শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত ও ঋণ দুই-ই কমেছে

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত ও ঋণ দুই-ই কমেছে

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনো অস্থিরতা কাটেনি। কয়েকটি ব্যাংকের তারল্যসংকট প্রকট হওয়ার খবরে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা বরং আরও খারাপ হয়েছে। কিছু ব্যাংক যখন গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়, তখন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে আমানত সরিয়ে নেন অনেক গ্রাহক। এ কারণে ওইসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ বিতরণ কমাতে বাধ্য হয়। ফলে তাদের আমানত ও ঋণ দুই-ই কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। গত জুলাই-সেপ্টেম্বর সময় আমানত ও ঋণের চিত্র পর্যালোচনায় এই তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত কিছুটা বেড়ে ৪৭ হাজার ৪৯১ কোটি টাকায় উঠেছিল। তবে চলতি বছরের মার্চে তা কিছুটা কমে হয় ৪৭ হাজার ৩০ কোটি টাকা। জুনে আমানত বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা। এরপর গত সেপ্টেম্বরে আবার আমানত কমে। এবারে ৬৮ কোটি টাকা কমে ৪৭ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকায় নামে।

এদিকে গত বছরের ডিসেম্বরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৩ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা, যা গত মার্চে বেড়ে দাঁড়ায় ৭৪ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা। গত জুনে ঋণ আরও বেড়ে ৭৪ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা ওঠে। তবে সেপ্টেম্বরে ঋণ ৭৭৮ কোটি টাকা কমে ৭৪ হাজার ১৪০ কোটি টাকায় নামে।

অবশ্য, পাঁচ বছর ধরেই দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধুঁকছে। বিশেষ করে বহুল আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার যখন চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মালিক বনে গিয়েছিলেন, তখন থেকেই সমস্যা প্রকট হতে থাকে। প্রতিষ্ঠান চারটি হলো পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) ও এফএএস ফাইন্যান্স। সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাটের জন্য আলোচিত হন পি কে হালদার।

পি কে হালদার যখন এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানা নেন, তখন তিনি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান আভিভা ফাইন্যান্স (সাবেক রিলায়েন্স ফাইন্যান্স) ও গেস্নাবাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আরেক আলোচিত এস আলমের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান দুটি এখনো ধুঁকছে। সে জন্য দুই প্রতিষ্ঠানেরই নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। পি কে হালদার এখন ভারতের জেলে আটক রয়েছেন। আর এস আলম গ্রম্নপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ মাথায় নিয়ে দেশছাড়া। তার মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোও এখন ধুঁকছে।

জানতে চাইলে লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়রা আজম বলেন, এখন আর্থিক খাত নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। অনেক ব্যাংক বড় সমস্যায় পড়েছে। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও ভালো অবস্থায় নেই। কারণ, অনেক ভালো বড় করপোরেট গ্রম্নপ আগাম ঘোষণা ছাড়াই টাকা সরিয়ে নিচ্ছে। সে জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া আগে থেকে পি কে হালদারের কারণে একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়ে রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে