হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বহুল আলোচিত কলেজছাত্রী তন্নী রায়কে ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা মামলার আসামি রানু রায়কে প্রায় ৫ বছর আগে মৃতু্যদন্ডের আদেশ দেন আদালত। কিন্তু এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করার কারণে এখনো সেই রায় কার্যকর হয়নি। এর ফলে হতাশ নিহতের পরিবার।
জানা যা, ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি দ্রম্নত বিচার ট্রাইবু্যনাল সিলেটের বিচারক রেজাউল করিমের আদালত আসামি রানু রায়কে মৃতু্যদন্ডাদেশ দেন। এরপরই আসামি পক্ষ ওই সালেরই ১৪ জানুয়ারী মহামান্য হাইকোর্টে আপিল মামলা নং-১৯৮/২০১৯ইং দায়ের করে। একই বছর ২২ জানুয়ারী আপিল আবেদনটি শুনানী শেষে আমলে নেন মহামান্য হাইকোর্ট। যা এখনো সেভাবেই পড়ে আছে। ফলে কার্যকর হচ্ছে না আলোচিত কলেজছাত্রী তন্নী রায় হত্যাকান্ডের দ্রম্নত বিচার ট্রাইবু্যনাল আদালতের মৃতু্যদন্ডাদেশ।
উলেস্নখ্য, ২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর কলেজছাত্রী তন্নী রায় নবীগঞ্জ শহরতলীর শেরপুর রোডের ইউকে আইসিটি ইন্সটিটিউট কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেড় হয়ে আর ফেরেনি। তার নিখোঁজের ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন বাবা বিমল রায়। এর ৩ দিনের মাথায় তন্নীর বস্তাবন্দি লাশ শহরতলীর বরাক নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। সন্দেহের তীর যায় তন্নীর প্রেমিক রানু রায়ের দিকে। এ ঘটনায় রানুর পিতা কানু রায়সহ পরিবারের সবাই আত্মগোপণে ছিলেন। পুলিশ ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বস্তা ও ডিসের তার জব্দ করে। একই রকম বস্তা ও ডিসের তার তন্নীর লাশের সঙ্গে পাওয়া যায়। এরইমধ্যে হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের কাছে খবর আসে রানু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাদুঘর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ হত্যাকান্ডের ২০ দিনের মাথায় রানু রায়কে গ্রেপ্তার করে। পরে হবিগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত সুলতানার আদালতে ঘাতক রানু ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে জানায়, তন্নীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর রানু অসুস্থতার ভান করে কল দিয়ে তন্নীকে বাসায় নিয়ে আসে। সেখানে দু'জনের বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে তন্নীকে গলা চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে মরদেহ বস্তাবন্দী করে স্থানীয় বরাক নদীতে ফেলে দেয়।
তন্নী রায়ের বাবা বিমল রায় জানান, প্রায় ৫ বছর হলেও মামলার কোন অগ্রগতি না হওয়ায় তন্নীর পরিবারে হতাশা দেখা দিয়েছে। তিনি মৃতু্যদন্ড দ্রম্নত কার্যকর করে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।