মাদারীপুর সদর উপজেলায় খোয়াজপুর সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তির টাকা না পাওয়া ক্ষোভ বিরাজ করছে। উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার হবে বলে কলেজ কর্মকর্তা পরিচয়ে এক প্রতারক চক্র ফাঁদে ফেলে তাদের বিকাশ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থেকে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কে সীমিত জ্ঞান ও তাদের সরলতার সুযোগে বিকাশ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পিন নম্বর নিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে অনেক টাকা। এর মধ্যে মাদারীপুর সদর উপজেলা খোয়াজপুর সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর প্রতারিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সিথি রানি নামের এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রোববার মাদারীপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১২ নভেম্বর অজ্ঞাত এক ব্যক্তি কলেজের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে বলেন, 'উপবৃত্তির টাকা থেকে আপনার নাম বাদ পড়ে গেছে। আপনাকে উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হবে। আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সঠিক নয়। তাই একটি বিকাশ নম্বর দেন। সেখানে আপনাকে উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হবে।' কিছুক্ষণ পরেই অজ্ঞাত একটি নম্বর থেকে তার মোবাইলে এসএমএস এসেছে ১০ হাজার ৮০০ টাকার। এক পর্যায় তিনি মোবাইলের পিন নম্বর দিতে বলেন। পিন নম্বর দিলে মোবাইলে থাকা ১৮ হাজার টাকা তার অ্যাকাউন্টে চলে যায়। তারপর তাকে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ইসমাইল নামে একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, ১৫ নভেম্বর সকালেই কলেজের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাকে ফোন করেছিলেন। এ সময় সে সরল বিশ্বাসে ওই ব্যক্তির কথামতো সব তথ্য দিয়েছে। তথ্য না দিলে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে বলে তাকে ভয় দেখানো হচ্ছিল। এই ঘটনার কিছু সময়ের মধ্যেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা খোয়া যায়।
খোয়াজপুর সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ ফেরদাউসি বলেন, কয়েক দিন ধরে অনেক শিক্ষার্থী আমার কাছে এসব বিষয় নিয়ে আসছে। এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের একটি নোটিশ দিয়েছিল। আমরা শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানিয়েছিলাম। তারপরও তারা যে প্রতারণার শিকার হয়েছে এতে আমাদের কিছু করার নেই।
মাদারীপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, কোনো শিক্ষার্থী যাতে প্রতারক চক্রের ফাঁদে পা না দেয়, সে ব্যাপারে আমরা শিক্ষকদের মেসেজ দিচ্ছি। শিক্ষকরা দ্রম্নত বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেবেন।
মাদারীপুর থানার ওসি এইচ এম সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, থানায় পুলিশের কাছে এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে এখনো কেউ আসেনি। বিকাশ গ্রাহকদের পিন নম্বর সংরক্ষণের ব্যাপারে অবশ্যই সচেতন হতে হবে।