বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলার বঙ্গবন্ধু উদ্যান : নির্মল প্রকৃতির প্রাণের আধার

মোবাশ্বির হাসান শিপন
  ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৫
ছবি-যায়যায়দিন

একদিকে সবুজ প্রকৃতির ছোঁয়া, তেঁতুলিয়া নদীর সলাৎ সালাৎ ঢেউ, বিকেলের সূর্যের বর্ণিল আলোচ্ছটা, প্রকৃতির নির্মল বাতাস মোহমুগ্ধ করে রাখে নানা বয়সী দর্শনার্থীদের অন্যদিকে উদ্যানে মনকাড়া নানা আয়োজন দেখতে দেখতে হাজার হাজার দর্শনার্থী যখন কিছুটা ক্লান্ত; তখন বঙ্গবন্ধু উদ্যানে দিনের আলো নিভে গিয়ে এক হাঁটু সন্ধ্যা নামে ঈদ বিংবা ছুটির দিয়ে এখানে তিল ধারণের ঠাঁই থাকেনা এবারের ঈদেও এর ব্যতিক্রম হয়নি

ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে তেঁতুলিয়া নদীর পাড় ঘেঁষে প্রায় একর এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দনবঙ্গবন্ধু উদ্যান এটি ভোলা- আসনের সংসদ সদস্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের গ্রামের বাড়ির পেছনের অংশে যদিও ভৌগলিকভাবে এর অবস্থানে ভোলা সদরে কিন্তু বলা চলে এটা ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন দৌলতখান উপজেলার মিলনস্থলে জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্পট পর্যটনের এক নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছে উদ্যানটি

তেঁতুলিযার মাঝ থেকে দেখে মনে হয়, কোনো রাজবাড়ির ঘাট বিকেলের মিষ্টি আলোয় বর্ণিল হয়ে ওঠে ঘাটের সিঁড়ি ধাপে ধাপে সিঁড়ি নেমে গেছে তেঁতুলিয়া নদীর নীল জল পর্যন্ত ঘাটে গেলে চোখে পড়ে চারদিকের অপরূপ, নয়নাভিরাম দৃশ্য রাস্তা থেকে পার্কে প্রবেশের বিশাল সুন্দর ফটক সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ¯্নহেধন্য তোফায়েল আহমেদের স্মৃতিময় ছবি সাঁটা নিচে সড়ক থেকে উঁচু বাঁধে উঠে গেছে সমান্তরাল সড়ক বেড়িবাঁধে উঠে, আবার সিঁড়ি নেমে গেছে নদীর জলসীমানায় তেঁতুলিয়া নদীর তীরসহ বেড়িবাঁধ পাকা ব্লক মুড়ে দেওয়া হয়েছে মাঝেমধ্যে জলচৌকির মতো রঙ করা আরসিসি ব্লক উঁচু রাখা হয়েছে বসার জন্য পার্কের পূর্ব পাশ পরিচিত কান্ট্রিসাইডনামে, আর পশ্চিম পাশের নামরিভারসাইড কান্ট্রিসাইডে নানা রকম রাইড আছে শিশুদের জন্য নৌকা, দোলনা, চরকি, নাগরদোলা পার্কে প্রবেশ করতে বা নদীতে সাঁতার কাটতে টাকা লাগে না বেড়িবাঁধে ওঠার জন্য অনেক সিঁড়ি বাঁধের ওপর আছে গোলঘর শানবাঁধানো গোল বেঞ্চ, গোলাকার টেবিল

শানের পাকা চাল সেখানে মানুষেরা দল বেঁধে আড্ডা দেয়, চলে গল্পগুজবপর্যটকেরা সাধারণত দুপুরের পর এই বঙ্গবন্ধু উদ্যানে ভিড় জমায় এখানে বসে বিশাল তেঁতুলিয়া নদীর রূপ দেখা যায় ওপরে বিস্তৃত নীল আকাশ নিচে নীল জল

নীল ঢেউ কখনো ছোট, কখনো বড় ছোট ছোট ডিঙিতে বসে জেলের জাল ফেলা, নদীর মাছ ধরা, রাজহংসের সাঁতার, নদীর মাঝে জেগে ওঠা চরের ধান, হোগলা পাতার দোল, ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির উড়ে চলা, এরই মধ্যে ভোঁ ভোঁ হর্ন বাজিয়ে

ইঞ্জিনচালিত লঞ্চ ছুটছে যাত্রী নিয়ে ছুটছে জেলেদের ট্রলার গাছের ডগায় ডগায় কখনো বুলবুলি, কখনো ফিঙে উড়ছে স্পিড বোট,নৌকা বাঁধা আছে সারি সারি

ইচ্ছা হলে অল্প-স্বল্প টাকা দিয়ে নদীতে একচক্কর দেওয়া যায় শিশুরা যখন নাগরদোলা, দেলনা, চরকিতে চড়ে হৈ-হুল্লোর করে তখন আবহমান বাংলার চিরায়ত ছবি ভেসে ওঠে

২০১৩-১৪ সালের দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড তেঁতুলিয়ার ভাঙন রোধে এখানে সিসি ব্লক স্থাপন করে পরবর্তীকালে দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতারুল হাসান স্বপন ব্যক্তিগত অর্থায়নে উদ্যানটি নির্মাণ করেন এবং তা

ধীরে ধীরে আধুনিকরূপ নেয় এখনও আধুনিকায়নের কাজ চলছে ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয় স্থান হিসেবেই মন জয় করেছে উদ্যানটি

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে