আজকের যায়যায়দিন

পাবনার সাঁথিয়ায় ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক ও সেতু নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ করায় উদ্বোধনের দিনই পিচঢালাই (কার্পেটিং) উঠে যায়।

গত রোববার উপজেলার বনগ্রাম-চিনাখড়া-ভায়া সামান্যপাড়া সড়ক ও সেতুর উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি। এলাকাবাসী নির্মিত পিচঢালাই সড়ক হাত দিয়ে তুলে ডেপুটি স্পিকারকে দেখান। ডেপুটি স্পিকার উপজেলা প্রকৌশলী ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ওপর ক্ষুব্ধ হন। এসময় ঠিকাদারকে খোঁজ করলে জানা যায় তিনি পালিয়ে গেছেন।

ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাতুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান আলী খান, ক্ষেতুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মনসুর আলম পিনচু।

জানা গেছে, স্থানীয় প্রকৌশলী অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে আরডিআরআইডিপি অ্যান্ড এসইউপিআরবি প্রকল্পের আওতায় সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রাম-চিনাখড়া-ভায়া সামান্যপাড়া সড়ক ও সেতুর কাজ পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাবনার সুজানগরের মন্ডল কনস্ট্রাকশন। ১৭০০ মিটার সড়ক ও সেতুর নির্মাণ কাজের ব্যয় বাবদ বরাদ্দ ছিল ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

আতঙ্কে স্থানীয়রা / ডিমলা ও সৈয়দপুরে হুমকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ

সড়ক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডেপুটি স্পিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঠিকাদার দেশের যেখান থেকেই আসুক কাজ বুঝে নেবে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন। শিডিউল অনুযায়ী কাজ না করলে বিল পরিশোধ না করে কাজ বুঝে নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা কালাম, সুমনসহ অনেকেই জানান, কাজ নিম্নমানের হওয়ায় পিচঢালাই সড়কের পাথর এমনিতেই উঠে যাচ্ছে। এ সড়ক দুই মাসও যাবে না। তাদের অভিযোগ সাঁথিয়া উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে এ সড়কে নিম্নমানের কাজ হয়েছে। এলাকাবাসী নতুন করে সড়ক নির্মাণের দাবি জানান।

সড়ক নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মন্ডল কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী রফিক মন্ডলের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

পিচঢালাই উঠে যাওয়ায় ক্ষেতুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মনসুর আলম পিনচু বলেন, সড়কের কাজ যে মানের হওয়ার কথা ছিল সে মানের হয়নি। বাচ্চাসহ সবাই হাত দিয়েই পিচঢালাইয়ের পাথর তুলে ফেলছে। পরবর্তী সময়ে কাজ ঠিক না করে বিল না দেওয়ার দাবি জানান।

নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে সাঁথিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ শহীদুলস্নাহ বলেন, অতিরিক্ত রোদের কারণে সড়কের পিচঢালাইকৃত পাথর উঠে যাচ্ছে।