ব্রিটিশ-ইরানি নারী এলি (৪৪) যখন সম্প্রতি তার মাকে ফোন করতে চাইলেন তেহরানে, তার আশঙ্কা ছিল মায়ের খবর জানা যাবে না। কিন্তু যা ঘটল, তা ছিল আরও ভীতিকর — ফোন ধরল এক নারীকণ্ঠের রোবট।
“আলো? আলো?” — কণ্ঠটি বলল। এরপর ভাঙা ইংরেজিতে প্রশ্ন করল:
এলি হলেন এমন ৯ জন প্রবাসী ইরানির একজন, যারা ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে সম্প্রতি ইরানে ফোন করে এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। তাদের ভাষ্যমতে, গত এক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলের ইরানে চালানো বিমান হামলার পর থেকেই এই ধরনের ‘রোবট ভয়েস’ প্রতিস্থাপিত হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব প্রবাসীরা জানিয়েছেন, তারা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে চান কারণ তাদের পরিবার এখনও ইরানে অবস্থান করছে এবং তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে।
এপি এই ভয়েস রেকর্ডিংগুলো বিশ্লেষণের জন্য পাঁচজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে শেয়ার করে। তাদের মতে, এটি হতে পারে স্বল্পক্ষমতার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (AI) রোবট, চ্যাটবট অথবা পূর্বে রেকর্ডকৃত অডিও যেটি বিদেশি কলগুলোর সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে।
এখনো নিশ্চিতভাবে কেউ বলতে পারছে না কারা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে চারজন মনে করেন, এটি ইরান সরকার নিজেই করছে, সম্ভবত নিরাপত্তার কারণে। আরেকজন বিশেষজ্ঞের ধারণা, এটি ইসরায়েলি সাইবার অপারেশনের অংশও হতে পারে।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় তেহরানের দক্ষিণাঞ্চলের একটি তেল স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যার ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক মাধ্যমে। ১৫ জুনের ওই হামলার পর থেকেই ইরানে ইন্টারনেট ও ফোন সংযোগে ব্যাঘাত ঘটতে শুরু করে।
এই সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা শুধু প্রযুক্তিগত সমস্যা নয়, বরং মানসিক ভীতিরও উৎস হয়ে উঠেছে। অনেকে তাদের প্রিয়জনদের খবর জানার চেষ্টা করে এমন "রোবটিক প্রতিরোধে" হতাশ ও শঙ্কিত।
"আমি জানি না আমার মা কেমন আছে," বলেন এলি। "কিন্তু এখন আমি জানি, কেউ চাইছে না আমি তা জানি।"