কিশোরগঞ্জের হাওড়বেষ্টিত অষ্টগ্রাম উপজেলার তিন লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসায় একমাত্র ভরসাস্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স। চিকিৎসকসহ জনবল সংকটে ভেঙে পড়েছে এই হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা। এদিকে, হাসপাতালের পরিবেশ নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। চিকিৎসকের বদলে স্টাফ নার্স দিয়ে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। ফলে চিকিৎসাসেবা পেতে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদের।
জানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে এই হাসপাতালটি ৩১ শয্যার ছিল। ২০১০ সালে ৩১ শষ্যা থেকে ৫০ শয্যায় হাসপাতালটিকে উন্নীত করা হয়। কিন্ত গত ১২ বছরেও এই হাসপাতালটিতে তেমন কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে,, এই হাসপাতালে চিকিৎসকসহ মোট ১৪৫টি পদে জনবল থাকার কথা থাকলেও এর বিপরীতে রয়েছে মাত্র ৭৭টি। বর্তমানে ডাক্তার, নার্স, ওয়াডবয়, টেকনোলজিস্টের একাধিক পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।
এই হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (এ্যানেসথেশিয়া), গাইনি, অর্থো, শিশু, চক্ষু, চর্ম, যৌন, ইএনটি, কার্ডিও ছাড়াও জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি) দীর্ঘদিন ধরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সংযুক্তিতে রয়েছেন। এ ছাড়াও পরিসংখানবিদ, কম্পিউটার অপারেটর, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট দুইজনের জায়গায় একজন থাকলেও তারাও দীর্ঘদিন ধরে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সংযুক্তিতে রয়েছেন। হাসপাতালে নিরাপত্তা প্রহরী দুইজনের মধ্যে একজন, তারাও সংযুক্তিতে রয়েছেন ভৈবর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে। এ ছাড়ও সংকট রয়েছে পরিছন্নতাকর্মী, মালিসহ বিভিন্ন পদে থাকা জনবলের। দীর্ঘদিন ধরে পরিছন্নতাকর্মী না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগীদের পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতার কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে এবং সরকারি চিকিৎসাসেবা পেতে রোগীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ওমর খসরুর সঙ্গে বেশ কয়েক দিন যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. সাইফুল ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান, অষ্টগ্রামের হাসপাতালের যারা অন্য জায়গায় সংযুক্তিতে ছিলেন, তাদের সংযুক্তি বাতিল করে অষ্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে সংযুক্তিতে থাকা জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মহিলা) বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমাদের হাতে নেই, তার সংযুক্তির বিষয়টি উচ্চপর্যায় থেকে বাতিলের সিদ্ধান্ত লাগবে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু সরকারি চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স, সেখানে দায়িত্বটা তাদেরই নিতে হবে। জনগণকে আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দিতে হবে।