বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২
এক পরিবারের নামে শতাধিক মামলা

মহেশপুরে ভূমিহীনদের জমি দখলের অভিযোগ বিরুদ্ধে

মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
মহেশপুরে ভূমিহীনদের জমি দখলের অভিযোগ বিরুদ্ধে

প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক অপশক্তিকে কাজে লাগিয়ে ভূমিহীনদের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটাচদপুর) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি সালাহ উদ্দিন মিয়াজীর বিরুদ্ধে। জোর পূর্বক দখল করা প্রায় একশ' বিঘার উপরে সরকারি জমিতে মাছ, মাল্টা ও কমলা লেবুর বিশাল প্রজেষ্টা করেছেন তিনি। সোমবার জমি ফেরত চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তৈলটুপি গ্রামে ভুক্তভোগী ভূমিহীনরা।

জানা গেছে, মহেশপুর উপজেলার স্বরুপপুর ইউনিয়নের তৈলটুপি মৌজার উখরির বিলের আর এস ৫০২ ও ৫০৩ নং দাগের সরকারি জমি ১৯৯৬ সালে ২৮ ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে বন্দোবস্তো দলিলে রেজিস্ট্রি করে দেন সরকার। দলিল প্রতি ৫০ শতক করে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। দলিলে ৫০ শতক উলেস্নখ থাকলেও ভূমিহীনরা ৩-৪ বিঘা করে অতিরিক্ত দখলে নিয়ে সরকারি জমি চাষ করতেন। ২০১০ সালে ওই জমিতে নজর দেন মেজর জেনারেল সালাহ উদ্দিন মিয়াজী। দখল নিতে শুরু করেন নানান অপকৌশল। কিছু ভূমিহীন পরিবারকে ভালো চাকরি ও মোটা অংকের টাকার লোভ দেখিয়ে লীজ দিতে রাজি করান। কিন্তু যারা লীজ দিতে অস্বকৃতি জানান তাদের জমি জোর পূর্বক দখল করেন। এদিকে অধিকাংশ লীজের মেয়াদ শেষ হলেও ভূমিহীনরা এখন পর্যন্ত তাদের জমি দখল ফিরে পাননি। এমনকি ওই জমি থেকে লীজের কোন টাকা ভূমিহীনদের দেননি সালাহ উদ্দিন মিয়াজী। জমির দখল ফিরে পেতে ঢাকা জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন ভূমিহীনরা। কিন্তু তাতেও কোন প্রতিকার পায়নি তারা।

এদিকে উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নে জমি দখলে সেই একই অভিনয়ের নায়ক সালাহ উদ্দিন মিয়াজী। ৩২ বিঘা জমি দখল নিতে এক পরিবারের নামে দিয়েছেন ১'শ বেশি মামলা। মামলা থেকে বাদ পড়েনি পরিবারের নারীরাও। ওই পরিবারে সদস্যদের নামে চাদাবাজি, লুটপাট, চুরিসহ দুর্নীতি দমন কমিশনেও মামলা দিয়েছেন তিনি।

কৈখালী গ্রামের ইউনুচ আলী বলেন, 'সালাহ উদ্দিন মিয়াজী আমাদের জমি দখল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সেই ২০১০ সাল থেকে। ওই জমি দখল নিতে আমাদের উপর চালিয়ে অমানুবিক জুলুম নির্যাতন। একশ'র বেশি মামলা দিয়েছেন আমাদের নামে। মিথ্যা মামলায় রাতের পর রাত বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতাকে ব্যবহার তিনি এমন ন্যাক্কারজনক কাজ করেছেন। জমি দখলের বাজে নেশা রয়েছে তার। তবে সালাহ উদ্দীন মিয়াজীর করা সকল মামলাতে আমরা জিতে গেছি। এখন মাত্র একটি মামলা চলমান রয়েছে। ওই মামলাতেও আমরা জয়লাভ করব।'

তৈলটুপি গ্রামের ভূমিহীন লান্টু বলেন, 'সরকারের দেওয়া ৫০ শতক জমিতে আমি আফা কাটি। কিছুদিন পর দেখি সালাহ উদ্দিন মিয়াজী ওই জমি দখল করে নিচ্ছেন। আমি দখল ঠেকাতে গেলে মেরে মাটি চাঁপা দিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। সেই থেকে আমার জমি বেদখল রয়েছে।' ভূমিহীন ইকরামুল বলেন, 'ওই জমি লীজ দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। কিন্তু আমার লীজের মেয়াদ পাঁচ বছর আগে শেষ হলেও এখন পর্যন্ত জমি দখল ফেরত পাইনি। সালাহ উদ্দিন মিয়াজীর্ যাব-পুলিশের ভয় দেখিয়ে জমি দখলে রেখেছে।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইয়াসমিন মনিরা বলেন, ভূমিহীনরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এব্যাপারে দ্রম্নত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে