বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় নিরঙ্কুশ করার ফলাফল কখনো ভালো কিছু বয়ে আনে না। যাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করার আলোচনা চলছে, তারাই তো নিজেরাই নিজেদের নিষিদ্ধ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। একটা বিবৃতিতে দেওয়ারও লোক নেই, স্স্নোগান দেওয়ার লোকও নেই।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপস্নব ও সংহতি দিবসের প্রেক্ষাপটে আজকের বাংলাদেশ' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। স্বাধীনতা ফোরাম সভার আয়োজন করে।
গয়েশ্বর বলেন, শেখ হাসিনা এতদিন আইন মানেনি, এখন আইনকে ভয় পাচ্ছে। ভয় না পেলে দেশ ছেড়ে পালাত না; তাহলে কারাগারে থাকত। আবার তাকে পালাতে
দিবে কেন-এটাই তো প্রশ্ন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এত অপরাধ করে পালিয়ে গেল, তাদের কে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করল? এ ব্যাপারে জুলাই বিপস্নবে যেসব ছাত্র-জনতা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের মতামত জানতে ইচ্ছা করছে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জিয়াউর রহমান সব নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। বাক্শালী আওয়ামী লীগকেও রাজনীতি করার সুযোগ দেন। জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের সেকেন্ড নেতা। প্রথম নেতা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।
জুলাই বিপস্নবের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র-জনতাকে 'মাথার মুকুট' অভিহিত করে গয়েশ্বর রায় বলেন, বিভিন্ন ইসু্যতে তারা আমাদের মতামত চান; আমাদের আসামির কাঠগোড়ায় দাঁড় করান। তারা নানা ইসু্যতে আমাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করার কথাও বলে থাকেন।
ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, 'দেশ গঠন করার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যার যেটুকু করা উচিত, সেটুকু করলে দেশের মানুষ খুশি হবে। এই যে বলছেন, 'আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ করেন, এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান সুস্পষ্ট করুন'। আমার প্রশ্ন বিএনপি কি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়?
স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুলস্নাহ'র সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
কারও কার্যালয়ে বা বাড়িঘরে আগুন দেওয়া বিএনপি সমর্থন করে না : রিজভী
কারও কার্যালয়ে বা বাড়িঘরে আগুন দেওয়া বিএনপি সমর্থন করে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, 'সম্প্রতি ঢাকা ও খুলনায় একটি রাজনৈতিক দলে আগুন দেওয়া এবং ভাঙচুরের ঘটনা দেখতে পেলাম। আমরা এর নিন্দা জানাচ্ছি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি সবসময় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে।
সোমবার সকালে ফরিদপুরের নগরকান্দা উলজেলার তালমা ইউনিয়নের রসুলপুর বাজারের বিধবা আসমার বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। নগরকান্দায় বিএনপির নামধারী কথিত নেতা সালাহউদ্দিন কবির বিধবা আসমার বাড়ি ভাঙচুর ও দখল করে নিয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নজরে আসে। দ্রম্নত তিনি দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে বিধবা আসমার বাড়িতে গিয়ে সরেজমিন খোঁজ-খবর নেওয়ার এবং বিধবাকে সহযোগিতার নির্দেশ প্রদান করেন এবং দখলকারী দলের নেতা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী, 'আমরা বিএনপি পরিবার'-এর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী উক্ত স্থান সরেজমিন দেখতে যান এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিএনপি নামধারী কথিত ওই নেতার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি। এ ছাড়া তারেক রহমানের পক্ষ থেকে বিধিবাকে আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন 'আমরা বিএনপি পরিবার'-এর সদস্যসচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন ও জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুর রহমান তুষার প্রমুখ।