সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১৮ আশ্বিন ১৪৩০
walton
রামপাল নিয়ে পরিবেশবাদীরা

সরকার কারও কথাই আমলে নিচ্ছে না

যাযাদি রিপোটর্
  ২৮ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

সরকার বেপরোয়াভাবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিমার্ণ করছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নিমার্ণ হলে সুন্দরবন একদিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সবের্শষ জাতিসংঘের মানবাধিকার ও পরিবেশবিষয়ক বিশেষ র‌্যাপোটিয়ার জন নক্সও বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘বিশ্বের সবর্বৃহৎ শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবনের পাশে বাংলাদেশকে অবশ্যই শিল্পায়ন বন্ধ করতে হবে।’

সোমবার বিকেলে ‘সুন্দরবন রক্ষায় অবিলম্বে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বেপরোয়া শিল্প বন্ধের দাবিতে’ ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে আলোচকরা এ কথা বলেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার ও পরিবেশবিষয়ক বিশেষ র‌্যাপোটিয়ার জন নক্সের বিবৃতির বিষয়ে যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোটার্সর্ ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকারকমীর্ সুলতানা কামাল জন নক্সের বরাত দিয়ে বলেন, ‘সুন্দরবনের ওপর শিল্পায়নের ক্রমাগত হুমকি সারা বিশ্বের পরিবেশের প্রতি হুমকিরই প্রতীকী রূপ।’

সুলতানা কামাল বলেন, বাংলাদেশের আদালত, জাতিসংঘের বিজ্ঞান, শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান এবং ইউনেসকোর বিশ্ব-ঐতিহ্য কমিটি, প্রকৃতি সংরক্ষণে আন্তজাির্তক ইউনিয়নের (আইইউসিএন) আপত্তি সত্তে¡ও বাংলাদেশ সুন্দরবন এলাকায় ৩২০টি শিল্প প্রকল্প স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে। এর মধ্যে বৃহদাকার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রও রয়েছে। আদালত অবমাননা করে সেখানে শিল্প-কারখানা হচ্ছে।

সুলতানা কামাল বলেন, জন নক্স তার বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বিশ্বের বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবন সংরক্ষণে সবার স্বাথর্ জড়িত। সুন্দরবন সবার আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক। আমরা কি মানবাধিকার ও পরিবেশের প্রতি সম্মানজনক উন্নয়ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করব, নাকি এমন শিল্প স্থাপনাকে গ্রহণ করব যা পরিবেশের ক্ষতি করে।’

লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘সরকার সবসময় বলে আসছে আমরা আবেগে কথা বলি, যুক্তি ও বিজ্ঞান নেই। অথচ ১০ মাস আগে সরকারের অতি উচ্চপযাের্য়র আমলা আবুল কালাম আজাদের কাছে ১৩টি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র দিয়েছি, সেখানে বৈজ্ঞানিকভাবে দেখানো হয়েছে রামপাল হলে সুন্দরবনের কী ক্ষতি হবে। এরপর সরকার এ বিষয়ে একটি কথাও বলেনি।’

আবুল মকসুদ বলেন, ‘১৯৭১ সালে যদি ইয়াহিয়া বলত তোমরা বিজ্ঞান দিয়ে বোঝাও, তাহলে দেশ স্বাধীন হতো না। দেশের প্রতি মমতা-আবেগই থাকার কারণেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। দেশ স্বাধীন হয়েছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভূ-তত্ত¡বিদ বদরুল ইমাম বলেন, এলপিজি ও পেট্রোলিয়াম কারখানা হলো সারা দুনিয়াতে লাল ক্যাটাগরি বা পরিবেশের জন্য অতি বিপজ্জনক শিল্প। বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তর ‘লাল ক্যাটাগরি’ থেকে এটিকে বাদ দিয়ে সবুজ ক্যাটাগরিতে নিয়েছে। এতে বনের ভেতর এলপিজি কারখানা নিমার্ণ করা হচ্ছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নিবার্হী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পৃথিবীর বহু দেশে পরিবেশ রক্ষা করেই উন্নয়ন করেছে। উন্নয়নের নামে কিছু শিল্পপতির হাতে গোটা দেশ জিম্মি। উন্নয়নের নামে কিছু শিল্পপতির হাতে কীভাবে গোটা দেশ জিম্মি হতে পারে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির্র কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য রামপালে জায়গাটি আবিষ্কার তার। তার কাছেই আমাদের ১৩টি বৈজ্ঞানিক গবেষণা জমা দেয়া রয়েছে। তবে এ বিষয় এরপর আর তিনি কোনো কথা বলেন না।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ও শরীফ জামিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
shwapno

উপরে