কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর হাজিটারী ফেলানী হত্যার সীমান্তের ৯৪৭/৩ ও ৯৪৭/৪ এস আন্তর্জাতিক পিলারের পাশে ভারতীয় খেতাবেরকুটি সীমান্তের টহলরত চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফের আগ্রাসন কমেনি।
এ সীমান্তে বিএসএফ কারনে অকারনে বাংলাদেশীকে ধরে নিয়ে যাওয়া, নির্যাতনে পঙ্গু করে দেওয়াসহ রোদে কাপড় ও ধান শুকাতে দেওয়া বাংলাদেশীদের উপর জুলুম নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে দিন দুপুরে সীমান্তে কাপড় ও ধান শুকাতে যাওয়া বাংলাদেশীদের উপর নির্যাতন চালায় বিএসএফ। বাংলাদেশী ৫-৭ পরিবারের রোদে শুকাতে দেওয়া ধৌত কাপড় বিএসএফ সীমান্ত থেকে তুলে নিয়ে খড়কুটো জ্বালানো ছাইয়ের সঙ্গে মিশে দিয়েছে। বৃদ্ধা ছকিনা বেগমের সেদ্ধ করা দেড়মণ ধান মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে বিএসএফ। সরেজমিনে গেলে সীমান্তের বাংলাদেশীরা বিএসএফর আগ্রাসী কর্মকান্ডের কথাগুলো জানিয়েছেন।
হাজীটারী সীমান্তে বসোবাসকারী বৃদ্ধ বাংলাদেশী মোহাম্ম্দ আলী (৭০) জানান, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর হাজিটারী ফেলানী হত্যার সীমান্তের ৯৪৭/৩ ও ৯৪৭/৪ এস পিলারের পাশে বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী হত্যার পরও এখানে বিএসএফের আগ্রাসন কমেনি। ২০১৬ সালের দিকে এই সীমান্ত থেকে বিএসএফ বাংলাদেশী রফিকুল ইসলাম (৩৫) ধরে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে তাকে পঙ্গু করেছে। রফিকুল ইসলাম পাশ্ববর্তী জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি এখন পঙ্গুত্ব বরণ করে কোনোমতে বেঁচে আছেন।
এছাড়াও পাশ্ববর্তী বড়াইয়েরতল গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস (৪০), আব্দুল কাদের (৪২), রফিকুল ইষরাম (৩৮) বিএসএফের নির্যাতনে অনেকটা পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করেছেন। এরা রোগেশোকে কোনোমতে বেঁচে আছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা বাংলাদেশী ছকিনা বেগম জানান, 'আমরা সীমান্ত বাংলাদেশীরা বিএসএফের নির্যাতনে আতঙ্কে থাকছি। এখনো এক মাস হয়নি। আমি বাড়ির পাশে সীমান্ত এলাকায় দেড়মণ সেদ্ধ ধান শুকাতে দেই। দিনেদুপুর বিএসএফ এসে আমার সেদ্ধ ধানগুলো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়।'
স্থানীয় বাংলাদেশী খায়রুল আলম (৪২) জানান, 'ফেলানী হত্যার ৩ বছরের মাথায় এ সীমান্ত থেকে বাংলাদেশী এক যুবতি নারীকে তার সন্তানসহ ধরে নিয়ে যায়।'