বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

লোকসানের আশঙ্কায় চাল আমদানিতে অনীহা

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
লোকসানের আশঙ্কায় চাল আমদানিতে অনীহা

আমদানি মূল্যের চেয়ে দেশের বাজারে পাইকারি ও খুচরায় মোটা চালের দাম কম হওয়ায় ভারত থেকে আমদানিতে অনীহা দেখাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

আমদানিকারকদের দাবি, যে চাল ৫৩ টাকা কেজি দরে আমদানি করা হচ্ছে, তা দেশের বাজারে ৫০ থেকে ৫২ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা।

শুল্কমুক্ত ঘোষণার পর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৯ দিনে ভারত থেকে এক হাজার ৩৪০ টন চাল আমদানি করা হয়েছে বলে জানান বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী হেমন্ত কুমার সরকার।

চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বিভিন্ন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে বিনা শুল্কে সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামী ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব চাল আমদানি করতে হবে।

তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশের বাজারে পাইকারি দামের তুলনায় ভারতের থেকে আমদানি করা চালের দাম বেশি পড়ছে। এতে লোকসানের শঙ্কায় চাল আমদানিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা।

বেনাপোল স্থলবন্দর ও কাস্টমস হাউস জানিয়েছে, ১৮ থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ৪২টি ট্রাকে ভারত থেকে মোট এক হাজার ৩৪০ টন চাল আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে সবশেষ বুধবার ৪১০ টন স্বর্ণা (মোটা) চাল আমদানি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এসব চাল বন্দর থেকে খালাস নেওয়া হয়েছে।

শার্শা উপজেলার চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অর্ক ট্রেডিং দুই হাজার টন আতপ ও তিন হাজার টন সিদ্ধ মোটা চাল আমদানির অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে ২০০ টন সিদ্ধ স্বর্ণা চাল এই প্রতিষ্ঠান আমদানি করেছে। যার প্রতি কেজি আমদানি মূল্য পড়েছে ৫১ টাকা। অন্যান্য খরচ দেড় থেকে দুই টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি চালের দাম পড়েছে ৫৩ টাকা। অথচ দেশের বাজারে এই স্বর্ণা চাল ৫০ টাকা কেজি পাইকারিতে বেচাকেনা হচ্ছে।

অর্ক ট্রেডিংয়ের মালিক মফিজুর রহমান বলেন, '৫৩ টাকা কেজি দরে মোটা চাল আমদানি করেছি। পরে দেখি, দেশের বাজারে মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজি পাইকারি ও খুচরা বেচাকেনা হচ্ছে। 'বাধ্য হয়ে কেজিতে এক টাকা লোকসান দিয়ে ৫২ টাকা দরে চাল বিক্রি করতে হয়েছে। যে কারণে ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়তো সম্ভব হবে না।'

শার্শার স্থানীয় চালের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিদ্ধ স্বর্ণা মোটা চাল ৫০ টাকা পাইকারি দামে বেচাকেনা হচ্ছে।

নাভারণ বাজারের চৌধুরী রাইস মিলের মালিক রাশেদ চৌধুরী বলেন, হাইব্রিড মোটা চাল ৪৯ টাকা ও স্বর্ণা মোটা চাল ৫১ টাকা কেজি পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে। নতুন ধানের চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। এখন থেকে চালের দাম কমতে থাকবে। তবে এবার অতিবৃষ্টির কারণে ধানের উৎপাদন কমেছে। আর এতে চাল আমদানির প্রভাব বাজারে থাকবে।

হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, আরও চালের চালান বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে। আমদানি অব্যাহত থাকলে বাজারে চালের দাম কমে আসবে।

খুচরা বাজারে খাদ্যশস্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি খাতকে এক মাসের মধ্যে পাঁচ লাখ ৮৭ হাজার টন চাল আমদানি করার অনুমতি দিয়েছে সরকার; যা ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে বাজারজাত করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে