পাহাড় ছুঁতে চান নেত্রকোনায় যান। শহরের কোলাহল ভুলে গ্রামীণ পরিবেশের প্রশান্তি উপভোগ করতে কলমাকান্দা উপজেলার পাহাড়ি সীমান্তগ্রামে যেতে পারেন। যেখানে রয়েছে ঝিরিপথ, সবুজ টিলা আর রহস্যময় চন্দ্রডিঙ্গা পাহাড়।
কলমাকান্দা পর্যন্ত পৌঁছে স্থানীয় পরিচিতদের সহায়তায় সিএনজিতে উঠে পাহাড়ের পথে যাবেন। চারপাশে পাহাড়ি বনভূমি, মাঝে মাঝে বিস্তৃত সবুজ ধানক্ষেত আর মাথার ওপর উজ্জ্বল রোদ। সত্যিই মন ছুঁয়ে যাওয়া একটি পরিবেশ। পাঁচগাঁও পৌঁছেই যে জিনিসটি প্রথম চোখে পড়বে; সেটি বিশাল একটি পুরোনো বটগাছ। তার ছায়ায় বসে একটু জিরিয়ে নিতে পারেন।
পাঁচগাঁও টিলায় ওঠার পথটা অল্প হলেও রোমাঞ্চকর। কখনো সরু পথ, কখনো পাথুরে ঢাল আবার কোথাও কোথাও ছোট ছোট ঝিরিপথ। কিছুটা ওপরে উঠতেই চারপাশটা যেন সবুজে ডুবে যাবে। ঝিরির ঠান্ডা জল পায়ে লাগতেই শরীরের ক্লান্তি এক নিমিষেই উধাও হয়ে যাবে। চারপাশের নিস্তব্ধতা, পাখির ডাক আর দূরের পাহাড়ি বাতাস যেন এক স্বপ্নের জগতে হাতছানি দিবে।
ওপরে উঠে চোখে পড়বে মিনি ঝরনা। ভরা বর্ষা থাকায় পানি প্রবাহ ভালো থাকে। পাশেই দেখা মিলবে কিছু স্থানীয় গারো ও হাজং সম্প্রদায়। তাদের সরলতা আর প্রাণচাঞ্চল্য যেন পাহাড়ের মত বিশাল।
চন্দ্রডিঙ্গা নামের যে পাহাড়টি পাঁচগাঁওয়ের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ; সেটির নাম এসেছে চাঁদ সওদাগরের নৌকার কিংবদন্তি থেকে। স্থানীয়দের মতে, বহু বছর আগে এখানে নাকি চাঁদ সওদাগরের নৌকা ডুবে গিয়েছিল। সেই নৌকার মতো দেখতে বলেই পাহাড়টির নাম হয়েছে ‘চন্দ্রডিঙ্গা’। সত্যিই উপর থেকে পাহাড়টির আকৃতি অনেকটা বিশাল এক নৌকার মতো মনে হয়।
পাঁচগাঁওয়ে পর্যটকদের জন্য তৈরি হয়েছে ‘চন্দ্রডিঙ্গা রিসোর্ট’। চাইলে এখানে রাত কাটানো, ক্যাম্পিং বা দলবেঁধে ক্যাম্পফায়ারের মতো আয়োজন করা যায়। ফলে পাহাড়ি জনপদে পর্যটকদের আগ্রহও বাড়ছে।
ঝিরিপথের শীতল জল কিংবা পাহাড়ের নীরবতা অথবা সেই শিশুদের নিঃশব্দ হাসি।
যাবেন কিভাবে: যারা ঢাকা থেকে পাঁচগাঁও যেতে চান, তাদের প্রথমে যেতে হবে নেত্রকোনা জেলায়। মহাখালী বা গাবতলী থেকে নিয়মিত নেত্রকোনাগামী বাস যাতায়াত করে। নেত্রকোনা নেমে কলমাকান্দায় যাবেন। ঢাকা থেকে সরাসরি কলমাকান্দার বাসও পাওয়া যায়। কলমাকান্দা নেমে সিএনজিতে করে সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন পাহাড়ি সৌন্দর্যে পাদদেশে।
পাঁচগাঁওয়ের চন্দ্রডিঙ্গা টিলা ভ্রমণের আগে হালকা পোশাক, ভালো গ্রিপের জুতা, পানি, শুকনো খাবার, ফাস্টএইড, পাওয়ার ব্যাংক ও সানস্ক্রিন সঙ্গে রাখা আবশ্যক। টিলার পথ পিচ্ছিল হতে পারে। তাই সাবধানে চলাফেরা এবং সময়মতো যাত্রা করাই উত্তম। দলবেঁধে গেলে একটু বাড়তি আনন্দ পেতে পারেন।