চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ৪ যানবাহনের সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে। এছাড়া টাঙ্গাইলে ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক, কুড়িগ্রামে ট্রলির নিচে চাপা পড়ে আরেক চালক ও জয়পুরহাটে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে অটোরিকশা চাপায় শিশুর মৃতু্য হয়েছে। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, মিরসরাইয়ে ভোররাতে ৪টি যানবাহনের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছে। এতে প্রায় ২০ জন আহত হয়। আহতের মধ্যে ১০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সড়কে প্রায় দুই ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

বৃহস্পতিবার ভোররাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের মিঠাছরা বাজারের ইউর্টাণ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ঝালকাটি জেলার কাঠালিয়া থানার মুশিরাবাদ গ্রামের লতিফ হাওলাদারের ছেলে সুমন হাওলাদার (৩৫)। অন্যজন হলেন জেলার পশ্চিম মাদারবাড়ি থানার পুরা মসজিদ গ্রামের শাহা আলমের ছেলে সোহাগ (৩৫)। আহতরা হলেন, শাহরিয়া (১৮), শারমিলা (১৬), রোলামা (১২), উম্মে ছালমা (১৬), আলমিয়া (১৪), মারিয়া (১৫), কামরুজ্জমান (৪২), আবদুর রশিদ (৫০), আয়েশা আক্তার (৪২), মিজান উদ্দিন (৬৩) আহত বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ভোররাতে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা নীরব পরিবহন একটি বাস, আরেকটি শ্যামলী পরিবহণকে চাপা দেয়। এতে নীরব পরিবহণের বাসটি মহাসড়কের আইল্যান্ড পার হয়ে চট্টগ্রামমুখী হয়ে গেলে দ্রম্নতগামী একটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। অপরদিকে শ্যামলী পরিবহণ বাসকেও ঢাকাগামী একটি কাভার্ডভ্যান ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাস্থলে ২ জন নিহত হয়। আহত হয় বাসের প্রায় ২০ জন যাত্রী। খবর পেয়ে জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল জানান, টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে গফুর মিয়া (৫০) নামে এক অটোরিকশা চালক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার গোলাবাড়ী ব্রিজের কাছে এ ঘটনা ঘটে। নিহত গফুর মিয়া উপজেলার মাঝিরা এলাকার সুইকা জর্দারের ছেলে। তিনি অটোরিকশা চালাতেন। আহতদের পরিচয় জানা যায়নি। তাদের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপেস্নক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গফুর মিয়া অটোরিকশায় যাত্রী নিয়ে মধুপর থেকে ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিলেন। পথে গোলাবাড়ী ব্রিজের কাছে পৌঁছলে মধুপুরগামী একটি ট্রাক অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাক ও অটোরিকশাটি পাশের খাদে পড়ে পাঁচজন আহত হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপেস্নক্সে নিয়ে গেলে অটোরিকশা চালককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামের ধরলা ব্রিজের পূর্ব পাড়ে একটি ট্রলি নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রলির নিচে চাপা পড়ে আবুল হোসেন (৫৫) নামের এক চালকের মৃতু্য হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ব্রিজের পূর্ব পাড়ের যাত্রাপুর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ট্রলি চালক কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ভাংড়ির বাজার এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, নিহত চালক ট্রলিতে করে আলু নিয়ে যাত্রাপুর যাচ্ছিলেন। এমন সময় ব্রিজের পূর্ব পাড়ে বাঁক ঘুরতে গিয়ে ট্রলিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালকের উপরেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত চালককে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানান, জয়পুরহাটে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার নীচে চাপা পড়ে ইসরা নামে ২ বছর বয়সী এক শিশুর মৃতু্য হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় জয়পুরহাট-ধামইরহাট সড়কের খনজনপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ইসরা জয়পুরহাট পৌর এলাকার খনজনপুর মহলস্নার কাবিউর হোসেনের মেয়ে।

জয়পুরহাট সদর থানার ওসি নুর আলম সিদ্দিক জানান, নারী পুলিশ সদস্য নাজমা মরিয়ম তার শিশু কন্যা ইসরাকে নিয়ে খনজনপুর নেসকো কার্যালয়ের সামনে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় দ্রম্নতগামী আলু বোঝাই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ধাক্কা দিলে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পরে শিশু ইসরা গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।