শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
প্রশ্নফাঁস কান্ড

জাহাঙ্গীর গ্রামের মানুষের জন্য কিছুই করেননি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
  ১২ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
জাহাঙ্গীর গ্রামের মানুষের জন্য কিছুই করেননি
মো. জাহাঙ্গীর আলম

প্রশ্নপত্র ফাঁস কান্ডে গ্রেপ্তার হয়েছেন সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের পূর্বচন্দিয়া গ্রামে। তার গ্রামের মানুষ জানিয়েছেন, শুনেছি, ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন তিনি (জাহাঙ্গীর)। সেখানেই ছেলেমেয়ে নিয়ে থাকেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তার গ্রেপ্তার হওয়ার খবর শুনে আমরা লজ্জায় পড়েছি। গ্রামে বাবার ভাগের যে সম্পত্তি তিনি পেয়েছিলেন, তা এক বছর আগেই বিক্রি করে দিয়েছেন। তিনি গ্রামের মানুষের জন্য কিছুই করেননি বলে জানান এলাকাবাসী।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জাহাঙ্গীর আলমের গ্রামের বাড়িতে নীরবতা। জাহাঙ্গীরের পৈতৃক বাড়িটি জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়ে আছে। বাবা ছবির উদ্দিন মন্ডল বেসরকারি চাকরি করতেন খুলনায়। সেখানে থেকেই তিনি অবসরে যান। কয়েক বছর আগে জাহাঙ্গীর আলমের বাবা-মা মারা যান। জাহাঙ্গীর আলমরা চার ভাই ও দুই বোন। বাড়িতে এখন তেমন কেউ থাকেন না।

1

গ্রামবাসী জানান, 'জাহাঙ্গীর আলমের ডাক নাম ফুয়াদ। স্থানীয়রা তাকে ফুয়াদ নামেই বেশি চেনেন। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট জাহাঙ্গীর। বড় ভাই ফারুক মন্ডল সরকারি চাকরি করতেন। তিনি মারা গেছেন। অপর ভাই সাইফুল ইসলাম শিবলি সোনালী ব্যাংকে চাকরি করতেন। অবসরের পর তিনি এখন গাইবান্ধা শহরে জায়গা কিনে সেখানেই বাড়ি করে থাকছেন। অপর ভাই মোহাম্মদ পটু মন্ডলও মারা গেছেন। জীবিতকালে তিনি গ্রামে থাকতেন। জাহাঙ্গীর আলমের দুই বোন মালা এবং মুক্তা স্বামীর বাড়িতে থাকেন।

ছোটবেলা থেকে মেধাবী ছাত্র ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। কঞ্চিপাড়া এম এ ইউ একাডেমি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ভালো রেজাল্ট করে গাইবান্ধা সরকারি কলেজে ভর্তি হন তিনি। সেখানে থেকে এইচএসসি, অনার্স এবং মাস্টার্স শেষ করেন তিনি। এরপর ঢাকায় চলে যান। গ্রামে এলেই তিনি সবাইকে ডাকতেন। হালাল উপার্জনের পাশাপাশি নামাজ পড়তে বলতেন। সেই মানুষটাই যে এত বড় অপরাধের সঙ্গে জড়িত সেটা আমরা কল্পনাও করতে পারছি না।'

জাহাঙ্গীর আলমের গ্রামের বাড়িতে কাজ করেন লিয়াকত আলী। তিনি বলেন, 'গ্রামের বাড়িতে বাবার কাছ থেকে ভিটেমাটির যা ভাগ পেয়েছিলেন, এক বছর আগেই তা দুই কোটি টাকায় বিক্রি করে গেছেন জাহাঙ্গীর আলম। শুনেছি ঢাকায় তিনি ফ্ল্যাট কিনেছেন। সেখানেই ছেলেমেয়ে নিয়ে থাকেন। প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় তার গ্রেপ্তার হওয়ার খবর শুনে আমরা লজ্জায় পড়েছি।'

কঞ্চিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহেল রানা সালু বলেন, জাহাঙ্গীর আলম খুবই ভদ্র প্রকৃতির ছিলেন। তিনি গ্রামের বাড়িতে কিছুই করেননি। তিনি গ্রামে নিজের ভাগের সবকিছু বিক্রি করেছেন। তিনি উত্তরাঞ্চলের মানুষ হলেও গ্রামের মানুষের জন্য কিছুই করেননি। একটা চাকরির সুপারিশ পর্যন্ত করেননি। শুনেছি, অন্য এলাকার অনেককে তিনি চাকরি নিয়ে দিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে