মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

প্রতি কেজি টমেটো ৫ টাকা তবুও মিলছে না ক্রেতা

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
প্রতি কেজি টমেটো ৫ টাকা তবুও মিলছে না ক্রেতা
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় পাইকারি বাজারে বিক্রির জন্য আনা টমেটো নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় চাষিরা -যাযাদি

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজি টমেটোর বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা। পাইকারি বাজারগুলোতে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা দরে। তবুও মিলছে না ক্রেতা। এ অবস্থায় উঠছে না উৎপাদন খরচ। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের।

সরেজমিনে উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের বোমাংহাট পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে সড়কপথে ও নদীপথে বিক্রির উদ্দেশ্যে টমেটো নিয়ে বাজারে এসেছেন চাষিরা। প্রতি কেজি টমেটো পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা দরে। তবুও পর্যাপ্ত ক্রেতা না থাকায় টমেটো বিক্রি হচ্ছে না। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১৮০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। প্রতি বছর ডিসেম্বরে টমেটো চারা রোপণ শুরু হয়। আর বিক্রি হয় ফেব্রম্নয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। বর্তমানে বিভিন্ন জাতের টমেটো বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবে টমেটোর ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা।

পুরানগড় ইউনিয়নের ফকিরখীল গ্রামের টমেটো চাষি দেলোয়ার হোসেন বলেন, 'এনজিও সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে ৪০ শতক জমিতে টমেটো চাষ করেছি। কিন্তু বাজারে এনে দেখি টমেটোর ক্রেতা নেই। প্রতি কেজি টমেটো উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১৫ টাকা। অপরদিকে টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫ টাকা।

এতে আমার অনেক বেশি লোকসান হবে।'

পশ্চিম বাজালিয়া গ্রাম থেকে বোমাংহাট পাইকারি বাজারে টমেটো বিক্রি করতে আসা কৃষক আবুল হাসেম বলেন, 'নৌকাযোগে নদীপথে ১২০ কেজি টমেটো বিক্রয়ের উদ্দেশে বাজারে নিয়ে এসেছি। কিন্তু বাজারে পাইকারি ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। যার ফলে সব টমেটো প্রতি কেজি ৫ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। টমেটোর বাজারে এতটাই ধস নেমেছে যেন দেখার কেউ নেই।'

বাজালিয়া ইউনিয়নের মাহালিয়া বিলের টমেটো চাষি জহির আহমদ বলেন, বাজারে টমেটোর ন্যায্যমূল্য না পেলে ফেরত নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। কারন এ এলাকায় কোনো হিমাগার নেই। একটি হিমাগার থাকলে একদিকে কৃষকরা লাভবান হতে পারত। অন্যদিকে বাজারে সারাবছর টমেটো পাওয়া যেত। বর্তমানে টমেটোর বাজারে ধস নেমেছে। বাজারের অবস্থা এ রকম থাকলে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে।

সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু টমেটোর ভালো দাম না পাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ এলাকার কৃষকদের জন্য একটি হিমাগার স্থাপন করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। টমেটো সংরক্ষণের জন্য হিমাগারের ব্যবস্থা থাকলে কৃষকরা লোকসান অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পারতেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে