যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সতের দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর ছাড়পত্র পেয়েছেন। তিনি এখন তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় অবস্থান করছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, শুক্রবার রাত তিনটায় (লন্ডনের

সময় রাত ৯টা) দ্য লন্ডন ক্লিনিক থেকে তিনি সরাসরি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ওঠেন। আপাতত বাসায় চলবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা। প্রয়োজন হলে ফলোআপের জন্য যাবেন হাসপাতালে। তবে স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণে তার লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, 'ম্যাডাম লন্ডনের সময় রাত ৯টা হাসপাতালে থেকে তারেক রহমানের বাসায় যান। তার শারিরীক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বিবেচনায় লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি। লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা লিভার সার্জারি এলাউ করেননি।'

তিনি বলেন, 'ম্যাডামের হার্টের সমস্যার সমাধান হয়েছে। এখন মূল সমস্যা কিডনিতে। এভার কেয়ার হাসপাতালে যে চিকিৎসা ছিল তা লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা প্রথমে সাপোর্ট করেননি। তারপর নতুনভাবে কিডনির চিকিৎসা শুরু হয়। কয়েকদিন আগে ক্রিয়েটিনিন মাত্রা (কিডনির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে) বর্ডার লাইন ক্রস করে। এতে অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে। এরপর আরও নতুন কিছু চিকিৎসার ফলে এখন অনেকটা রিকোভারি হয়েছে।'

কবে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া? জবাবে এই চিকিৎসক জানান, বলা যায় মূল চিকিৎসা শেষ। এখন ফলোআপ করতে হবে। কবে দেশে ফিরবেন এটা ম্যডামের ওপর নির্ভর করছে।

এর আগে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক জানান, খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। খালেদা জিয়াকে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। লন্ডন ক্লিনিকেই সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এখানে বিশ্বখ্যাত চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিচ্ছেন। তারা বাংলাদেশি চিকিৎসকদের প্রশংসা করেছেন।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন লন্ডনে সাংবাদিকদের জানান, ছুটি পেলেও খালেদা জিয়া সার্বক্ষণিক প্রফেসর জন প্যাট্টিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রস, এই দুইজনের সার্বিক তত্ত্ব্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকবেন এবং মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরাও থাকবেন। অর্থাৎ ইউকের যে নিয়ম, সেই নিয়ম মেনেই তার চিকিৎসা চলবে।

গত ৭ জানুয়ারি খালেদা জিয়া কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেসে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন। এই হাসপাতালটির লিভার বিশেষজ্ঞ জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসাধীন চলছে।