শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানী সংকট

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  ০৬ জুলাই ২০২২, ১৬:৪৫

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দেখা দিয়েছে জ্বালানী সংকট, এতে লোডশেডিং আরো একধাপ বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে দেশের উত্তারাঞ্চলের আট জেলায়।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুত্রে জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে সরবরাহ কৃত কয়লার উপর ভিত্তিকরে, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থাকে, খনির ভূ-গভের কাজের জন্য চলতি সনের গত মে মাস থেকে কয়লা উৎপাদন বন্ধ রয়েছে, মজুদ কৃত কয়লা দিয়ে আগষ্ট মাস পর্যন্ত একটি ইউনিট সচল রাখার কথা থাকলেও,সম্প্রতিক সারা দেশে গ্যস চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায়, গত সপ্তাহ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০০ মেগওয়াড থেকে বৃদ্ধি করে ৩০০ মেগওয়াড উৎপাদন করছে, এতে মজুদ কৃত জ্বালানী আগামী আগষ্ট মাস পর্যন্ত চললেও, তা জুলাই মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। অপরদিকে কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে আগষ্ট মাস পর্যন্ত কয়লা উৎপাদন বন্ধ রয়েছে, ফলে জুলাই মাসের পর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কয়লা ভিত্তিক বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে।

এদিকে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন তালিকায় দেখা যায়, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি প্রথম দুটি ইউনিটে ২৫০ মেগওয়াড ছিল, ২০১৭ সালে ৩৭৫ মেগওয়াডের তৃতীয় ইউনিট স্থাপনের পর এটি ৫২৫ মেগওয়াড তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলেও এখন পর্যন্ত ৫২৫ মেগওয়াড বিদ্যুৎ কোন দিনেই উৎপাদন হয়নি। ২৫০ মেগওয়াডের স্থলে উৎপাদন হয়েছে ১০০ থেকে ১৭৫ মেগওয়াড, ৩৭৫ মেগওয়াডের স্থলে উৎপাদন হয়েছে ১৭৫ থেকে ২৫০ মেগওয়াড।

এদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী লিঃ (নেসকো) রংপুর অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী (বিতরণ) শাহাদৎ হোসেন সরকার যায়যায়দিনকে বলেন রংপুর বিভাগের ৮টি জেলায় ৯০০ মেগওয়াড বিদ্যুতের প্রয়োজন, যা জাতীয় গ্রীড থেকে নিয়ে সরবরাহ করা হয়, সেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেলে, বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে যায়, বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে গেলে লোড শেডিং দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী ওয়াজেদ আলী যায়যায়দিনকে বলেন বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদিত কয়লার উপর নির্ভশীল, কয়লা খনি থেকে সরবরাহকৃত কয়লার উপর ভিত্তি করে তাপ বিদ্যুৎটি পরিচালিত হয়। তিনি বলেন বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তিনটি ইউনিট চালু রাখতে প্রতিদিন ৫২০০ মে,টন কয়লা প্রয়োজন, কিন্তু বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করে প্রতিদিন গড়ে ২৫০০ মে,টন থেকে তিন হাজার মে,টন কয়লা, এই কারনে পুরোপুরি তিনটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভাব হয়না। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী যায়যায়দিনকে আরো বলেন বর্তমানে যে কয়লা মজুদ রয়েছে তা দিয়ে চলতি জুলাই মাস পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভাব হবে, এরপর কয়লা সরবরাহর উপর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।

এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিঃ (বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী কামরুজ্জামান যায়যায়দিনকে বলেন খনির ভূ-গর্ভেও কাজের জন্য কয়লা উৎপাদন সাময়িক বন্ধ রয়েছে, ভূ-গর্ভের কাজ শেষে হলেই আগামী আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আবারো কয়লা উৎপাদন করা সম্ভাব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে