দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সদ্যবিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে রিজার্ভের পতন থামানো সম্ভব হচ্ছিল না, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে তা থামানো গেছে। বরং গেল এক সপ্তাহে রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। অবশ্য এর আগের সপ্তাহেও রিজার্ভ বেড়েছিল সাড়ে ৪ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে- রোববার (৩ নভেম্বর) পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ বিলিয়ন ডলারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, তিনি ব্যাংকে যোগদানের পর রিজার্ভের পতন থামাতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। অর্থপাচার রোধ এবং রপ্তানি ও প্রবাসী রেমিট্যান্সের মাধ্যমে ডলারের সরবরাহ বাড়ানোর ফলে রিজার্ভ বাড়াতে সহায়ক হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আগের মতো ঢালাওভাবে ডলার বিক্রি করছে না, ফলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে রিজার্ভ থেকে, এতে রিজার্ভ ধীরে ধীরে বাড়ছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদও রিজার্ভ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার দেশীয় শিল্পের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার ফলে ব্যবসায়ীদের আস্থা বেড়েছে এবং দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ফলস্বরূপ রিজার্ভও বাড়ছে।
আগের সরকার পতনের সময়, জুলাইয়ে রিজার্ভ ছিল ২৬ বিলিয়ন ডলার, তবে বর্তমানে তা ২৫.৪৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ২৫.৩০ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিপিএম-৬ মানদন্ড অনুযায়ী বর্তমানে রিজার্ভ রয়েছে ১৯.৮ বিলিয়ন ডলার, যা ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কিছুটা উন্নতি।
অক্টোবর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রায় ২৪০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় সমান ছিল। ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ৪৮.৪ বিলিয়ন ডলার, তবে মহামারি কোভিড, বিশ্ববাজারে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রিজার্ভ কমতে থাকে। গত দুই অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সরকারি ঋণপত্র ও এলসি খোলার জন্য ডলার সরবরাহ করেছে, যা রিজার্ভের আরো হ্রাসের কারণ হয়েছে।