শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

তবুও থামছে না সীমান্তহত্যা

১১ বছরে ৩৪৫ বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা করেছে বিএসএফ ভারতকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপে রাখার পরামর্শ বিশ্লেষকদের
যাযাদি রিপোর্ট
  ০৯ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
তবুও থামছে না সীমান্তহত্যা
তবুও থামছে না সীমান্তহত্যা

প্রতি বছর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্তহত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে বৈঠক হচ্ছে। এসব বৈঠকে প্রতিশ্রম্নতি দিলেও সীমান্ত হত্যা বন্ধে আন্তরিক কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না ভারত। একদিকে প্রতিশ্রম্নতি দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে, কিছুদিন পর পর সীমান্তে হত্যা চালাচ্ছে বিএসএফ। কখনো গুলিতে, আবার কখনো নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হচ্ছে এ দেশের নিরপরাধ নাগরিককে। কখনো সীমান্ত এলাকায় কাজে যাওয়া বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাদের বেশিরভাগেরই খোঁজ মিলছে না। অন্যদিকে, হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা হলেও কোনোটির বিচার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী পরিবার। ফলে, এক ধরনের আতঙ্ক ও উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের।

মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব বলছে, গত ১১ বছরে সীমান্তে বিএসএফ-এর হাতে ৩৪৫ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। ২০১৪ সালে ৩২ জন, ২০১৫ সালে ৪৬ জন, ২০১৬ সালে ৩১ জন, ২০১৭ সালে ২৪, ২০১৮ সালে ১৫, ২০১৯ সালে ৪৩, ২০২০ সালে ৪৯, ২০২১ সালে ১৮, ২০২২ সালে ২৩, ২০২৩ সালে ৩১, ২০২৪ সালে ৩০ জন নিহত হন। আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে দুই জন এবং ফেব্রম্নয়ারি মাসে একজন নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের। এ সীমান্ত বিশ্বের পঞ্চম দীর্ঘ স্থলসীমান্ত। তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ-ভারত আর যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো দেশের সীমান্তে এমন হত্যাকান্ড চালানো হয় না। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএসএফ যেভাবে সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে তা আসলে কোনো ভালো বার্তা দেয় না। তারা এটা বার বার বন্ধের কথা বলেও কথা রাখছে না। সরকারের উচিত দক্ষতার সঙ্গে এটা নিয়ে ভারতের সঙ্গে ডিল করা। তাদের ওপর আর্ন্তজার্তিক চাপ সৃষ্টি করা।

গত ফেব্রম্নয়ারিতে দিলিস্নতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর (বিজিবি) মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্বার্থে সীমান্ত হত্যা পুরোপুরি বন্ধের কথা উঠে আসে। বিজিবি বলেছে, সীমান্তের অপরাধীদের ধরা হোক। প্রচলিত আইনে শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু সীমান্ত লঙ্ঘন করছে বলেই কাউকে গুলি করে মেরে ফেলা মোটেই মানবিক নয়।

মূলত দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর বার্ষিক এই বৈঠকে সীমান্ত হত্যা আক্ষরিক অর্থে শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে জোরালো দাবি জানানো হলেও ভারতের পক্ষে বলা হয়, বিএসএফ সব সময় সেই চেষ্টা করে। কিন্তু কখনো কখনো সংগঠিত অপরাধচক্র এমন আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে যে, গুলি চালানো ছাড়া উপায় থাকে না। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভারতের এই উক্তির মধ্যে সীমান্ত হত্যা বন্ধে এক ধরনের 'দোদুল্যমানতা' রয়েছে- যা বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে কাম্য নয়।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসেবে, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ গেছে ১৩ জনের। তার মধ্যে ২২ জানুয়ারি যশোরের বেনাপোল সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবির সদস্য মোহাম্মদ রইশুদ্দীন। একই সংস্থার হিসাবে, বিএসএফের গুলিতে ও নির্যাতনে ২০২৩ সালে ২৮ জন, ২০২২ সালে ২৩ জন, ২০২১ সালে ১৭ জন, ২০২০ সালে ৪৮ জন এবং ২০১৯ সালে ৪৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, 'অবৈধ অনুপ্রবেশ' ও 'চোরাকারবারি'র অভিযোগে বাংলাদেশের নাগরিকদের গুলি করে, ধাওয়া দিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করে বিএসএফ। আসকের হিসাব অনুযায়ী সাত বছরে (২০১৮-২৪) বিএসএফ পিটিয়ে হত্যা করেছে ২৮ বাংলাদেশিকে। সেই সঙ্গে নানা কারণে সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের ধাওয়ায় প্রাণপণ ছুটতে গিয়ে চার বছরে (২০২১-২৪) প্রাণ হারিয়েছেন ছয়জন। আসকের পর্যবেক্ষণে আরও উঠে এসেছে বিগত ১১ বছরে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো থেকে ধান কাটা, গরু চরানো, মাছ মারা ও গৃহস্থালির কাজ করা অবস্থায় ৩১৯ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধরে নিয়ে যাওয়া এই নাগরিকদের ভাগ্যে কী ঘটে, তা জানা যায় না। ধরে নিয়ে যাওয়া এই নাগরিকদের কতজন ফিরে আসেন, সেটাও থেকে যায় অজানা। তবে, আসকের গত চার (২০২১-২৪) বছরের হিসাব অনুযায়ী, ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশিদের মধ্যে ফেরত এসেছেন মাত্র সাতজন। এই চার বছরে বিএসএফ বাংলাদেশ থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ১৭ নাগরিককে। যাদের ১০ জনই ফিরে আসার খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে, দেশের খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগে সব থেকে বেশি সীমান্ত এলাকা। এর মধ্যে বিএসএফ সব থেকে বেশি আগ্রাসী থাকে রংপুর বিভাগের সীমান্ত এলাকায়। আসকের হিসাব অনুযায়ী পাঁচ বছরে (২০২০-২৪) রংপুর বিভাগের সীমান্তগুলোয় বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে ৯১ জন। এরপরই আছে রাজশাহী বিভাগের সীমান্ত এলাকা। একই সময়ে রাজশাহী বিভাগের সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে ৩৫ জনকে।

সীমান্ত হত্যা নিয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন ও কর্মীদের মতো সরব ভূমিকা পালন করছে ভারতের মানবাধিকার সংগঠন ও কর্মীরা। সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারতের মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) সচিব কিরীটী রায় মাসিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলেছেন, 'এই সীমান্ত হত্যার পেছনে যে গল্প ফাঁদা হয়, তা-ও ঠিক না। তারা বলে, সীমান্ত দিয়ে গরু চোরাচালান হয়। চোরাচালানিদের হত্যা করা হয়। মনে হয় যেন সীমান্তে গরু জন্ম নেয় আর তা বাংলাদেশে পাচার করা হয়। বাস্তবে এসব গরু আনা হয় ভারতের অভ্যন্তরে দুই-আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরের হরিয়ানা ও পাঞ্জাব থেকে। গরুগুলো হাঁটিয়ে, ট্রাক-ট্রেনে করে আনা হয়। তখন কেউ দেখে না! তারা আটকায় না। কারণ, তারা ভাগ পায়। এখানে আসল কথা হলো দুর্নীতি, ভাগবাঁটোয়ারার মাধ্যমে সব করা হয়। যখন ভাগবাঁটোয়ারা মেলে না, তখন বিএসএফ হত্যা করে।'

এদিকে ভারতের পেনাল কোড কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো আইনেই নিরস্ত্র নাগরিককে গুলি করে বা নির্যাতন করে মেরে ফেলার বিধান নেই। কেউ অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার করলে তাকে গ্রেপ্তার করে বিচার করা যেতে পারে। কিন্তু ভারত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে স্বীকৃত সব আন্তর্জাতিক ও দ্বিপক্ষীয় প্রটোকল অগ্রাহ্য করে সীমান্ত হত্যাকান্ড ঘটিয়ে চলেছে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এ ধরনের দ্বিপক্ষীয় দুটি প্রটোকল হলো জয়েন্ট ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ গাইড লাইনস ফর বর্ডার অথোরিটিজ অব দ্য টু কান্ট্রিজ, ১৯৭৫ ও দ্য ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ কো-অর্ডিনেটেড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট পস্ন্যান, ২০১১।

সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ কেন্দ্র করে বিজিবি ও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে কয়েকদিন উত্তেজনা চলে। এতে যুক্ত হয় দুই দেশের স্থানীয় জনতা। এর আগে গত ৬ জানুয়ারি ভারতের মালদা জেলার সুখদেবপুর বিএসএফের ক্যাম্পের সদস্যরা সীমান্তঘেঁষে রাস্তা ও কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু করলে বাধা দেয় বিজিবি। পরে গত মঙ্গলবার আবারও কাজ শুরু করলে দ্বিতীয়বারের মতো বাধা দেওয়া হয়। এ নিয়ে সীমান্তে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের দীর্ঘ সময় পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে এমন ভূমিকায় দেখা গেছে- যা প্রশংসা কুড়িয়েছে সারাদেশে। এ ঘটনার পর কড়া অবস্থান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারও। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও তখন বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের জিরো লাইন থেকে দেড়শ' গজের মধ্যে ভারতকে কোনো কাজ করতে দেওয়া হবে না। এর মধ্যে তিন জেলার পাঁচটি সীমান্তে বিএসএফকে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে অবহিত করেন। এরপরও থামছে না সীমান্তহত্যা।

এ বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির সম্প্রতি আন্তর্জাতিক একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'বিএসএফ যেভাবে সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে তা আসলে কোনো ভালো বার্তা দেয় নাঅ এটা সুসম্পর্কের বার্তা দেয় না। তারা এটা বার বার বন্ধের কথা বলেও কথা রাখছে না। আমাদের দরকার এখন দক্ষতার সঙ্গে এটা নিয়ে ভারতের সঙ্গে ডিল করা। এটা সম্পর্ক উন্নয়নের শর্ত হিসাবে নিয়ে কাজ করা। তাদের ওপর আর্ন্তজার্তিক চাপ সৃষ্টি করা।'

মানবাধিকার কর্মী নূর খানও সম্প্রতি ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'অনেক হয়েছে। এখন আমাদের এই বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে যাওয়া উচিত। বিএসএফ বার বার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। প্রতিবেশী এই দুই দেশের মানুষের মধ্যে নানা ধরনের যোগাযোগ আছে। চলাচল আছে। তারা চোরাচালানের কথা বলে। সেটা সত্য ধরে নিলেও চোরাচালানের শাস্তি তো গুলি করে হত্যা নয়। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সীমান্ত আছে। সেখানে তো তারা এভাবে হত্যা করে না। আর ভারতের ভিতর থেকেই তো গরু আসে। সেই গরু কেন আটকানো হয় না। আসলে এই হত্যার মধ্য দিয়ে তারা বাংলাদেশকে চাপে রাখতে চায়। আতঙ্কে রাখতে চায়।'

সীমান্ত এলাকার পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সীমান্ত হত্যার ব্যাপারে অনেক পরিবারই মামলা করে না। শেষ পর্যন্ত পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। আর মামলা করলেও তো বিচারের কোনো সুযোগ নেই।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় ১৪ বছরের কিশোরী ফেলানি। তার লাশ অন্তত পাঁচ ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে ছিল। এই হত্যাকান্ডটি আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনা ও নিন্দার ছড় তোলে। ফেলানি হত্যার ১৩ বছর পর স্বর্ণা হত্যা নিয়েও তোলপাড় কম হয়নি। ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাতে মায়ের সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরায় ভাইকে দেখতে যাওয়ার সময় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ-এর গুলিতে কিশোরী স্বর্ণা দাস (১৪) নিহত হয়।

এ বছর ঢাকায় শহীদ মিনারে মানবাধিকার সংস্থা 'অধিকার' ফেলানি হত্যার ১৪ বছরকে সামনে রেখে ৭ জানুয়ারি সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে গণজমায়েত আয়োজন করে। ফেলানির বাবা নুর ইসলাম ও মা জাহানারা বেগমও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ফেলানির মা জাহানারা বেগম বলেন, 'আমার সন্তান হত্যার বিচার হলে হয়তো সীমান্ত হত্যা বন্ধ হতো। আর ফেলানির বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, 'আমি ১৪ বছর ধরে আমার সন্তানের জন্য কাঁদছি। কোনো বিচার পাইনি। বিচারের জন্য ভারতেও গিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।'

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় আনতে ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বার বার প্রতিশ্রম্নতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু বন্ধ হয়নি সীমান্ত হত্যা। সীমান্তে মারণাস্ত্র (লেথাল উইপন) বন্ধ করারও প্রতিশ্রম্নতি আছে। কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না। সীমান্তে যত বাংলাদেশি নাগরিক বিএএসএফের হাতে নিহত হয় তার ৯০ ভাগই গুলিতে নিহত হয়।

এ বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) মো. শহীদুল হক আন্তর্জাতিক একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আসলে সীমান্তে ভারত যা করছে তা নতুন নয়। গত ১৫ বছরে বিএসএফ সীমান্ত হত্যা চালিয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। তখন সরকার কিছু বলেনি। বাংলাদেশের সীমান্তে এখন একটা অস্থির পরিস্থিতি দেখাতে চায় ভারত। এটা নিয়ে তার রাজনীতি আছে।'

অন্যদিকে, বিএসএফ-এর হাতে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভারতীয়, আর ২০ শতাংশ বাংলাদেশি বলে জানান কলকাতার মানবাধিকার সংগঠন 'বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ' বা মাসুম-এর সম্পাদক কিরীটী রায়। তিনি বলেন, 'যাদের রক্ষা করার জন্য বিএসএফ, তারাও আক্রান্ত। তাই সীমান্তে হত্যা-নির্যাতন বন্ধে অনতিবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়া উচিত।'

কিরীটী রায় বলেন, 'বাংলাদেশে পট পরিবর্তনের পর ভারতের সাধারণ মানসিকতায় বাংলাদেশ নিয়ে যে পরিবর্তন দেখা গেছে, কিংবা ওপর থেকে দেখা গেছে সেটার প্রভাব সীমান্তে পড়ছে না তা বলা যায় ন। আগের চেয়ে বরং নিপীড়নের ঘটনা বেড়েছে বলা যায়।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে