সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২
নির্বাহী আদেশে যা আছে

বিশ্বকে কড়া বার্তা দিলেন ট্রাম্প

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসার আদেশে সই জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ ক্যাপিটলে দাঙ্গায় গ্রেপ্তার ১৫শ'র বেশি সমর্থকের মুক্তি
যাযাদি ডেস্ক
  ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
বিশ্বকে কড়া বার্তা দিলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন -ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার অভিষেকের ভাষণে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও ঐক্য বজায় রাখায় ভূমিকা নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের কথাও তিনি সংক্ষেপে তুলে ধরেছেন। তবে বিশ্ববাসীকে তিনি দিয়েছেন কড়া বার্তা। সূত্র:বিবিসি বাংলা, এএফপি ও রয়টার্স।

তার ভাষণটি ছিল বিশ্বকে দেওয়া আরেক কঠোর এবং চ্যালেঞ্জিং বক্তব্য। আর তাতে ছিল আমেরিকার শক্তি ও সম্ভাবনার ফুলঝুরি। স্বভাবসুলভভাবেই, আমরিকার পথে যারা বাধা হয়ে দাঁড়াবে তাদেরকে হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।

পানামা খালকে 'পানামার জন্য একটি বোকার মতো উপহার' বলে ট্রাম্প উলেস্নখ করেছেন এবং এ বিষয়ে কিছু একটা করার প্রতিশ্রম্নতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, 'আমরা এটি ফিরিয়ে নিচ্ছি।'

পানামা খাল খননে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ভূমিকা ছিল। মূলত যুক্তরাষ্ট্রই খালটি নির্মাণ করে কয়েক দশক ধরে এর আশপাশের এলাকায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করেছে। এরপর তারা পানামার সঙ্গে যৌথভাবে খালটি পরিচালনা করে। পরে ১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র এ খালের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিয়েছিল পানামার কাছে।

এরপর থেকে খালটি পরিচালনা করছে পানামা। ট্রাম্প আগেই বলেছিলেন, পানামা গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথের ব্যবস্থাপনা ঠিকমত করতে না পারলে এই খাল যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়ার দাবি জানাবেন। খালটি 'ভুল হাতে' পড়ুক তা তিনি হতে দেবেন না।

অভিষেকের ভাষণে ট্রাম্প কেবল পানামাই নয়, মেক্সিকো উপসাগর প্রসঙ্গে বলেছেন, এটি এখন থেকে 'আমেরিকা উপসাগর' নামে পরিচিত হবে।

যুক্তরাষ্ট্র তাদের সীমানা সম্প্রসারণ করবে এমন কথা ট্রাম্প উচ্চারণ করে দ্রম্নতই অন্য প্রসঙ্গে চলে গেছেন। তিনি বলেছিলেন, আমেরিকা সম্পদ এবং ভূখন্ড বাড়াবে। পরক্ষণেই মঙ্গলগ্রহে আমেরিকার পতাকা গাড়ার প্রতিশ্রম্নতি দেন ট্রাম্প।

মাদকচক্র এবং বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো মোকাবেলায় ট্রাম্প পুরোনো হুমকিই আবার দিয়েছেন। বিশ্ব অর্থনীতিতে শুল্ক আরোপের কথাও আবার বলেছেন ট্রাম্প।

তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের নাগরিকদের সমৃদ্ধ করতে বিদেশের ওপর শুল্ক ও কর আরোপ করব।'

প্রথম দিনে একগুচ্ছ নির্বাহী

আদেশ ও ডিক্রিতে স্বাক্ষর

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ শেষে সোমবার ওভাল অফিসে বসে একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশ ও ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে জন্মগত নাগরিকত্বের সংজ্ঞা নির্ধারণের আদেশ, অবৈধ অভিবাসন বন্ধে সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা ও 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' সুবিধা বাতিল ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসাসহ নির্বাচনী প্রতিশ্রম্নতি বাস্তবায়নের পদক্ষেপও রয়েছে। এদিন শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজ দেশ ও দেশের বাইরে ভিন্ন এক পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন।

সোমবার ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই অভিষেক-সংশ্লিষ্ট একাধিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটন ডিসির ওয়াল্ডার ই ওয়াশিংটন কনভেনশন সেন্টারে 'কমান্ডার-ইন-চিফ বল' শীর্ষক অনুষ্ঠানে সামরিক তলোয়ার দিয়ে একটি বড় কেক কাটেন তিনি। অনুষ্ঠানে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ছিলেন। ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও তার স্ত্রী উষা চুলুকুরি ভ্যান্স। ভাইস প্রেসিডেন্টও তরবারি দিয়ে কেক কাটেন।

ট্রাম্প যে কেকটি কাটেন, সেটিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী এয়ারফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজের নতুন নকশা ছিল। কেক কাটার পর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যক্তিদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, 'কেউ কেক নিতে চান কি না।' অনুষ্ঠানে আবহসঙ্গীত শুরু হলে ট্রাম্প তার হাতে থাকা তলোয়ার নিয়ে তালে তালে নাচতে শুরু করেন।

ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তরবারি দিয়ে কেক কাটার সময় রসিকতা করেন। তিনি বলেন, 'এই দৃশ্য দেখে নিশ্চয়ই যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিস খুবই ঘাবড়ে যাচ্ছে।'

অনুষ্ঠানে ট্রাম্প ও মেলানিয়া নাচ করেন। ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম কোনো অনুষ্ঠানে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়ার সঙ্গে নাচলেন।

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ:অভিবাসন ঠেকাতে ক্ষমতার প্রথম দিন সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার আদেশে সই করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এর আগে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন, বাইডেন প্রশাসনের 'ধ্বংসাত্মক' নীতিগুলো 'পাঁচ মিনিটের মধ্যে' বাতিল করা হবে। নতুন প্রশাসন 'সিবিপি ওয়ান' অ্যাপ বাতিল করার কয়েক ঘণ্টা আগে হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশীর অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করা হয়। ওই অ্যাপের মাধ্যমে সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের জন্য আগে থেকেই বুকিং করতে হয়।

ট্রাম্প তার উদ্বোধনী ভাষণে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন, 'সমস্ত অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করা হবে' এবং লক্ষাধিক 'অবৈধ অভিবাসীকে' ফেরত পাঠানো হবে।

জন্মগত নাগরিকত্বের সংজ্ঞা মোকাবিলার আদেশ থেকে শুরু করে সীমান্তে অবৈধ অভিবাসনকে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার আদেশ, ট্রাম্প মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত কঠোর করার প্রতিশ্রুতি থেকে দ্রম্নত পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। মেক্সিকোর মাদক চক্রগুলোকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে একটি আদেশেও স্বাক্ষর করেছেন তিনি।

এর আগে ওয়াশিংটনের ক্যাপিটাল ওয়ান এরিনায় এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বিগত বাইডেন প্রশাসনের প্রায় ৮০টি নির্বাহী আদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করেন, যেগুলোকে তিনি 'উগ্রপন্থি' হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। ক্যাপিটল হিলে অভিষেক ভাষণে ট্রাম্প বলেন, 'হুমকি ও আগ্রাসন থেকে আমাদের দেশকে রক্ষার চেয়ে বড় কোনো দায়িত্ব আমার নেই।'

এই বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে 'সীমান্ত সিল করে দিতে' এবং ড্রোন বিরোধী সক্ষমতাসহ অতিরিক্ত সম্পদ ও কর্মী নিয়োগের নির্দেশ দেবেন।

যদিও আদেশের বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি, কর্মকর্তারা বলেছেন যে ট্রাম্প জন্মগত নাগরিকত্ব যুগ শেষ করার পরিকল্পনা করছেন। তার মানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানরা আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বলে গণ্য হবে না। জন্মগত নাগরিকত্বের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানেই আছে এবং এটি পরিবর্তন করতে হলে কংগ্রেসের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন। ট্রাম্প কীভাবে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন তা স্পষ্ট করেননি তার কর্মকর্তারা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব আদেশের মধ্যে বিশেষত জন্মগত নাগরিকত্বের সংজ্ঞা পরিবর্তনের যেকোনো আদেশ প্রচন্ড আইনি বিরোধিতার মুখে পড়তে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসন খুব দ্রম্নতই 'সিবিপি অন' মোবাইল অ্যাপ বাতিলের পদক্ষেপ নিয়েছে। এই অ্যাপ ব্যবহার করে অভিবাসী প্রত্যাশীরা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করত। বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা এর আগে জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে অ্যাপটি চালু হওয়ার পর থেকে তা সীমান্তে আটক হওয়া মানুষের সংখ্যা কমাতে সাহায্য করেছে। এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আশ্রয় প্রার্থনা করার একমাত্র বৈধ উপায়।

কাস্টমস ও বর্ডার প্রোটেকশন বা সিবিপি'র ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এই অ্যাপটি আর কার্যকর নেই। ব্যবহারকারীরা অ্যাপটিতে নতুন একটি তথ্য দেখতে পাচ্ছেন, যেখানে বলা হয়েছে 'সিবিপি অ্যাপের মাধ্যমে আগের নির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্টগুলো এখন আর বৈধ নয়'।

সিবিপি অন অ্যাপের মাধ্যমে আগামী তিন সপ্তাহের জন্য ৩০ হাজার অভিবাসীর অ্যাপয়েন্টমেন্ট চূড়ান্ত করেছিল বাইডেন প্রশাসন। ওই অ্যাপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে প্রায় দুই লাখ ৭০ হাজার অভিবাসী মেক্সিকোতে অপেক্ষা করছিলেন বলে ধারণা করা হয়।

সরকারী কর্মীদের 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' সুবিধা বাতিল:প্রথমদিন অফিসে বসেই ডোনাল্ড ট্রাম্প যে একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশ ও ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন তার মধ্যে রয়েছে সরকারি কর্মীদের বাসায় থেকে দাপ্তরিক কাজ করার (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) সুবিধা বাতিলের আদেশ। ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ফলে এখন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সপ্তাহে পাঁচদিন পূর্ণ সময় দপ্তরে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

নির্বাহী এই আদেশের বিষয়ে হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানায়, সরকারের নির্বাহী শাখার সব বিভাগ ও সংস্থার প্রধানেরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঘরে বসে কাজের ব্যবস্থা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন এবং সব কর্মীর নিজ নিজ কর্মস্থলে পূর্ণ সময়ের জন্য সশরীরে কাজে ফেরার ব্যবস্থা করবেন।

ক্যাপিটলে দাঙ্গায় গ্রেপ্তার ১৫শ'র বেশি সমর্থকের মুক্তি:প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্প তিনি নিজের ১ হাজার ৫০০'র বেশি সমর্থককে কারামুক্ত করার জন্য এক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। এসব ব্যক্তি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন।

ক্যাপিটলে দাঙ্গায় জড়িত হাজার দেড়েক সমর্থককে মুক্তি দেওয়ার ইঙ্গিত কয়েক মাস আগে থেকেই দিয়ে রেখেছিলেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি তা বাস্তবায়ন করলেন।

চার বছর আগের ওই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের সত্যায়ন প্রক্রিয়া চলছিল। এ জন্য ডাকা হয়েছিল সিনেট ও কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন। ওই প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় সে সময়ের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা সত্যায়ন প্রক্রিয়া আটকে দিতে ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালান।

ওই ঘটনার চার বছর পূর্তিতে ৬ জানুয়ারি সদ্যবিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ক্যাপিটল হিলে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যে ঘটনা ঘটেছিল, তার চার বছর পর সেটা ভুলে যাওয়া বা পুনর্লিখিত হওয়া- কোনোটিই উচিত হবে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসার আদেশে সই:বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোভিড ১৯ মহামারিসহ অন্যান্য বৈশ্বিক স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগে অভিষেকের দিনই সংস্থাটি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, ডবিস্নউএইচও আমাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেয়েছে, এতদিন বাকিরাও সেটা করেই এসেছে। কিন্তু এসব আর চলতে দেওয়া হবে না। তার অভিযোগ, সদস্য রাষ্ট্রদের অন্যায্য রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে ডবিস্নউএইচও। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সংস্থাটি অযৌক্তিক ও একপাক্ষিকভাবে অনেক বেশি অর্থ নিয়ে থাকে। অথচ চীনের মতো বড় অর্থনীতির দেশের কাছে দাবিকৃত অর্থের পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক কম।

প্রথম মেয়াদেও ডবিস্নউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প। কোভিড মহামারি ইসু্যতে পুরো বিশ্বকে বোকা বানাতে চীনকে সহায়তা করার জন্য সংস্থাটিকে অভিযুক্ত করেন তিনি।

ডবিস্নউএইচও-এর বৃহত্তম আর্থিক সহায়তাকারী যুক্তরাষ্ট্র। সংস্থাটির তহবিলের প্রায় ১৮ শতাংশ আংকেল স্যামের অবদান। ডবিস্নউএইচও থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে, আগামী বারো মাসের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সদস্যপদ বাতিল হওয়ার পাশাপাশি এই বিপুল পরিমাণ অর্থের যোগানও বন্ধ হয়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংস্থাটির বিভিন্ন রকম গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি বিশ্বজুড়ে চলমান রয়েছে। যেমন যক্ষ্ণা, এইডস ইত্যাদির মতো ভয়াবহ রোগ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি যাচাই ও প্রতিকারের উপায় বের করা। ডবিস্নউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলে এসব কর্মসূচির ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

ট্রাম্পের আদেশে বলা হয়েছে, প্রত্যাহার পর্ব চলাকালীন ডবিস্নউএইচও-এর সঙ্গে করা মহামারি চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করবেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সংস্থাটিতে কর্মরত মার্কিন সরকারি কর্মকর্তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে নতুন দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আর বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ইসু্যতে কাজ করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিকল্প অংশীদার খুঁজে বের করবে সরকার।##

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে