সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুই জেলায় ছিনতাই মামলায় সাতজনের মৃতু্যদন্ড

যাযাদি ডেস্ক
  ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
দুই জেলায় ছিনতাই মামলায় সাতজনের মৃতু্যদন্ড

সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করে দুই চালককে হত্যা মামলায় সাতজনের মৃতু্যদন্ড দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে কুমিলস্নার দাউদকান্দিতে ৪ জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে তিনজন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট আদালতে তাদের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিলস্না জানান, জেলার দাউদকান্দিতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক ইকতার হোসেনকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার অপরাধে চারজনকে মৃতু্যদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার কুমিলস্নার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায় দেন। নিহত ইকতার হোসেন দাউদকান্দি উপজেলার কালাইরকান্দি গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে।

মৃতু্যদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেলার দাউদকান্দি উপজেলার কালাইরকান্দি গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর (৩০), জুরানপুর গ্রামের সুমন (২২), দেবীদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ গ্রামের ইমরান (১৮) ও একই গ্রামের রুবেল (২৩)।

আদালত ও মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দুপুরে ইকতার হোসেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাত পর্যন্ত বাড়ি ফেরেননি। পরদিন দাউদকান্দি থানা পুলিশের মাধ্যমে তার পরিবারের লোকজন জানতে পারেন দাউদকান্দির পুটিয়া বেকিনগর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর সিএনজি অটোরিকশা ছিনতাইকারী ২ জনকে আটক করে স্থানীয় জনগণ গণধোলাই দিয়েছে। ওই ছিনতাইকারীরা যাত্রীবেশে সিএনজি অটোরিকশায় উঠে কিছুদূর গিয়ে প্রস্রাবের কথা বলে সিএনজিটি থামিয়ে ভিকটিম ইকতারকে এলোপাথাড়িভাবে কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে আহত করে এবং পানিতে চুবিয়ে তাকে হত্যার পর কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে মরদেহ গুম করে রাখে। এদিন পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারসহ ইকতার হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আক্তার হোসেন বাদী হয়ে ওই ৪ জনকে আসামি করে দাউদকান্দি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ৪ জনের বিরুদ্ধে একই বছরের ২৩ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে।

রাষ্ট্র্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আদালত এ মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন এবং আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের সবাইকে মৃতু্যদন্ড ও ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ডে দন্ডিত করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ আদনান ও অ্যাডভোকেট ফেরদৌস আক্তার বলেন, রায়ের কপি হাতে পেলে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করবে।

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জানান, জেলার বাঞ্ছারামপুরে অটোরিকশা ছিনতাইকালে চালক মো. শরীফুল ইসলাম হত্যা মামলায় তিন আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শারমীন নিগার এই আদেশ দেন। এই মামলায় অপর দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম তিনজনের ফাঁসির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রায় ঘোষণার সময় আদালতে সব আসামি উপস্থিত ছিলেন।

মৃতু্যদন্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন- জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার জয়কালীপুরের মতিন মিয়ার ছেলে মো. কবির হোসেন (২২), একই এলাকার শাহ আলম শেখের ছেলে সজিব মিয়া ওরফে সজিব শেখ (২৫) ও লিটন মিয়ার ছেলে মো. মনির হোসেন (২৫)। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- আবদুল আওয়াল ও রুবেল।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৫ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা এরশাদ মিয়ার ছেলে অটোরিকশা চালক মো. শরীফুল ইসলামকে হত্যা করে তার অটোরিকশাটি ছিনতাই করে নিয়ে যায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা। এ ঘটনায় নিহতের বাবা এরশাদ মিয়া অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করে এবং পরবর্তীতে তারা দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

সাক্ষ্য-প্রমাণে তিন আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তিন আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃতু্যদন্ডাদেশ কার্যকর করার আদেশ এবং অপর দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে