সবশেষ তিন সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করা ২২ ডিসিকে (ডেপুটি কমিশনার) বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য দিয়ে জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমান বলেন, 'জনগণের হয়ে সরকার অনেক শক্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং বাস্তবায়ন করছে।' এই ২২ জনের মধ্যে চারজন ২০১৪ সালের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন।
জনপ্রশাসন সচিব বলেন, 'অনেক আগের নির্বাচন হওয়ায় এখন চারজন 'অবশিষ্ট' ছিলেন। অনেকে অবসরে চলে গেছেন, কিন্তু অনেক অভিযোগ রয়েছে।'
তিনি বলেন, 'এদের বিরুদ্ধেও দুদক মামলা করছে। অবসরে যাওয়া মানেই মুক্তি নয়। জনস্বার্থে সরকার এখানে ছাড় দেবে না। যাদের নামে দুর্নীতি, ওভারঅ্যাক্ট, আইনের বাইরে গিয়ে অতিরঞ্জিত কিছু করার অভিযোগ আছে, চাকরিবিধির অধীনে যার যেটা প্রাপ্য, সেই সাজা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।'
সবশেষ জাতীয় নির্বাচনে যুক্ত থাকাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, '২০২৪ সালের নির্বাচনে যারা যুক্ত ছিলেন, তাদের তালিকা গোয়েন্দা সংস্থার কাছ দেওয়া হয়েছে। যাদের চাকরির বয়স ২৫ বছরের কম, তারা ওএসডি হবে। যাদের চাকরির বয়স ২৫ বছরের বেশি, তারা বাধ্যতামূলক অবসরে যাবে।'
একাদশ সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করা তৎকালীন ৩৩ ডিসিকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করার এক দিন পর এই সিদ্ধান্ত এল।
ক্ষমতাচু্যত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৪ সালের দশম ও ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-জামায়াত ও সমমনারা বর্জন করে। তবে ২০১৮ সালে তারা ভোটে এলেও আগের রাতেই সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ী হওয়ার অভিযোগ ওঠে।
সরকারের পালাবদলের প্রেক্ষাপটে গত ৯ ডিসেম্বর দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তিনটি নির্বাচনে নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে ৩০ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ডেকেছিল নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
তখন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছিলেন, 'উনারা (কর্মকর্তারা) ওনাদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেছেন। উনারা বলেছেন উনাদের তেমন কিছু করার ছিল না। "কলকাঠি" অন্য জায়গা থেকে নাড়ানো হয়েছে। এক অর্থে বলতে গেলে উনারা অসহায় ছিলেন। তবে যারা নিচের কর্মকর্তা, তারা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন। তারা মূল কথা বলেছেন আমাদের দেশ একটি 'পুলিশি রাষ্ট্র' হয়ে গিয়েছিল।'