শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

দেশের মানুষ এই সরকারকে উৎখাত করতে চায়

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ মে ২০২৪, ০০:০০
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে বুধবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -যাযাদি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শুধু অতি ডান আর অতি বাম নয়, সব পন্থার, সারাদেশের মানুষ এই সরকারকে উৎখাত করতে চায়।

বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঐতিহাসিক মে দিবস উপলক্ষে বিএনপির অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এ শ্রমিক সমাবেশ ও সমাবেশের পর শোভাযাত্রার আয়োজন করে। তীব্র তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে দুপুর থেকে ঢাকার আশপাশের শিল্পাঞ্চলগুলো থেকে হাজার হাজার শ্রমিক মাথায় লাল ফিতা বেঁধে লাল এবং দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে মিছিলসহ এই সমাবেশে যোগ দেয়। কাকরাইল নাইটেঙ্গল রেস্তোরাঁর মোড় হ পৃষ্ঠা ১৫ কলাম ৪

থেকে ফকিরেরপুল মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ সড়কে শ্রমিকদের জনাকীর্ণ উপস্থিতি ছিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলছেন, কি এমন ঘটল যে, বাংলাদেশে অতি বাম-অতি ডান একসাথে। সমস্যাটা ওই জায়গাতে আপনারা বুঝতে পারেন না কি ঘটেছে? অতি বাম অতি ডান শুধু নয়, মধ্যপন্থি শুধু নয়, আজকে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ যেকোনোভাবে হোক তারা মনে করছে এই সরকার না সরলে তাদের নূ্যনতম যে অধিকার সেই অধিকার ফিরে আসবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, মে দিবসে দেশের সকল রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন এবং শ্রমিকদের কাছে আহ্বান, এখন আর চুপ করে বসে থাকলে চলবে না। জেগে উঠতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অধিকারকে ফিরে আনার জন্য আন্দোলন ও সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে আনতে হবে। এই হোক মে দিবসে অঙ্গীকার।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, অনেক ভাই গুম ও খুন হয়েছেন। মিথ্যা মামলায় জর্জরিত। এখনো খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা। এ দেশের প্রশাসন, গণমাধ্যমসহ সবকিছুকে কুক্ষিগত করে একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জোর পাঁয়তারা চলছে। কৌশলটা ভিন্ন। সংসদে বিল পাস করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায় না। তারা গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে রেখে দিয়ে, গণতন্ত্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে, জনগণকে দমন করে তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছে।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ১২ দফা দাবি সংবলিত ঘোষণাপত্র পাঠ করেন শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন। সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহশ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আশ্রয় খুঁজছেন আ'লীগ নেতারা : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি নয় আওয়ামী লীগের নেতারা দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন। সরকারের পতনের ভয়ে বিদেশে আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, বিদেশে পরিবারের সদস্যদের পাঠিয়ে দিচ্ছেন তারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বাড্ডায় তীব্র তাপপ্রবাহে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ করেন রুহুল কবির রিজভী। এ সময় তিনি বলেন, তপ্ত তাপপ্রবাহে সাধারণ মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করলেও কষ্ট লাঘবে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের লোকেরা ব্যাংক লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করছে, বিএনপির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করছে। সরকারের চুরি, মহাদুর্নীতি, লুটপাটের কারণে দেশের করুণ অবস্থা।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে মতো উপজেলা নির্বাচন বর্জন করেছে। যেখানে নির্বাচন হবে সেখানেই ভোটারদের নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান রিজভী।

সস্ত্রীক সৌদি গেলেন মির্জা ফখরুল

এদিকে পবিত্র ওমরাহ পালন করতে সৌদি আরব গেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সঙ্গে স্ত্রী রাহাত আরা বেগমও রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া ৩টায় বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে মদিনার উদ্দেশে রওনা হন তিনি।

জানা গেছে, মদিনায় গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) রওজা মোবারক জিয়ারত করবেন এবং মসজিদে নববিতে নামাজ আদায় করবেন। এরপর মদিনা থেকে মক্কায় এসে পবিত্র ওমরাহ পালনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করবেন। কাবা শরিফ তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়া সায়ি করবেন, মসজিদুল হারামে নামাজ আদায় করবেন। আগামী ৮ মে বিএনপি মহাসচিব দেশে ফিরবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে