প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে লংকা প্রিমিয়ার লিগ ছাড়া আর কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি টি২০ টুর্নামেন্ট খেলা হয়নি বাংলাদেশের তারকা পেসার তাসকিন আহমেদের। সুযোগ যে আসেনি, তা নয়। কিন্তু ফিটনেস ও ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও (বিসিবি) ছাড়পত্র পাননি তিনি। যার ফলে খেলা হয়নি আইপিএল-পিএসএলের মতো জমজমাট টুর্নামেন্টগুলো।
বেশ কয়েকবার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএলে) খেলার সুযোগ পেয়েও সেখানে যাওয়া হয়নি তাসকিনের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আইপিএল। তাতে সুযোগ পাওয়া মানে বিরাট কিছু। কিন্তু বার বার সুযোগ পেয়েও খেলতে না পারাটা হতাশার। কিন্তু বাংলাদেশের সেরা এই পেসার জানালেন, সুযোগ না পাওয়াতে মোটেও হতাশ নন তিনি।
২০২২ সালে চোটে পড়ে আইপিএল থেকে লখনউ সুপার জায়ান্টস থেকে ছিটকে যান ইংল্যান্ডের মার্ক উড। তার পরিবর্তে তখন তাসকিনকে প্রস্তাব দেয় লখনউ। কিন্তু তখন বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ চলায় তাকে মাঝপথে ছাড়তে চায়নি বিসিবি। ২০২৪ আইপিএল নিলামে নাম দিয়েও আন্তর্জাতিক ব্যস্ত সূচির কারণে নাম তুলে নেন। তারপরও তাসকিনকে দলে নেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেয় দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি। কিন্তু তাসকিনের যাওয়া হয়নি।
এবার আসন্ন পিএসএলের পেস্নয়ার্স ড্রাফটে নাম নিলামে উঠলেও তাকে কেনার ব্যাপারে কেউ আগ্রহ দেখায়নি। শুধু লিটন দাস, নাহিদ রানা আর রিশাদ হোসেন খেলবেন পাকিস্তান সুপার লিগে। তবে দল না পেলেও হতাশ নন তাসকিন। সোমবার ম্যাচ শেষে সংবাদ মাধ্যমের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, 'হতাশার কী আছে? সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, যদি নিজের দেশকে ভালোমতো সেবা দিতে পারি, যেখানেই খেলি, যদি ভালো করতে পারি, সুযোগ অনেক আসবে। এর আগে তো তিনবার আইপিএলে সুযোগ পেয়েও যেতে পারিনি। হতাশা থাকলে এত দিনে গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়ার কথা। আমি একদমই হতাশ নই।'
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের সেরা পেসার তিনি। দারুণ বোলিংয়ে বিপিএলের এবারের আসরের সফলতম পেসারও তাসকিন। স্বাভাবিকভাবে ধারণা করা হয়েছিলো পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ড্রাফটে তাকে নিয়ে থাকবে তুমুল আগ্রহ। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে কোনো দলই নেয়নি তাসকিনকে। তবে দল না পাওয়ায় সবই ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিলেন ডানহাতি এই পেসার।
দুর্বার রাজশাহীতে থাকা পাকিস্তানি কোচ এজাজ আহমেদ ও ওপেনার হারিস সোহেল তাসকিনকে নিজেদের দলে নিতে আগ্রহও দেখিয়েছিলেন। কিন্তু ড্রাফট থেকে তাকে দলে নেয়নি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। বিদেশি লিগে অংশগ্রহণ নিয়ে তাসকিন বলেছেন, 'হতাশ না। হতাশার কী আছে? সবচেয়ে বড় বিষয় আমি যেন জাতীয় দলে নিজের সেরাটা সার্ভ করতে পারি। যেখানেই খেলতে পারি, যদি ভালো করতে পারি সুযোগ অনেক আসবে।'
বিপিএলে রাজশাহীর হয়ে ২০ উইকেট পাওয়া তাসকিন এখনো পিএসএলের আশা ছাড়ছেন না, 'হয়তো ড্রাফটে নেয়নি। কোথাও রিপেস্নসমেন্টে প্রয়োজন হলে নিতেও পারে। আমার সঙ্গে সরাসরি কারও কথা হয়নি। এটা ব্যক্তিগতভাবে হয়ও না। এজেন্টের মাধ্যমে হয়।'
ড্রাফটে দল না পেলেও পরে অন্য কারো বদলি হিসেবে খেলার সুযোগ থাকছে। তবে সেই ব্যাপারে আপাতত কোন ধারণা নেই তাসকিনের,' আসলে যেহেতু ড্রাফটে (নিলামে) দল পাইনি, কারও বদলি হিসেবে প্রয়োজন পড়লে নিতেও পারে। পিএসএলের ক্ষেত্রেও একই বিষয়? ব্যক্তিগতভাবে আমার সঙ্গে কারও কথা হয়নি। আসলে এজেন্টরা এসব যোগাযোগ করে। আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি।'
এদিকে, এনামুল হক বিজয়ের পরিবর্তে দুর্বার রাজশাহীর অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন তাসকিন। আগের অধিনায়ক এনামুল হককে সরিয়ে তাসকিনকে দায়িত্ব দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। আর এই বিষয়টি নিয়ে তাসকিন বলেন, 'মালিক ও ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। বিজয় ভাইয়ের সঙ্গে তো অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে খেলছি। উনাদের সঙ্গে বিজয় ভাইয়েরও কথা হয়েছে। সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।'