নারী দিবস শুধু একদিনের একটি অনুষ্ঠান নয়, এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, নারীরা সমাজের সকল ক্ষেত্রে- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিল্প এবং বিজ্ঞানে অবিচ্ছেদ্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এ বছর, নারী দিবসের থিমের সাথে মিল রেখে আমরা বলতে পারি, নারী শক্তি, নারী সম্মান, নারী অধিকার। নারী দিবস শুধু নারীদের অর্জন উদযাপন করার সময় নয়, বরং সেই বাধাগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার দিনও, যা এখনও নারীদের পথ রোধ করে আছে। সমাজে নারীর অবস্থান উন্নত করার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি, সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং নারীদের ক্ষমতায়ন করাই এই দিবসের মূল লক্ষ্য। নারী দিবস শুধু নারীদের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত করার প্রয়োজনীয়তার কথা মনে করিয়ে দেয় না, বরং এটি নারী শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের একটি চমৎকার সুযোগও বটে। নারীরা নিজেদের জীবনে অনেক বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাচ্ছেন, তারা শুধু সংসারের নয়, বরং পুরো সমাজের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকাও পালন করছেন।
আজকের দিনটি নারীর সক্ষমতা, সংগ্রাম, আত্মবিশ্বাস এবং তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অসীম শক্তির প্রকাশ। নারীরা যে শুধু শিক্ষায়, স্বাস্থ্যসেবায়, রাজনীতিতে বা শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন তা নয়, তারা দুঃখ, সংগ্রাম এবং অবহেলা সত্ত্বেও সমাজে নিজেদের স্বাধিকারের স্থান অর্জন করে নিচ্ছেন।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক নারী দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, এখনও বিশ্বজুড়ে অনেক নারী মানবাধিকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা ও কাজের সুযোগের অভাব বোধ করছেন। তাই, আজকের দিনটি আমাদের প্রেরণা দেয়, আরও একযোগে কাজ করতে, নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং তাদের জন্য একটি সমতামূলক সমাজ গড়ে তুলতে। তাই আসুন, আমরা সকলেই নারীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, তাদের সংগ্রাম ও সফলতা উদযাপন করি এবং তাদের জন্য আরও ভালো এবং সমতাপূর্ণ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে কাজ করি।
নারীরা নিজেদের পরিশ্রম, মেধা এবং ক্ষমতা দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, তারা যে কোনো ক্ষেত্রে যে কোনো পরিস্থিতিতে সফল হতে পারেন। যেমন শিক্ষা, ব্যবসা, বিজ্ঞান, রাজনীতি, অথবা পরিবার সকল ক্ষেত্রে। সমাজের নানা ক্ষেত্রে নারীদের অবদানকে আমরা এখন আরো প্রশংসা করি, কিন্তু একে এগিয়ে নিতে এবং সমতা প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের আরও অনেক বেশি কাজ করতে হবে। 'আমি নারী, আমি পারি' এই মন্ত্রকে ধারণ করে, প্রতিটি নারী তার নিজের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যেতে পারে এবং বিশ্বের সামনে তার শক্তি এবং যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে। শুভদাশ গুপ্তের 'সংগ্রামী মন' কবিতার মতো আমারও বলতে ইচ্ছে করে, আমিই সেই মেয়ে/বাসে ট্রেনে রাস্তায় আপনি যাকে রোজ দেখেন/যার শাড়ি, কপালের টিপ, কানের দুল আর পায়ের গোড়ালি/আপনি রোজ দেখেন/আর/ আরও অনেক কিছু দেখতে পাবার স্বপ্ন দেখেন/স্বপ্নে যাকে ইচ্ছেমতন দেখেন/আমি সেই মেয়ে।