা কমিশন' আইন। অর্থাৎ কেউ বাজার কৃত্রিমভাবে অস্থির করছে কিনা, সেক্ষেত্রে কম্পিটিশন কমিশন তাদের আইন অনুযায়ী মামলা করে। সেখানে ডিম থেকে শুরু করে প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রেই মামলা করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে