ভোলায় বাস শ্রমিকদের সঙ্গে ফের সিএনজি চালকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ আগুন দেওয়া হয়েছে তিনটি সিএনজিতে। বুধবার বেলা ১১টায় ভোলা বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস র্টামিনালে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, র?্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিকে, ভোলার চরফ্যাশন সড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ ও বাস শ্রমিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জেলার সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাস মালিক ও শ্রমিকরা। বুধবার সকাল থেকে জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস মালিক সমিতি বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়।
বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বাচ্চু মোলস্না বলেন, 'ভোলার চরফ্যাশন সড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভোলা জেলার অভ্যন্তরের সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।'
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শহরের কেন্দ্রীয় বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনালে বাসশ্রমিক ও অটোরিকশার চালকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
বুধবার বেলা ১১টায় একই স্থানে দু'পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় তিনটি সিএনজিতে আগুন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার সরকার।
এ ঘটনার জেরে মূলত জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস মালিক সমিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়। এর ফলে ভোলা থেকে চরফ্যাশন, তজুমদ্দিন ও ইলিশা রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বুধবার সকাল থেকে ভোলার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ রেখে বাস মালিক ও শ্রমিকরা রাস্তায় অবস্থান নেন। তখন থেকে অন্য যানবাহন চলাচল করলেও বাস ও অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। অনেকেই বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
সকালে বাসশ্রমিক ও অটোরিকশার চালকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে কিছু অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ করে বাস শ্রমিকরা। এতে করে পুরো বাসস্ট্যান্ড এলাকা ফের রণক্ষেত্র পরিণত হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভোলায় টার্মিনালের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাস শ্রমিক এবং অটোরিকশার চালকদের মধ্যে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় অন্তত পাঁচটি অটোরিকশা এবং একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
শ্রমিকরা জানান, অটোরিকশার চলাচল ও তাদের স্ট্যান্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বাস মালিকদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর জেরে সন্ধ্যা থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় অটোরিকশা ও বাস পোড়ানো হয়। এ ছাড়া অন্তত ২০টি অটোরিকশা ও দুটি বাস ভাঙচুর করা হয়।
ভোলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শরীফুল হক বলেন, 'রাতে কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। পরে সকালে ফের সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। সংঘর্ষের এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'