রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকৃত আসামিকে খুঁজে বের করার নির্দেশ

বিনা অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত সেই ফরহাদ খালাস

যাযাদি ডেস্ক
  ১৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
ফরহাদ

মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া পঞ্চগড়ের ফরহাদকে খালাস দিয়েছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম বৃহস্পতিবার এই রায় দেন।

খালাসের রায়ের পর ফরহাদ বলেন, কোনো অপরাধ না করেও চারটি বছর তিনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। আদালতের রায়ে তিনি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। আদালতের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পেয়েছেন তিনি।

ফরহাদের আইনজীবী ফয়সাল আহমেদ বলেন, পঞ্চগড়ের ফরহাদ পেশায় মাটিকাটা শ্রমিক। তার বিরুদ্ধে কখনো কোনো মামলা-মোকদ্দমা ছিল না। ২০২১ সালে হঠাৎ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তখন ফরহাদকে বলা হয়েছিল, ঢাকার শাহজাহানপুর থানার মাদক মামলায় তার নামে সাজার পরোয়ানা আছে। ১৪ দিন জেল খাটার পর ফরহাদ জামিনে মুক্তি পান। পরে তিনি সাজার রায় চ্যালেঞ্জ করেন। আজ তাকে মামলা থেকে খালাস দিয়ে রায় দিলেন আদালত।

আইনজীবী ফয়সাল আহমেদ আরও বলেন, এই মামলার প্রকৃত আসামিকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

ফরহাদ বলেন, যে ব্যক্তি তার নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে তাকে বিপদে ফেলেছেন, যার কারণে তিনি ভোগান্তির শিকার হয়েছেন, তাকে খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।

মামলার নথিপত্র, পুলিশ ও আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ রাজধানীর শাহজাহানপুর থেকে ৩০ গ্রাম গাঁজাসহ গ্রেপ্তার হন এক যুবক। তিনি পুলিশের কাছে নিজের নাম বলেছিলেন ফরহাদ (২৭)। বাবার নাম জয়নাল হক। বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার প্রধানপাড়া গ্রাম। পরদিন তাকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপর তিনি আর আদালতে হাজির হননি।

মামলা দায়েরের দুই বছর পর ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রম্নয়ারি আসামিকে ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আসামি পলাতক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

পরোয়ানা পেয়ে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে পঞ্চগড় থেকে ফরহাদ নামের যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখন এই যুবক পুলিশের কাছে বলেছিলেন, তিনি সেই ফরহাদ নন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি তার নামে হওয়া সাজার রায় চ্যালেঞ্জ করে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন।

আপিলকারী ফরহাদের দাবির সত্যতা যাচাইয়ে আদালত প্রথম গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির ছবি ও স্বাক্ষরসংবলিত নিবন্ধন খাতা হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। কারা কর্তৃপক্ষ তা আদালতে জমা দেন। এছাড়া প্রথম গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির স্বাক্ষর ও আপিলকারীর স্বাক্ষর এক কি না, তা যাচাইয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন আদালত। সিআইডির যাচাইয়ে দুজনের স্বাক্ষরের মিল পাওয়া যায়নি। আপিলকারী ফরহাদের আপিল আবেদনের ওপর বৃহস্পতিবার রায় হলো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে