পাওয়ার পেস্নতেই ৫ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপদে পড়ে চিটাগাং কিংস। এরপর আরাফাত সানি ও মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাটে কোনোরকমে একশ পার হয়। ছোট পুঁজি নিয়ে খুব একটা লড়াই করতে পারেনি কিংসের বোলাররাও। ডেভিড মালানের অপরাজিত ফিফটিতে ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে ফরচুন বরিশাল।
চট্টগ্রামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) রোববার দিনের প্রথম ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২১ রান সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম। জবাবে খেলতে নেমে ১৭,১ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে বরিশাল। এদিনের এই জয়ে ৭ ম্যাচ থেকে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে আছে বরিশাল। সমান ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে চিটাগং।
লক্ষ্য মাত্র ১২২ রানের। চলতি বিপিএলে যে হারে রান হচ্ছে, তাতে এই লক্ষ্য নিতান্তই মামুলি ব্যাপার। অল্প রান তাড়া করতে গিয়েও ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ফরচুন বরিশাল। তবে কোনো অঘটন ঘটেনি। শেষ পর্যন্ত ডেভিড মালানের ফিফটিতে সহজ জয়ই পেয়েছে তামিম ইকবালের দল। চিটাগং কিংসকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থান মজবুত করেছে বরিশাল।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রোববার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে ৮ উইকেটে ১২১ রান করে চিটাগং। ১৯ বল আর ৬ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্য টপকে যায় বরিশাল। আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৩৯ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় চিটাগং। স্বাগতিক দলের টপঅর্ডারদের মধ্যে উসমান খান ও মোহাম্মদ মিঠুন কিছু রান পেলেও উইকেটে দাঁড়াতেই পারেননি পারভেজ হোসেন ইমন (৩ বলে ১), গ্রাহাম ক্লার্ক (৪ বলে ৮), হায়দার আলী (৩ বলে ১) ও শামীম হোসেন (৬ বলে ৫)।
উসমান ১৩ বলে ১৯ ও মিঠুন ৩৪ বলে ৩৫ রান করেন। নিচের দিকে আরাফাত সানি ৩৪ বলে ২৭ রান করে দলের মান বাঁচাতে অবদান রাখেন। ১২২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় অপ্রত্যাশিত রানআউটের শিকার হন বরিশাল অধিনায়ক তামিম (১৪ বলে ৮)। তাওহিদ হৃদয় ৪ বলে ১ ও মুশফিকুর রহিম ১০ বলে ১১ রান করে ফেরেন। মাহমুদুলস্নাহর ইনিংস শেষ হয় ১১ বলে ১৬ রানে।
এদিন ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আজ দলীয় ১৪ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বরিশাল। তামিম ইকবালের সঙ্গে আজ ওপেন করতে নেমেছিলেন ইংলিশ তারকা ক্রিকেটার ডেভিড মালান। মালানের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হন তামিম। সাজঘরে ফেরার আগে বরিশালের অধিনায়ক ১৪ বলে করেন ৮ রান। তামিম রান আউট হয়ে ফেরার পরের ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন তাওহিদ হৃদয়। টাইগার এই ক্রিকেটার ৪ বলে ১ রান করে আউট হন। এরপর মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউলস্নাহও দলের হাল ধরতে পারেননি। দলীয় ৩২ রানে মুশফিক এবং ৫৩ রানে আউট হন মাহমুদউলস্নাহ।
৫৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছিল বরিসশাল। তবে একপ্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও অপরপ্রান্তে ছিলেন মালান। পঞ্চম উইকেটে মোহাম্মদ নবিকে নিয়ে ম্যাচজয়ী ৪৪ বলে ৬৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি করেন মালান। ২১ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন নবি।
আর মালান হাঁকান ফিফটি। ৪১ বলে ৫৬ রানের (৩ চার ও ২ ছক্কা) হার না মানা ইনিংস খেলেন ইংলিশ ব্যাটার। এতে ১৯ বলে আর ৬ উইকেট হাতে রেখে জয় পায় বরিশাল। ইংলিশ এই ব্যাটার মোহাম্মদ নবীকে নিয়ে দলের হাল ধরেন। চাপ সামলে স্কোরবোর্ডে রান তুলেন এ দুইজন। দুজন মিলে শেষ পর্যন্ত গড়েছিলেন ৬৯ রানের অপরাজিত জুটি। এ জুটিতেই জয়ের বন্দরে ভিড়ে বরিশাল। দলকে জেতাতে ৫৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন মালান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চিটাগাং কিংস: ২০ ওভারে ১২১/৮ (উসমান ১৯, পারভেজ ১, ক্লার্ক ৮, মিঠুন ৩৫, হায়দার ১, শামীম ৫, আলিস ০, সানি ২৭*, খালেদ ৯, শরিফুল ৫*; জাহান্দাদ ০/৩১, তানভির ২/১৪-, রিপন ৩/২৩, ফাহিম ৩/১২, রিশাদ ০/২৫, নবি ০/৬)
ফরচুন বরিশাল: ১৬.৫ ওভারে ১২২/৪ (তামিম ৮, মালান ৫৬*, হৃদয় ১, মুশফিক ১১, মাহমুদউলস্নাহ ১৬, নবি ২৬*; ফার্নান্দো ০/২২, শরিফুল ০/১৮, আলিস০/-২১, খালেদ ২/২৭, সানি১/৩৩)
ফল: ফরচুন বরিশাল ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা : ডেভিড মালান