সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

তারা জাল নোট বেচাকেনা করতেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে

চক্রের ২ সদস্য গ্রেপ্তার
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
তারা জাল নোট বেচাকেনা করতেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
জাল টাকা তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার বিকালে রাজধানীর খিলগাঁও থানার দক্ষিণ গোড়ান এলাকায় অভিযান চালিয়ে দু'জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ -সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাল নোট বেচাকেনা চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হচ্ছেন মো. আল আমিন ও মো. কাশেম আলী। গ্রেপ্তাররা জাল নোট বেচাকেনার কৌশল পাল্টে পাঁচশ' ও এক হাজার টাকার বদলে জাল নোট বাজারে ছাড়ত।

গত সোমবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে খিলগাঁও থানাধীন দক্ষিণ গোড়ান এলাকায় অভিযান চালিয়ে খিলগাঁও থানা পুলিশ জাল টাকা তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ দু'জনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, তাদের কাছে ১ লাখ ৮২ হাজার টাকার জাল নোট ও জাল নোট তৈরিতে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, দু'টি মোবাইল ফোন ও একটি প্রিন্টার পাওয়া গেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান জানান, দক্ষিণ গোড়ানের শান্তিপুর নামক স্থানের একটি বাসার ছাদে কয়েকজন লোক মিলে জাল নোট তৈরি করছিল। সেখানে অভিযান চালালে জাল নোট তৈরিকারকরা পালানোর চেষ্টা করেন। কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। এ সময় ধরা পড়েন দু'জন।

গ্রেপ্তাররা জানান, তারা ফেসবুকে ভুয়া আইডির মাধ্যমে গ্রম্নপ খুলে জাল নোট বা জাল টাকা বেচাকেনা করতেন। এমনকি জাল টাকা বিক্রির জন্য প্রচারণা চালাতেন। ব্যবসা করতে ইচ্ছুক কিছু যুবক ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটস্‌অ্যাপ ও টেলিগ্রাম অ্যাপসে জাল টাকা বেচাকেনার বিষয়ে যোগাযোগ করতেন। এরপর দর কষাকষি করে জাল টাকা কিনত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দাদের চোখকে ফাঁকি দিতে তারা জাল টাকাকে প্রোডাক্ট, মাল বা প্যাকেট বলে ডাকত।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, চক্রের সাপস্নাই চেইন কয়েক ধাপে কাজ করত। তৈরিকারকদের কাছ থেকে জাল নোট কিনে তা পাইকারি বা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিত একটি গ্রম্নপ। প্রথম দিকে পাইকারি ক্রেতারা সরাসরি 'প্রোডাক্ট' গ্রহণ করলেও বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে জাল টাকা ক্রেতার কাছে পৌঁছে যেত।

ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের ডিসি আরও জানান, গ্রেপ্তার দু'জন একটি পেশাদার জাল টাকা প্রস্তুতকারী ও বেচাকেনার চক্রের সক্রিয় সদস্য। এই চক্রটি ইতোমধ্যেই কৌশল পাল্টে ফেলেছে। দেশের প্রায় সব মানুষই জানেন, সাধারণত পাঁচশ' ও এক হাজার টাকার নোট জাল হয়। তাই ব্যাংক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও এই দুই প্রকারের নোট খুব ভালোভাবে পরখ করে। কিন্তু একশ' ও দুইশ' টাকার নোট সাধারণত জাল হয় না বলে দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারণা। এই ধারণাকে পুঁজি করেই চক্রটি ছোট নোটগুলোকে টার্গেট করেছে। এসব নোট প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বেচাকেনা করার কাজে ব্যবহার করা যায়। আর ছোট নোট মানুষ তেমন একটা পরখ করে নেন না। চক্রটি জাল নোট লেনদেনের সময় যাতে হাতেনাতে ধরা না পড়ে, এজন্য তারা স্বল্প আয়ের মানুষদের টার্গেট করতেন। কারণ একশ' ও দুইশ' টাকার নোটের ভাঙতি বা লেনদেন হরহামেশাই করা সম্ভব। ঈদের পর তারা ভারত থেকে উন্নতমানের সিকিউরিটি পেপার এনে জাল টাকা তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিল। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় একটি মামলা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে