বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

সরাইলে হাসপাতালের ১০ কোটি টাকার কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
  ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সরাইলে হাসপাতালের ১০ কোটি টাকার কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার
সরাইলে হাসপাতালের ১০ কোটি টাকার কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় ৩১ শয্যা স্বাস্থ্যকমপেস্নক্সের ১০ কোটি টাকা মূল্যের নির্মাণাধীন ভবনের কাজ ফেলে পালিয়ে যায় ঠিকাদার।

২০২২ সালের ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে মনগড়া যেনতেনভাবে ঠিকাদার কাজটি শুরু করেছিল। শুরু থেকেই খুবই ধীরগতিতে নিয়ম-অনিয়মের মধ্যেই চলছিল কাজটি। এরই মধ্যে গত ৫ আগস্টের পর থেকে একেবারেই বন্ধ রয়েছে। ওদিকে ভবন না হওয়ায় জায়গার অভাবে প্রশাসনিক ও গর্ভবতী মহিলাদের কক্ষে ফ্লোরে ও কাঠের তৈরি বেঞ্চেই দিন-রাত পার করছে ভর্তিকৃত রোগীরা। এদের মধ্যে রয়েছে ডায়রিয়ার রোগীও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, মেয়াদ শেষ হলেও এখনো বাকি ৭৫ ভাগ কাজ। চরম দুর্ভোগ আর কষ্টে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা।

হাসপাতালে ভুক্তভোগী রোগীরা জানায়, ২০২২ সালে সমগ্র বাংলাদেশের ন্যায় সরাইল হাসপাতালেরও ৬ তলা ফাউন্ডেশনের সাড়ে তিন তলাবিশিষ্ট। একটি বিশাল ভবন ও অন্যান্য কিছু স্থাপনা নির্মাণের বরাদ্দ অনুমোদন হয়। টেন্ডারে বিট করে ৩০ ভাগ লেসে কাজটি পান 'অঙ্কুর ট্রেডার্স' নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজের চুক্তিমূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে কাজ শুরু করেন তারা। ৬ তলা ফাউন্ডেশনের ভবন নির্মাণের শুরুতেই অনিয়ম আর ধীরগতি অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। ক্ষমতাসীন দলের শক্তিশালী লোক পেছনে থাকায় স্থানীয়দের কোনো ধরনের অভিযোগকেই পাত্তা দেননি ঠিকাদার। যেনতেনভাবে ইচ্ছেমতোই করছে। কাজের সময়সীমা ছিল ১৮ মাস। প্রায় ১০ মাস আগেই শেষ হয়ে গেছে কাজের সময়সীমা। এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ২৫ ভাগ।

পাশের প্রশাসনিক ভবনে সাময়িক সময়ের জন্য সব শাখা স্থানান্তরিত করলে এখন দীর্ঘদিনের কারণে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। সিট বসানো হয়েছে সিজারের পর গর্ভবতী মহিলাদের অবস্থানের কক্ষেও।

সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্যকমপেস্নক্সের তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ নোমান মিয়া কাজে দীর্ঘসূত্রতার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গত তিন মাস ধরে কাজ বন্ধ। ঠিকাদারও আসছেন না। ওদিকে জায়গার অভাবে রোগীরা প্রচুর কষ্ট করছেন। আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে স্বাস্থ্যসেবাটা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েছি। ভবনটির কাজ শেষ হয়ে গেলে এখানকার রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা শতভাগ নিশ্চিত হতো। ঠিকাদার মো. জুয়েল বলেন, এসি সাহেব বন্ধ রাখতে বলেছেন, সরকার পরিবর্তনের ফলে শুধু সরাইল নয়, সারা বাংলাদেশেই ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এটা খুব বড় প্রকল্প। এটা আমার লসের কাজ। তারপরও করতে চাচ্ছি। আমার লোকজন বসা। চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে জানিয়েছি একটা বিহিত ব্যবস্থা করার জন্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে