শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলছে জমজমাট ঈদ বাজার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  ২৯ এপ্রিল ২০২২, ১৭:৫২
আপডেট  : ২৯ এপ্রিল ২০২২, ১৮:৫৯
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলছে জমজমাট ঈদ বাজার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলছে জমজমাট ঈদ বাজার

ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার। শহরের প্রতিটি মার্কেট, শপিংমল ও বিপনী বিতান গুলোতে এখন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়। গভীর রাতেও চলছে কেনা-কাটা। এখন চলছে শেষ মুহুর্তের কেনা-কাটা। পছন্দসই কাপড়-চোপড় কিনে ক্রেতারা হাসি মুখেই বাড়ি ফিরছেন। তবে বিক্রেতাদের দাবি করোনা মহামারীর কারনে গত দুই বছর তারা ব্যবসা করতে পারেননি। এ বছর ব্যবসা একটু ভালো।

সকাল বেলা মার্কেটে ক্রেতা একটু বেশী থাকলেও প্রচন্ড গরমের কারনে দুপুরে তেমন ক্রেতা থাকেনা। ইফতারির পরেই মার্কেটগুলোতে বাড়ে আবার ক্রেতাদের ভীড়। প্রতিটি মার্কেটেই নারীদের উপস্থিতি থাকে চোখে পড়ার মতো। এদিকে ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মার্কেটগুলোতে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ছাড়া বিভিন্ন মার্কেটের পক্ষ থেকেও নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পৌর আধুনিক সুপার মার্কেট, গ্রীণ সুপার মার্কেট, সিটি সেন্টার, আশিকপ্লাজা, নিউ মার্কেট, গোলাপ সুপার মার্কেট, সমবায় মার্কেট, বি-বাড়িয়া টাওয়ারসহ প্রতিটি মার্কেটে এখন ক্রেতাদের ভীড়।বিশেষ করে কোর্টরোডের ফরিদ-আনোয়ারা টাওয়ারের সুপার সপগুলোতে লাইক ফ্যাশন হাউজ, আর্টিসান প্লাস, জননী ফ্যাশন হাউজ, নাইন জিারো, ম্যান্স ওয়ার্ল্ড, সুলতান, আমব্রেলা, কালাইশ্রীপাড়া রোডের রিচম্যান, দর্জি বাড়ি, স্বপ্নলোকসহ মেন, লা রোজা নামক দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। এসব সুপার শপগুলোতে সব বয়সীদের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে।

সড়ক বাজারের শাড়ীর দোকান, কমলালয়, ইলোরা, জান্নাত ফ্যাশন, শাড়ি বিচিত্রা, নিলাচল, আঁচল নামের দোকানগুলোতে মহিলাদের উপড়েপড়া ভীড়। পৌর আধুনিক সুপার মার্কেট, সিটি সেন্টার, নিউ মার্কেট ও হকার্স মার্কেটে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন দোকানে নারী-পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। দোকানগুলোর ডিসপ্লেতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে মেয়ের স্কার্ট, টপস, থ্রিপিস, জিন্স প্যান্ট, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট ও জয়পুরি শাড়ি। তাছাড়া ছেলেদের জন্য রয়েছে নবাবী পাঞ্জাবী, শেরওয়ানী, ফতুয়া, কাতুয়া, টি শার্ট, প্যান্ট এবং ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য বাহারি ডিজাইনের তৈরী পোশাক।

শহরের হালদারপাড়ার বাসিন্দা তাহমিনা বেগম বলেন, ছেলে-মেয়েদের কাপড়-চোপড় কিনতে মার্কেটে এসেছি। এবছর কাপড়-চোপড়ের দাম একটু বেশী। দেখি পছন্দসই কাপড় কিনতে পারি কিনা। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে মার্কেটে আসা মোশাররফ হোসেন বলেন, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে এসেছেন কাপড় কিনতে। বিভিন্ন দোকান ঘুরে শেষ পর্যন্ত একটা থ্রি পিস, ছেলের জন্য শার্ট ও জিন্সের প্যান্ট কিনেছেন।

লাইক ফ্যাশনে পাঞ্জাবী কিনতে আসা পৌর এলাকার কাউতলী গ্রামের মোহাম্মদ শিপন জানান, দিনের বেলায় মার্কেটগুলোতে অনেক ভীড় থাকে। তাই তিনি রাতের বেলা কিনতে এসেছেন। একই কথা বলেন, সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়ার রহিমা বেগম । তিনি বলেন, পছন্দসই কাপড়-চোপড় কিনে রাতে শহরের মেড্ডা বোনের বাড়িতে থাকবেন। পরদিন বাড়ি যাবেন।

রহিমা বেগম বলেন, পরিবারে ছোট ছোট বাচ্চা আছে। তারা ঈদ আসলে শপিং করবে। তাদের মুখে হাসি ফুটাতেই তিনি মার্কেটে এসেছেন। ফরিদ-আনোয়ারা টাওয়ারের সুপার সপ লাইক ফ্যাশন হাউজের স্বত্বাধিকারী কাজী এমরানুল হক বলেন, গত দুই বছরে করোনার কারণে বেচা-কেনা অনেক কম হয়েছে। এ বছর বেচা-কেনা অনেক ভালো। তিনি জানান, তার শো-রুমে থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, জিন্স পেন্ট, টি শার্ট ও বাচ্চাদের পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে।

একই মার্কেটের সুপার সপ আর্টিসান প্লাস এর মালিক আনোয়ার হোসেন বাদল বলেন, আলহামদুল্লিাহ বেচা-কেনা ভালো। তিনি বলেন, করোনা মহামারির কারনে গত দুই বছর লোকসান হয়েছে। এ বছর ইনশাল্লাহ ব্যবসা ভালো। তিনি বলেন, তার শো-রুমে থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, জিন্স পেন্ট, টি শার্ট, গেরারডিনের প্যান্টসহ সব বয়সী মানুষের পোশাক বেশি হচ্ছে। নিউ মার্কেটের পাঞ্জাবীর দোকান, পাঞ্জাবী ফ্যাশনের মালিক মোঃ রুহুল আমিন বলেন, গত দুই বছর করোনা মহামারীর কারনে দোকান খুলতে না পেরে লোকসান হয়েছে। এ বছর ব্যবসা ভালো।

সিটি সেন্টারের স্বপ্নলোকের স্বত্ত¡াধিকারী আসিফ ইকবাল বলেন,আলহামদুল্লিাহ ব্যবসা ভালো। আশা করছি ব্যবসা আরো ভালো হবে। শহরের টি.এ রোড আশিক প্লাজার সেভেন এর স্বত্বাধিকারী রাজিব বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে দোকানে যে লোকসান হয়েছে, আশাকরি এবছর তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবো।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমরানুল ইসলাম বলেন, ঈদকে সামনে রেখে সদর ও শহরের ১২টি পয়েন্টে পুলিশ কাজ করছে। পৌর মার্কেটের সামনে পুলিশের একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। রাতে মার্কেটে আসা কোন মানুষের যাতে কোন ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য পুলিশ টহল দিচ্ছে। যানজট নিরসনেও পুলিশ বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রির সভাপতি মোঃ আজিজুল হক বলেন, করোনার কারনে দুই বছর ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারেনি। বর্তমানে ব্যবস্থা একটু ভালো । তিনি বলেন, মার্কেটগুলোতে বাহারি ও নামি-দামি কাপড় থাকলেও অর্থনৈতিক সংকটের কারনে মানুষের একটু কষ্ট হচ্ছে।

যাযাদি/এসএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে