কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা শহরের কলেজপাড়া এলাকার মৃত আলাউদ্দিন মালিথার ছেলে পিয়ারুল ইসলাম। আয়ের উৎস বলতে কেবল নিজের দুই বিঘা জমির চাষাবাদ আর অল্প আয়ের একটি বেসরকারি চাকরি। এ দিয়েই চলে তার সংসারের খরচ। দেশের স্বার্থে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গাছ লাগানোর ইচ্ছা পিয়ারুল ইসলামের। কোনো সরকারি বা বেসরকারি সহযোগিতায় নয়, তার ইচ্ছা নিজের টাকায় মৃতু্যর আগ পর্যন্ত গাছ লাগাবেন। স্ত্রী ও ছেলের মতো তার লাগানো তালগাছ প্রতিনিয়ত পরিচর্চা করে থাকেন। প্রায় ৫ হাজার তালের বীজ সংগ্রহ করে নিজেই রোপণ করেছেন। সম্প্রতি তালগাছগুলো কে বা কারা কেটে ফেলছে। তাই সরকার ও স্থানীয়দের কাছে গাছগুলো রক্ষার দাবি করেন তিনিসহ এলাকাবাসী।
গাছ লাগানোর প্রতি পিয়ারুল ইসলামের প্রবল আগ্রহ। ২০১৮ সাল থেকে মানুষের বাড়ি ঘুরে তালের বীজ সংগ্রহ করেন। এছাড়া নিজের টাকায় বীজ কিনে বিভিন্ন গ্রামের রাস্তার পাশে, ক্যানেলের ধারে এমনকি রেল লাইনের ধারে রোপণ করেন। মূলত দেশে বজ্রপাত বেড়ে গেছে। এ থেকে মানুষকে বাঁচাতে তিনি জেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে তাল গাছের বীজ রোপণ করেন। তার এ কাজে এলাকাবাসীরও সহযোগিতা পান। ভেড়ামারা-রায়টা সড়কের দুইটি রাস্তায় প্রায় ১ হাজার তালের বীজ রোপণ করেছেন।
কৃষক পিয়ারুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে প্রায় ৫ হাজার তালের বীজ সংগ্রহ করে নিজেই রোপণ করেছেন। তার ইচ্ছা যতদিন বেঁচে আছেন, দেশের স্বার্থে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বৃক্ষ রোপণ করে যাবেন। তবে একটাই দুঃখ, লাগানো তাল গাছগুলো কে বা কারা কেটে ফেলছে। বিভিন্ন জায়গায় লাগানো গাছগুলো রক্ষা করা তার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। তাই যারা গাছগুলো কেটে ফেলে তাদের কাছে না কাটার অনুরোধ করেন তিনি।
ভেড়ামারা উপজেলার কৃষি অফিসার শায়খুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের বজ্র নিরোধক যে যন্ত্র ছিল সেটি উঠিয়ে নেওয়ায় বজ্রপাত বেড়ে গেছে। বজ্রপাত থেকে বাঁচতে তালগাছের বিশেষ প্রয়োজন। তাই বেশি করে তাল বীজ রোপণ করতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। পিয়ারুল ইসলাম নিজ উদ্যোগে তাল গাছের বীজ রোপণ করছেন। সেজন্য সবাইকে তার লাগানো তাল গাছগুলো রক্ষা করার দায়িত্ব নিতে হবে।'