শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

চুয়াডাঙ্গার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

কক্সবাজার প্রতিনিধি
  ১১ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
চুয়াডাঙ্গার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
চুয়াডাঙ্গার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ক্যাশিয়ার পদে থাকা কক্সবাজারের রামুর বাসিন্দা উজ্জল বড়ুয়ার বিরুদ্ধে। তিনি দীর্ঘদিন কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল, আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার বিপস্নব বড়ুয়াসহ আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের দোসর হলেও 'মুখোশ পড়ে' বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলায় কর্মরত থেকে সেখানেও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন বলে দাপ্তরিক সূত্রে জানা গেছে।

দাপ্তরিক একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ক্যাশিয়ার পদে দায়িত্বরত থাকাকালে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল টাকা কামিয়েছেন উজ্জ্বল বড়ুয়া। প্রভাব বিস্তার করে নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে অধস্তন; সবাইকে তটস্থ রাখতেন। কথায় কথায় সবাইকে সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল, আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার বিপস্নব বড়ুয়াসহ আওয়ামী লীগের কিছু নেতার ভয় দেখাতেন। ফলে বাধ্য তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদন করেছিলেন কক্সবাজারের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদনে উলেস্নখ করা হয়, 'উজ্জল বড়ুয়া জনস্বাস্থ্যে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন দুর্নীতি ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। কক্সবাজার জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কক্সবাজার জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এসব পদের বলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ব্যবহার করেই অনিয়ম-দুর্নীতিতে লিপ্ত ছিলেন তিনি। ফলে একজন অফিস সহকারী হয়ে বিপুল সম্পদের মালিক বনে যান।'

লিখিত আবেদনে আরও বলা হয়, কক্সবাজার জেলায় কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারের ইট, বালি ও সিমেন্ট সাপস্নায়ার হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। অঘোষিতভাবে নিজের লোক দিয়ে ভাগিয়ে নিতেন ঠিকাদারী প্রকল্প। একইসঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহৃত মালামাল ল্যাবরেটরী টেস্টে পাঠালে সরকারি হিসাবের চাইতে অধিক টাকা দাবি করতেন উজ্জল বড়ুয়া। এভাবে ঠিকাদারদের জিম্মি করে বিপুল টাকা কামিয়েছেন তিনি।

তার পদোন্নতিতে সুপারিশ করেছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন। বিপস্নব বড়ুয়া ও হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি অফিস সহকারী থেকে ক্যাশিয়ার পদ ভাগিয়ে নেন।

উজ্জল বড়ুয়া ২০১৭ সালে চাকরিতে যোগদানের আগে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করলেও বর্তমানে বিলাসবহুল দ্বিতল বাড়ির মালিক। এছাড়া তিনটি ট্রাক, একটি সিএনজি, দুইটি দোকানসহ নামে-বেনামে বিপুল অর্থ বিত্ত গড়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

দুর্নীতির বহু অভিযোগ ও আওয়ামী দোসর হয়েও এখনো চুয়াডাঙ্গায় ক্যাশিয়ার পদে বহালতবিয়তে রয়েছেন অভিযুক্ত এই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত উজ্জল বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা। কক্সবাজারের কতিপয় কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে